রাজধানীসহ সারা দেশে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন হাসপাতালে ৫৬০ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৫৯ জন। শুধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই (ঢামেক) ভর্তি হয়েছেন ১৪৫ রোগী। এছাড়াও অন্যান্য হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৪১৫ জন। সরকারি হিসাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও বেড়ে এখন ৮ জনে দাঁড়িয়েছে। গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তদের সম্পর্কে দেওয়া দৈনিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। গত মঙ্গলবার সকাল ৮ থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৮ পর্যন্ত এই ২৪ ঘণ্টার হিসাব অনুযায়ী এ সংখ্যা তুলে ধরা হয়। যদিও বেসরকারি হিসেবে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা প্রায় তিনগুণ।
এই রিপোর্টে বলা হয়, ৫৬০ জন রোগীর মধ্যে শুধু একজন রোগী খুলনা বিভাগের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাকিরা ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুধবারের হিসাব অনুযায়ী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ১৪৫ জন, মিডফোর্ড হাসপাতালে ৫৭ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ১১ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৪৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮০ জন, বারডেম হাসপাতালে ৪ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ১৬ জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫৫ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৬ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ১৩৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে দেওয়া রিপোর্টে।
রিপোর্টটিতে গত ১ জানুয়ারি থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানানো হয়। যদিও কোন হাসপাতালে কত জন মারা গেছেন সেই বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) প্রতিদিন বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৪৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৯৩ জন। বুধবার রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৪০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। ছুটি নিয়েছে ১৩২ জন।
বিভিন্ন ওয়ার্ডে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। অনেকেই বেড না পেয়ে ফ্লোরে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. টিটো মিঞা বলেন, হাসপাতালের রোগী অনুযায়ী বেডের সংখ্যা কম। ডেঙ্গু ছাড়াও অন্যান্য রোগীর ভিড় সবসময় থাকে। এর মধ্যে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বেড়েছে অনেক। বেড না পেয়ে মেঝেতে আছেন অনেক রোগী। তবে সব রোগীকেই সমান চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
টিটো মিঞা আরো বলেন, আমাদের ডেঙ্গু বিশেষজ্ঞরা সব সময় রোগীদের খোঁজ নিচ্ছেন। একটা বিষয় খেয়াল করবেন, যেসব ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন তারা শুধু ডেঙ্গু রোগেই আক্রান্ত না। অনেকেরই উচ্চরক্তচাপ, কিডনি রোগ ও লিভারে সমস্যা রয়েছে, তাদের মৃত্যুঝুঁকিটা বেশি থাকে। এ ধরনের রোগীদের খুবই সতর্ক থাকতে হয়। তবে রোগীদের চিকিৎসার ত্রুটি হচ্ছে না।