• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
প্রিন্সিপালের অপমান সইতে না পেরে ভিকারুননিসা ছাত্রীর আত্মহত্যা

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির এক ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী (১৫)

সংগৃহীত ছবি

মহানগর

প্রিন্সিপালের অপমান সইতে না পেরে ভিকারুননিসা ছাত্রীর আত্মহত্যা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮

প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালের অপমান সইতে না পেরে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। তার নাম অরিত্রি অধিকারী (১৫)। গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর শান্তিনগরের বাসা থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। 

অরিত্রির বাবা সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী দিলীপ অধিকারী। থাকেন শান্তিনগরের ২৩/২৪ নম্বরের সাততলা ভবনের সপ্তম তলায়। মেয়েকে হারিয়ে তিনি পাগলপ্রায়। তার চোখের পানি যেন থামছিল না। হাসপাতালে তিনি জানান, অরিত্রির বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল।

গত রোববার পরীক্ষার হলে অরিত্রি মোবাইল ফোন নিয়ে গিয়েছিল। নকল থাকার অভিযোগে শিক্ষক তার মোবাইল জব্দ করেন এবং অভিভাবককে সঙ্গে নিয়ে স্কুলে যেতে বলেন। গতকাল সোমবার পরীক্ষা চলাকালে অরিত্রির সঙ্গে তারা (বাবা-মা) স্কুলে যান। ভাইস-প্রিন্সিপাল তাদের বলেন, মোবাইলে অরিত্রির নকল করছিল। অভিযোগ শুনে মেয়ের হয়ে তার কাছে ক্ষমা চান তারা। কিন্তু  এতে মন গলেনি ভাইস প্রিন্সিপালের। তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় প্রিন্সিপালের কাছে। সেখানে গিয়েও তারা ক্ষমা চান। একপর্যায়ে অরিত্রি প্রিন্সিপালের পায়ে ধরে ক্ষমা চায়। কিন্তু প্রিন্সিপাল এতে কর্ণপাত না করে তাদের রীতিমত অপমান করে কক্ষ থেকে বের করে দেন এবং পরের দিন অরিত্রির টিসি নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। অরিত্রির মা-বাবার অভিযোগ, প্রিন্সিপাল তাদের অপমান করায় অরিত্রি তাদের আগেই দ্রুত বাসায় চলে যায়। এরপর বাবা-মা গিয়ে দেখেন অরিত্রি নিজ রুমে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলে আছে। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই বাচ্চু মিয়া বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।

পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতাউর রহমান জানিয়েছেন, সুরতহাল করে অরিত্রির লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তেরর পর তার মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

ময়নাতদন্ত শেষে ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ জানান মেয়েটি গলায় ফাঁস দিয়েছে। তার গলায় দাগ ছিল।

এদিকে অরিত্রির মৃত্যুর সংবাদ শুনে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান ভিকারুননিসার প্রিন্সিপাল নাসরিন ফেরদৌস। সেখানে তিনি অরিত্রির স্বজনদের তোপের মুখে পড়েন। এ সময় তারা প্রিন্সিপালের গাড়ি ঘিরে রাখেন। কিছুক্ষণ পর তিনি হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। এ ব্যাপারে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল নাসরিন ফেরদৌসের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে ফোন করতে বলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads