• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
‘লাইন ঠিক করে শরবত খাব’

বিশুদ্ধ পানির দাবিতে গতকাল ওয়াসা ভবনের সামনে গ্রাহকদের প্রতিবাদ  

ছবি : পিবিএ

মহানগর

‘লাইন ঠিক করে শরবত খাব’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৪ এপ্রিল ২০১৯

ওয়াসার পানি দিয়ে সুপেয় শরবত তৈরি করে তা ওয়াসার এমডিকে পান করাতে গতকাল মঙ্গলবার ওয়াসা ভবনে যান রাজধানীর জুরাইনের মিজানুর রহমান। তবে এমডি না থাকার অজুহাতে প্রথমে তাকে ওয়াসা ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি ভবনের ভেতরে যান এবং ওয়াসার প্রকৌশলীর সঙ্গে দেখা করেন। পরে এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকৌশলী কেএম সহিদ উদ্দিন জানান, আজকে শরবত খাব না, লাইন ঠিক করে শরবত খাব। জুরাইন এলাকায় দ্রুতই পাইপলাইন ঠিক করা হবে। 

তিনি বলেন, পাইপলাইনের ত্রুটির কারণে ওয়াসার পানি দূষিত হয়ে থাকতে পারে। তবে ওয়াসার পানি সুপেয়।এ প্রসঙ্গে মিজানুর রহমান জানান, প্রকৌশলীর আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করলাম। তিনি শরবত পান করেননি। পানির লাইন ঠিক করে খাব বলে জানিয়েছেন। আমাদের পানি নিয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের এলাকার ওয়াসার পানি ড্রেনের পানির মতো অপরিষ্কার। এটা খাওয়া দূরের কথা, গন্ধে হাতে নেওয়াই যায় না।

উল্লেখ্য, গত ১৭ এপ্রিল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) গবেষণায় বলেছে, ঢাকা ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করেন। এর মধ্যে ৯১ শতাংশই পানি ফুটিয়ে পান করেন। টিআইবির এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান গত ২০ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়, বিশুদ্ধ। ফুটিয়ে খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ  জানাতে  মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজধানীর জুরাইন থেকে কারওয়ান বাজারে ওয়াসার প্রধান কার্যালয়ের বিপরীতে অবস্থান নেন রাজধানীর জুরাইন এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা। নেতৃত্ব ছিলেন মিজানুর রহমান।

তারা এমডিকে শরবত পান করানোর জন্য কাচের জগে ও বোতলে ওয়াসার পানি, গ্লাস, লেবু ও চিনির প্যাকেট নিয়ে ওয়াসার ভবনের সামনে প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। এ সময় সেখানে পুলিশ ও আনসার মোতায়েন করা ছিল। মিজানুর বলেন, ওয়াসার এমডিকে তার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে। এ ছাড়া পানির জন্য এত দিন যে বিল দিয়ে এসেছেন তা ফেরত দেওয়ার দাবি জানান এবং বলেন, বিশুদ্ধ পানি না দেওয়া পর্যন্ত তারা পানির বিল দেবেন না। তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আসেন।

তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় ৩৫ বছর আগে ওয়াসার লাইন বসানো হয়। শুরুর ১০ বছর পানি ভালোই ছিল। এরপর পানি নোংরা হতে শুরু করে। এখন সেই পানি ফুটিয়েও খাওয়া যায় না। বিষয়টি ওয়াসাকে জানানো হয়। ২০১২ সালে বর্তমান এমডি বরারবর সাড়ে তিন হাজার মানুষের স্বাক্ষর নিয়ে আবেদনও করা হয়। উনি কোনো সাড়া দেননি। পূর্ব রামপুরা থেকে আসা মনিরুল ইসলাম বলেন, পাঁচ বছরের শিশুও বলবে না ওয়াসার পানি ভালো। পানির ট্যাংকে যদি ময়লা জমে, তা তো গায়েবিভাবে আসে না। ওয়াসার নোংরা পানি থেকেই সে ময়লা জমে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads