• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
রাজউককে জনবান্ধব করা হবে : গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী

ছবি : সংগৃহীত

মহানগর

রাজউককে জনবান্ধব করা হবে : গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৭ জুন ২০১৯

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, আমরা রাজউককে জনবান্ধব, স্বচ্ছ, দীর্ঘসূত্রিতামুক্ত একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারবো। রাজউককে আমরা বিকেন্দ্রীকরণ করার কথা ভাবছি। এত বড় ঢাকায় একটি রাজউকে বসে সবকিছু পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। রাজউকের সকল জোনকে শক্তিশালী করতে চাই। স্তরভিত্তিক পরিসর বাড়ার কারণে রাজউককে বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী বিবেন্দ্রীকরণের পক্ষে। এটা তিনি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছেন। অদূর ভবিষ্যতে রাজউকের কেন্দ্রীকতা বিকেন্দ্রীকতায় পরিণত হবে, যাতে মানুষ সেবা পেতে পারে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) অডিটোরিয়ামে রাজউক সেবা সপ্তাহ ২০১৯ এর সমাপনী অনুষ্ঠান প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সেবাগ্রহীতাদের সহজে ও দ্রুততম সময়ে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতি বছরের ন্যায় সেবা সপ্তাহ পালন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গত রোববার শুরু হয়ে শেষ হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। সেবা সপ্তাহ চলাকালে রাজউকের বিভিন্ন শাখা থেকে সেবাগ্রহীতার ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র, ভবন নির্মাণ অনুমোদন, রাজউকের প্লট ও ফ্ল্যাটের নামজারী, আমমোক্তার অনুমোদন, নকশা অনুমোদন প্রভৃতি সেবাসমূহ প্রদান করা হয়। সেবা গ্রহীতারা সেবা উন্নয়নে মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন।

জানা গেছে, সেবা সপ্তাহে রাজউক এর নগর পরিকল্পনা শাখা হতে ২৩০টি ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র, উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ শাখা হতে ১৮৮টি ইমারত নির্মাণের নকশা অনুমোদন এবং এস্টেট ও ভূমি শাখা হতে ৬৯টি নামজারী, ৩২টি প্লটের দখল হস্তান্তর, ৮১টি প্লটের আম-মোক্তার/হস্তান্তর/লীজ ডীড/হেবা, ৭টি নকশা অনুমোদনের ছাড়পত্র, ১০টি ঋণ গ্রহণের অনাপত্তিপত্র, ৩২টি হাতিরঝিল ফ্ল্যাটের সাময়িক বরাদ্দপত্র, ১৭৫টি উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্পের ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হয়েছে।

এসময় মন্ত্রী বলেন, ‘রাজউককে আমরা ভাবমূর্তি ফিরিয়ে দিতে চেষ্টা করছি। রাজউকের ভেতরে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী আন্তরিকভাবে কাজ করছে, কিন্তু একটি ক্ষুদ্র অংশের জন্য রাজউককে বদনামের বোঝা কাঁধে নিতে হয়। দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিল থেকে শুরু করে সব নির্মাণ তখনই ঢাকা পড়ে যায় যখনই বালিশ কেলেঙ্কারীর বোঝা আমাদের মাথায় নিতে হয়। যাদের ভুল আছে তাদের শোধরানোর জন্য বাবরবার বলছি। যে শুধরাবেন না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে মন্ত্রণালয়, রাজউক, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ, গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে শুরু করে একটা প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মচারী অন্যায়ভাবে হয়রানি হোক এটা আমি চাই না’।

সভাপতির বক্তব্যে রাজউক এর চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ বলেন, ‘রাজউকের জনবল কম থাকা সত্ত্বেও সেবা প্রদান কার্যক্রম আগের চেয়ে অনেক বেগবান হয়েছে। স্বল্প সময়ে কোন রকমের হয়রানি ছাড়াই সেবাগ্রহিতারা সেবা পেতে পারেন সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সেবাপ্রত্যাশীদের নিকট থেকে অনেক মতামত ও পরামর্শ এসেছে। ভবিষ্যতে তাদের মতামত ও পরামর্শ মোতাবেক সহজে ও দ্রুত সময়ে সেবা প্রদানের চেষ্টা করব।

রাজউকে একটা ব্যাপক পরিবর্তনের জোয়ার এসেছে উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন, ‘এই পরিবর্তনকে ধরে রাখতে হবে। সেবা প্রার্থীদের জিজ্ঞেস করে জানতে পেরেছি তারা হয়রানি হননি, সেবা পেতে কাউকে টাকা দিতে হয় নি। এই পরিবর্তনকে আরো বেগবান করতে চাই। স্বচ্ছতা, সততা, ন্যায়নিষ্ঠতার কোনো বিকল্প নাই। এটিকে ধারণ করতে হবে। ক্ষুদ্র অংশ যাদের কারণে অভিযোগ আসে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। ভালো অর্জনের ভেতরে যারা দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে তাদেরকে বিদায় করে দেবো, তাদের রাজউকে দরকার নেই’।

মন্ত্রী বলে, রাজউকের নব্বই শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের সম্পূর্ণ আন্তরিকতা নিয়ে তাদের দ‍ায়িত্ব পালন করছেন। বাকী ক্ষুদ্র অংশকে অনুরোধ করছি সবাই মিলে ভালো হয়ে যান। ভালো না হলে আপনাদেরকে রাজউকে প্রয়োজন আছে কিনা ভেবে দেখতে হবে। এত পরিশ্রমের রাজউক দু-একজনের কারণে নষ্ট হয়ে যাবে, বদনাম কাঁধে নেবে, এটা হতে পারে না’। সাধারণ মানুষদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘রাজউককে সাহায্য করুন। গতানুগতিকভাবে রাজউকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন না। রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেক সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতার মধ্যে যেভাবে কাজ করছেন, এটা প্রশংসার দাবি রাখে। রাজউক এর সেবাটাও দেখুন। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। আমরা কাউকে ছাড় দিতে চাই না। দুর্নীতি কোনভাবে চলতে দেওয়া যাবে না’

রাজউক এর চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্স এর সভাপতি প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট এর সভাপতি স্থপতি জালাল আহমেদ এবং ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ এর সভাপতি প্রকৌশলী মো. আব্দুস সবুর । এছাড়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন রাজউকের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) মো. আমজাদ হোসেন খান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads