• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
‘ভুল চিকিৎসায়’ পঙ্গু হওয়ার পথে ঢাবি ছাত্র

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেহেদী হাসান শামীম

ছবি : সংগৃহীত

মহানগর

‘ভুল চিকিৎসায়’ পঙ্গু হওয়ার পথে ঢাবি ছাত্র

  • ঢাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৯ এপ্রিল ২০১৯

রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববদ্যালয়ের (ঢাবি) মেহেদী হাসান শামীম নামের এক ছাত্র। ভুল চিকিৎসায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে উল্লেখ করে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে চলেছেন তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাবির সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন শামীম। রক্তনালির ব্রেন টিউমার (ইনসুলার ক্যাভারনোমা) ধরা পড়লে ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। তার চিকিৎসা করেন ডা. কৃষ্ণা প্রভু।

সংবাদ সম্মেলনে শামীম জানান, ডা. কৃষ্ণা প্রভু তাকে দ্রুত অপারেশন করতে বলেন। না করলে স্ট্রোক করে যেকোনো সময় মারা যেতে পারেন বলে জানান। তিনি সহজেই এই অপারেশন করে  দেবেন। কিন্তু ডাক্তারকে বারবার অপারেশনের পসিবল রিস্ক এবং পোস্ট-অপারেটিভ সিম্পটম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেও উনি সবকিছু সচেতনভাবে এড়িয়ে যান। স্কয়ারের ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিল করাই ছিল ডাক্তারের মুখ্য উদ্দেশ্য।

২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ডাক্তারের পরামর্শে তিনি অপারেশন করান। যখন তিনি আইসিইউতে ছিলেন তখন তার অ্যাটেন্ডেন্টকেও (ছোট ভাই) তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানানো হয়নি। তিনি বলেন, ২৫ তারিখ যখন তিনি ওয়াশরুমে যেতে চেয়েছিলেন তখন ডিউটি ডাক্তার তার ভাইকে জানান, তার বাঁ পাশ আর কাজ করছে না।

পরবর্তীতে তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে তার অপারেশনের সিডি চাইলে ডাক্তার এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টালবাহানা শুরু করে অভিযোগ করে। এ সময় ডাক্তার ও তার সহযোগীরা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এতে অপারেশনে ডাক্তারের ভুল ছিল এবং স্কয়ার হাসপাতালের ভুল চিকিৎসার শিকার বলে সন্দেহ করেন তিনি।

ভুক্তভোগী শামীম বলেন, গত ১ এপ্রিল স্কয়ার হাসপাতালের সিইও ইউসুফ সিদ্দিকীর কাছে অপারেশনের সিডির জন্য গেলে তিনি গোঁজামিল হিসাব দেন। অপারেশনের আগে বারবার জিজ্ঞেস করলেও তাকে অপারেশনের পসিবল রিস্ক ও পোস্ট-অপারেটিভ সিম্পটম সম্পর্কে জানানো হয়নি। অপারেশনের সিডি না দিয়ে তারা তাদের ভুল ঢাকার চেষ্টা করে।

এরপর তিনি গত ৭ তারিখ স্কয়ার হাসপাতালের সিইও বরাবর তার অপারেশনের সিডি ও পেশেন্ট ফাইল চেয়ে লিখিত আবেদন করেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার আবেদন গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়, অভিযোগ শামীমের।

শামীম জানান, এ কারণে তার বাঁ হাত ও পায়ের অবস্থান অবনতি হচ্ছে। বাঁ পায়ের কারণে খোঁড়াতে হলেও বাঁ হাত সম্পূর্ণই অকেজো হয়ে পড়েছে।

ঢাবির এ ছাত্র আরো বলেন, তিনি ডা. কৃষ্ণা প্রভুর সঙ্গে ১৫ এপ্রিল সাক্ষাৎ করলে তিনি অপারেশনের সময় তার মস্তিষ্কের কয়েকটি নার্ভ কাটা যায় বলে জানান। এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে থাইল্যান্ড বা সিঙ্গাপুর যাওয়ার পরামর্শ দেন, যা তার পক্ষে অসম্ভব।

সাক্ষাতে শামীম তার অপরেশনের রিস্কের বিষয়ে কেন জানানো হয়নি সে ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তার উত্তরে ডাক্তার বলেন, তার কারণেই তিনি (শামীম) পঙ্গু হলেও বেঁচে আছে। অন্য কেউ অপারেশন করলে সেটাও হতো না। তিনি পঙ্গু হাত নিয়ে বেঁচে থেকে সন্তুষ্ট থাকতে বলেন।

শামীম স্কয়ার হাসপাতালের এমন অবহেলা, স্বেচ্ছাচারিতা ও অর্থ লালসার জন্য তার পঙ্গুত্ববরণ করে নিতে হচ্ছে তার বিচার চান। একই সঙ্গে ঢাবি প্রশাসন, ডাকসুসহ অন্যদের সহযোগিতা চান সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ভুক্তভোগী এই আবাসিক ছাত্র।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads