• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
যানজটে দায় কি শুধু রিকশার?

ছবি : সংগৃহীত

মহানগর

দিনে নষ্ট ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা

যানজটে দায় কি শুধু রিকশার?

  • এ এইচ এম ফারুক
  • প্রকাশিত ০৬ জুলাই ২০১৯

রাজধানীর সড়কে গতি আনতে কুড়িল থেকে প্রগতি সরণি-রামপুরা-খিলগাঁও হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত, সায়েন্স ল্যাব থেকে শাহবাগ ও গাবতলী থেকে শ্যামলী-আসাদগেট-নিউজমার্কেট হয়ে আজিমপুর পর্যন্ত তিন সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ হবে আগামীকাল রোববার থেকে। তবে কর্তৃপক্ষের হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ঢাকাবাসী। উদ্বেগ বাড়িয়েছে সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে যেসব সড়কে আছে স্কুল-কলেজ ও হাসপাতাল।

তারা বলছেন, গণপরিবহনের সংখ্যা ও সেবার মান না বাড়িয়ে রিকশা বন্ধ করা হলে নারী ও শিশুরা পড়বেন চরম ভোগান্তিতে। একই মত সড়ক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞদের।

বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী এক নারী বলেন, বাসে অনেক ভিড় থাকে। অনেক সময় বাস নারী যাত্রী নিতেও চায় না। তাইলে রিকশা ছাড়া চলব কেমনে?

স্কুলগামী এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, রিকশার জন্য আলাদা লেন করে দিয়ে সমস্যা মেটানো যেত। রিকশা বন্ধ করলে বাচ্চাদের নিয়ে চলাচল করতে অনেক সমস্যা হবে।

আরেক পথচারী বলেন, পুলিশ যদি লেনের রিকশা কন্ট্রোল করতে পারে তাহলে যানজট কম হবে।

অন্যদিকে কর্মহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা অযান্ত্রিক এ যানের শ্রমিকদের। তারা বলেন, এক রিকশায় ৩টা পরিবার চলে। রিকশাচালকের পরিবার, গ্যারেজ মালিকের, আর মেস খাওয়ায় যে তার। তারা আরো বলেন, রিকশা চালাতে পারব না, কী খাব আমরা চুরি ডাকাতি করব?

পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজধানীতে ৪০ শতাংশ মানুষ রিকশা ব্যবহার করেন। তিন চাকার এই বাহন বন্ধ করে দিলে রাস্তায় প্রাইভেট কারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা সড়ক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞদের।

তারা বলছেন, গণপরিবহনে সেবার মান বৃদ্ধি ও স্কুল-কলেজে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার ওপর জোর না দিয়ে ঢালাওভাবে রিকশা বন্ধ করা হলে দুর্ভোগ ও অনিয়ম বাড়বে। রিকশা বন্ধ করে দিলে প্রাইভেট কারের সংখ্যা বেড়ে যাবে। সেটা রাস্তার ওপর আরেকটি প্রভাব ফেলবে। গণপরিবহনে নারী-শিশুদের যাত্রী হিসেবে না তোলার সমস্যাটা রয়েই যাচ্ছে। রিকশা বন্ধ করার পাশাপাশি অন্যান্য গণপরিবহন ব্যবস্থাকে ভালো করতে হবে।

২০১৭ সালের এক প্রতিবেদন বলা হয় ১০ বছরে যানবাহনের গতি ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার থেকে ৭ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। ২০১৮ সালে বুয়েট জানায় প্রতিদিন ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে যানজটের কারণে।

এর দায় শুধু রিকশার ওপর চাপানো কতটা যৌক্তিক? এখন এ প্রশ্ন রাজধানীবাসীর।

উল্লেখ্য, গত বুধবার দক্ষিণ সিটির নগর ভবনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সমন্বয় সভা শেষে এই রুটগুলোতে রিকশা চলাচল বন্ধের পাশাপাশি সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করার এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads