• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
রাজধানীতে ডেঙ্গু আতঙ্কে স্কুলবিমুখ শিক্ষার্থীরা

ছবি : সংগৃহীত

মহানগর

রাজধানীতে ডেঙ্গু আতঙ্কে স্কুলবিমুখ শিক্ষার্থীরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৭ জুলাই ২০১৯

রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়ে পড়ায় মশার আতঙ্কে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় স্কুলে পাঠাতে হচ্ছে শঙ্কা নিয়েই। সচেতনা থেকে অভিভাবকদের অনেকেই সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন শরীরের উন্মুক্ত অংশ ঢেকে কিংবা মশা প্রতিরোধী তরল পদার্থ মাখিয়ে। আবার অনেক শিশু শিক্ষার্থী ক্লাসে মশার কারণে স্কুলে যেতে চাচ্ছে না, এমন অভিযোগ করেন অভিভাবকরা।

ইসরাত শারমিন নামে সেন্ট্রাল ওমেন্স কলেজের একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানান, মশার কামড়ের ভয়ে বেশ কিছুদিন ধরে কলেজ ড্রেসের সঙ্গে লম্বা মোজা ও জামা পরে শরীর ঢেকে ক্লাসে যাচ্ছেন। এই ছাত্রী বলেন, কখন, কোথায়, কীভাবে মশা কামড়াবে তা তো আগে থেকে বলা যাচ্ছে না। সে জন্য নিজের নিরাপত্তা নিজেকেই নিতে হচ্ছে।

অভিভাবকদের পরামর্শে একইভাবে স্কুলে যেতে হচ্ছে নারিন্দা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হানকে। ভিকারুননিসা নূন স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিভাবকের অভিযোগ, ক্লাসে মশার অত্যাচারে তার মেয়েটি স্কুলে যেতে অনাগ্রহী হওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

ধানমন্ডি বয়েজ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সামিনা ইয়াসমিন বলেন, ১৫ দিন আগে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা বিদ্যালয়ের আশপাশে মশার ওষুধ ছিটিয়ে চলে গেছেন। এরপর আর তারা আসেনি। তবে আমরা নিজেরা মিলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখেছি। অ্যাসেম্বলিতে ছাত্রদের ডেঙ্গু রোগ বিষয়ে সচেতন করছি।

সিটি করপোরেশনের ভূমিকা নিয়ে একই কথা বললেন আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের (মুগদা শাখা) অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম। তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমরা শিক্ষার্থীদের সচেতন করছি। তবে শিক্ষা বিভাগ থেকে এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা পাইনি।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে গত বৃহস্পতিবার রাতে সতর্কতা জারি করা হয়। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের করণীয় বিভিন্ন নির্দেশনাও দেওয়া হয়।

ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ডিএনসিসির আওতাধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম মতবিনিময় সভা করেন। মিরপুরের গার্লস আইডিয়াল ইনস্টিটিউটে গতকাল শুক্রবার দুপুরে এ সভা হয়েছে। সভায় ডেঙ্গু মশা প্রতিরোধে বিভিন্ন করণীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান বলেন, মশানিধনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দরকার হলে মহাপরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

রাজধানীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব মতে, প্রতি মিনিটে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিনজন করে রোগী ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালগুলোতে। বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে ব্যাপকহারে। এ অবস্থায় ঢাকা মহানগরীর দুই হাজারের বেশি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থীও রয়েছে ঝুঁকিতে। নগরীর অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশের এলাকায় দেখা গেছে, মশার উর্বর প্রজননক্ষেত্র।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ এফ এম মনজুর কাদির বলেন, মশানিধনের কাজটি করে সিটি করপোরেশন। আমরা শুধু প্রতিটি বিদ্যালয় পরিচ্ছন্ন রাখতে শিক্ষকদের নির্দেশনা দিই। শিক্ষার্থীদের সচেতন করার কথা বলি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads