• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে সরকারের দায় আছে : এইচ টি ইমাম

এইচ টি ইমাম

ছবি : সংগৃহীত

মহানগর

চকবাজার অগ্নিকাণ্ডে সরকারের দায় আছে : এইচ টি ইমাম

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। তিনি বলেছেন, আগুনের ঘটনায় সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ প্রশাসন সঠিকভাবে কাজ করেনি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় গতকাল রোববার তিনি এমন মন্তব্য করেন। এ সময় পুরান ঢাকায় ভবন ও গোডাউন সম্পর্কে তথ্য না থাকায় কর্মশালায় পরিসংখ্যান ব্যুরোর সমালোচনা করেন তিনি। একই সঙ্গে এ বিষয়ে দ্রুত জরিপ পরিচালনা করতে সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেন।

বিবিএস কার্যালয়ে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ : পরিসংখ্যানের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন এইচ টি ইমাম। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বিবিএসের মহাপরিচালক কৃষ্ণা গায়েন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনএসডিএস ইমপ্লিমেন্টেশন প্রকল্পের পরিচালক মো. দিলদার হোসেন।

এইচ টি ইমাম বলেন, চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে সম্ভবত পরিসংখ্যান ব্যুরোর দায় আছে। চকবাজারে এতগুলো দালানকোঠা এবং সেখানে নিষিদ্ধ নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ আছে। এর কিছু কিছু অতি দাহ্য, মারাত্মক এবং খুবই ক্ষতিকারক। সরকারের বিভিন্ন সময়ে বাধা-নিষেধ সত্ত্বেও তারা নির্দিষ্ট জায়গায় যায়নি। বিবিএস এ বিষয়ে কোনো হিসাব করেনি। সংস্থার কোনো প্রতিনিধি সেখানে যায়নি। কোনো বিষয়ে পরিসংখ্যান বা সুষ্ঠু তথ্য থাকলে সরকারের জন্য ওই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া অনেক সহজ হয়।

এসব বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা আরো বলেন, কোনটি ক্ষতিকর, কোনটি ভালো এবং কার কোথায় থাকা উচিত এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা থাকতে হবে। কাকে কোথায় স্থানান্তর প্রয়োজন এ বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

হাজারীবাগ থেকে অনেক কষ্টে চামড়া শিল্প সাভারে স্থানান্তর করা হয়েছে উল্লেখ করে এইচ টি ইমাম বলেন, এরপরও পরিবেশ দূষণ কমছে না। তারা আগে বুড়িগঙ্গা নষ্ট করেছে, এখন ধলেশ্বরী নষ্ট করছে। এ বিষয়েও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, পরিসংখ্যান ব্যুরোর সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। উপজেলা পর্যায়েও সংস্থাটির প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা আছেন। উপজেলায় দফতর আছে। কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় যানবাহন দেওয়া আছে। এখন আর চলাফেরার সমস্যা নেই। নতুন পাওয়া সক্ষমতা কাজে লাগাতে সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেন তিনি।

প্রতি বছর প্রতিটি কারখানা ও গোডাউনে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পরিদর্শক দল পাঠানোর দায়িত্ব ছিল। ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার দায়িত্ব ছিল সিটি করপোরেশনের। কারা ওখানে কী ব্যবসা করছে তা দেখার দায়িত্বও সিটি করপোরেশনের। এসব বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকেও সময়মতো দেখভাল করা হয় না। এখন বলা হচ্ছে, প্রভাবশালী মহলের কারণে সেখান থেকে কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের সরানো যায়নি। কথিত এ প্রভাবশালীদের খুঁজে বের করা উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন এবং সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট প্রতিশ্রুতি পূরণে বেশ কিছু  সমীক্ষা ও জরিপ পরিচালনা করা হবে। পরিসংখ্যান আইন প্রণয়নের পর পরিসংখ্যান ব্যুরোর সক্ষমতা বেড়েছে। সংস্থাটি সুন্দরভাবে কাজ করতে পারছে। সঠিক তথ্য সরবরাহের সক্ষমতাও আগের অনেক বেড়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

কৃষ্ণা গায়েন বলেন, সঠিক উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ পরিসংখ্যানের বিকল্প নেই। সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার, এসডিজি এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে পরিসংখ্যান ও তথ্য ঘাটতি পূরণ করতে হবে। এ জন্য পরিসংখ্যান ব্যুরোর সব শ্রেণি ও পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার তাগিদ দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের বিষয়ে সিটিজেন হাউজহোল্ড সার্ভে পরিচালনা করা হবে। এ ছাড়া সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িকতা ও মাদক নির্মূল, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১০ শতাংশে উন্নীত করা এবং মাথাপিছু জাতীয় আয় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২ হাজার ৭৫০ মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে কাজ করবে বিবিএস।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads