• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
ইশারায় তৈরি হয় ‘স্টপেজ’

রাজধানীর সড়কে নেই শৃঙ্খলা

ছবি : সংগৃহীত

মহানগর

ইশারায় তৈরি হয় ‘স্টপেজ’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রতিদিনই ট্রাফিক আইন অমান্য করায় মামলা-জরিমানা করা হচ্ছে। এর মধ্যেও যত্রতত্র বাস থামানোর প্রতিযোগিতা করছেন চালক-হেলপাররা। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নির্ধারিত বাস স্টপেজ থাকলেও সেটা খুব একটা কাজে আসছে না। কারণ, যাত্রীরা ইশারা করলেই যত্রতত্র বাস থামিয়ে দিচ্ছেন চালকরা। আর সেটাই মনে হবে ‘স্টপেজ’। এই আইন না মানার ক্ষেত্রে বাসচালক ও যাত্রী উভয়কেই দায়ী করছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পথচারী ও যাত্রীদের পাশাপাশি চালকদের সচেতন করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া দরকার।

রাজধানীর গণপরিবহনের একাধিক বাসচালক ও হেলপার জানান, বাস থামানোর স্থানগুলো কোথায় সেটা তারা অন্যের দেখা দেখি শিখেছেন। তবে যাত্রীরা হাত ইশারা করলে রাস্তা থেকে তাদের ওঠানো নামানো হয়। সামনের একটি বাসে যাত্রী তুলতে দেখে পেছনের বাসটিও একই কাজ করে। আবার এসব বাসে সিটিং লেখা থাকলেও বেশির ভাগ বাসই চলে লোকাল হিসেবে। 

ঢাকা শহরে ১৮ বছর আগে ২৯৮টি বাস থামার স্থান চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ধারাবাহিক তদারকির অভাব এবং পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের দাপটে চিহ্নিত স্থানগুলো কাজে আসেনি। সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশ রাজধানীতে বাস থামার ১২১টি স্থান চিহ্নিত করেছে। এর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদারকিও করছে। তারপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দুই স্টপেজের মধ্যে চালকের ইচ্ছাামতো বাস থামিয়ে যাত্রী তোলা হচ্ছে।  ফলে সড়কে শৃঙ্খলা আনতে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গত ১৫ জানুয়ারি রাজধানীতে শুরু হয়েছে ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ। ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরুণ তরুণীরাও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করছে। কিন্তু পথচারীদের মধ্যে রাস্তা পারাপারে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরলেও বাসচালকেদর মধ্যে শৃঙ্খলা ফেরেনি।

গতকাল শুক্রবার সকালে শাহবাগ মোড়ে দেখা যায়, চারটি সড়কের আটটি লেন এক হয়েছে মোড়ে। শাহবাগ মোড় থেকে উত্তরে এগোলে পাশেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল। এখানে বাস থামার স্থান রয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ ট্রাফিক পুলিশ সেখানে সাইনবোর্ড লাগিয়েছে। বাস থামানো শুরু ও শেষের অংশকে চিহ্নিত করা হয়েছে। দুপুর আড়াইটায় এখানে ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে দেখা গেল, চিহ্নিত করা অংশে বাস থামানো হচ্ছে না। মোড়ে আসার আগে থেকেই যাত্রীদের তোলা হচ্ছে, নামানো হচ্ছে।

বিকালে কাজীপাড়া থেকে তালতলা, আগারগাঁও, মহাখালী, গুলশান-১, বাড্ডা হয়ে কুড়িল রুটে বিহঙ্গ পরিবহনের বাস চলতে দেখা গেল। প্রায় ১৯ কিলোমিটার এই পথে মাত্র দুটি স্থানে বাস থামার স্থান নির্দেশকারী সাইনবোর্ড আছে। সেগুলোয় বাস থামছে না। শেওড়াপাড়ায় বিহঙ্গ পরিবহনের বাসে চলন্ত অবস্থায় যাত্রী তুলতে দেখা গেছে। একই অবস্থা লক্ষ করা গেছে কাজীপাড়ায়ও। এ দুই স্টপেজের কোথাও ‘স্টপেজ’ লেখা সাইনবোর্ড চোখে পড়েনি। এভাবে তালতলা, আগারগাঁও, মহাখালী আমতলা, ওয়্যারলেস, টিবি গেট, গুলশান-১-এর গোলচত্বরের এপারে ও ওপারে বাস থামিয়ে যাত্রী তুলতে দেখা যায়। গুলশান-১ গোলচত্বর পার হওয়ার পর ও গুলশান লেকের পাশে গুদারাঘাটের কাছে আসার আগে বাঁয়ে চোখে পড়ল ‘বাস থামিবে’ লেখা সাদাকালো ছোট নির্দেশক। কিন্তু সেটা রয়েছে গাছপালার আড়ালে। চলন্ত বাস থামানো হয় গুদারাঘাটে, যেখানে বাস থামার কোনো নির্দেশক নেই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads