খুব ছোটবেলা থেকেই ফাতেমাতুজ জোহরা বৃষ্টি ও রেহনুমা তাবাসসুম দোলার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। একসঙ্গে একই প্রতিষ্ঠানে চতুর্থ শ্রেণি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন এই দুই বান্ধবী। তারপর দুজন দুই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করলেও তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের টান ছিল আগের মতোই। তাদের বন্ধুত্বকে ঘিরে দুটো পরিবারের মধ্যেও গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। সবকিছুই ওলটপালট হয়ে যায় ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়। ছোটবেলায় গড়ে ওঠা বন্ধুত্বের ইতি এখানেই টানতে হয়। ভয়ানক সেই আগুনে একসঙ্গেই পুড়ে মারা গেলেন তারা দুজন।
চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন দুই বান্ধবী বৃষ্টি ও দোলা। ঘটনার দিন রাতে শিল্পকলা একাডেমি থেকে একসঙ্গে একটি অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। নিখোঁজ হওয়ার পর তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, অগ্নিকাণ্ডের আগ মুহূর্তে তারা ওই স্থানেই ছিলেন। নিখোঁজের পর অনেক খোঁজাখুঁজির করেও তাদের না পেয়ে আতঙ্কিত পরিবারের সদস্যরা গিয়েছিলেন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে। এরপরই জানা যায় ঘটনার সময় দুজনই চুড়িহাট্টার পাশ দিয়ে রিকশায় যাওয়ার সময় প্রাণ হারান। গত সপ্তাহের বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সিআইডি ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে বৃষ্টির পরিচয় শনাক্ত করে। সেদিন সিআইডির মালিবাগ কার্যালয়ে ডিএনএ টেস্টে ১৯টি মরদেহের মধ্যে ১১ জনকে শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে ছিল ফাতেমাতুজ জোহরা বৃষ্টির মরদেহও। এরপর গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় ধাপে পাঁচটি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে সিআইডি। এর মধ্যে পাওয়া গেল দোলার মরদেহও।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, দোলার বাবা দলিলুর রহমান দুলালের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে এটি মিলে যাওয়ায় নিশ্চিত হওয়া গেছে যে এটিই তার মরদেহ। মরদেহ হস্তান্তরের জন্য ইতোমধ্যে শনাক্তদের পরিচয় চকবাজার থানা পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ৬৬ জনের মরদেহ ওইদিনই উদ্ধার করা হয়। আগুনে দগ্ধ ও আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরো চারজন।
