• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

মহানগর

ডিএনসিসির অর্ধেক বাড়িতেই এডিস জন্মানোর পরিবেশ

দেড় হাজার বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রায় ৭৪ হাজার বাড়ি ও স্থাপনার দুই দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পেয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীরা। আর ৫৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পেয়েছেন তারা।

অভিযানের সময় এক হাজার ৫৪০টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা খুঁজে পাওয়া যায়, যা পরিদর্শন করা মোট বাড়ির দুই দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। এ ছাড়া ৩৯ হাজার ৫৯৯টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার বংশবিস্তারের উপযোগী স্থান এবং দীর্ঘদিন জমে থাকা পানি পাওয়া যায়। এই সংখ্যা মোট পরিদর্শন করা বাড়ির ৫৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। রাজধানীসহ সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পর গত ২৫ আগস্ট থেকে ঢাকা উত্তরের প্রতিটি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভার খোঁজে অভিযান শুরু হয়।

‘এডিস মশা ধ্বংসকরণ ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান’ নামের এই কর্মসূচিতে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সাত দিনে ৩৬টি ওয়ার্ডের ৭৩ হাজার ৮১৫টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন কর্মকর্তারা।

গত শনিবারও উত্তর সিটির ৩৬টি ওয়ার্ডের ১০ হাজার ৫৩৮টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা। এ সময় ১৬২টি বাড়ি ও স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। সেখানে ‘এ বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে’ লেখা স্টিকার লাগিয়ে দেন তারা।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে হোল্ডিং নম্বরধারী বাড়ি বা স্থাপনা আছে মোট দুই লাখ ৪০ হাজার। সব বাড়িতেই এ অভিযান চালানো হবে বলে কর্মকর্তারা জানান। 

অভিযানে সম্পৃক্ত সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, মানুষের সচেতনতার অভাব ও দায়িত্বহীনতাই এডিস মশার বিস্তারের বড় কারণ। উত্তর সিটির আওতাধীন গুলশান, বনানী, বারিধারা ও উত্তরার মতো অভিজাত এলাকায় এডিসের লার্ভা ও মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ বেশি পাওয়া গেছে বলে জানান উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজিদ আনোয়ার। তিনি বলেন, বেশিরভাগ বাড়ির বাসিন্দারাই এডিসের প্রজননস্থল নিয়ে ভুল ধারণা পোষণ করেন। তিনি আরো বলেন, এসব এলাকার বাড়িগুলোতে বাড়ি সাজানোর উপকরণ, ফুলের টব ব্যবহার করা হয় অনেক বেশি। অনেক বাড়ির ছাদে ফুলের টবে জমে থাকা পানিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে।

বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে মালিকের সংখ্যা বেশি থাকে। এ কারণে পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব কার-এ নিয়ে টানাপড়েনের কারণেও এসব বাড়িতে এডিসের জন্ম হচ্ছে বলে মনে করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ। তিনি বলেন, অনেকের ধারণা, রাস্তার পাশের নালায় এডিস মশার জন্ম হয়। আবার একাধিক ফ্ল্যাট মালিকদের মধ্যে যোগাযোগ কম, কে বাড়িটি পরিচ্ছন্ন রাখবে, তা নিয়ে সমন্বয়হীনতা আছে। এই সুযোগে এডিস মশা জন্ম নিচ্ছে।

উত্তরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির অঞ্চল-১-এর নির্বাহী কর্মকর্তা জুলকার নাইন। তিনি বলেন, বেশিরভাগ বাড়ির ছাদ এবং বেজমেন্টে এডিসের লার্ভা ও প্রজনন উপযোগী পরিবেশ দেখেছেন তিনি।

এ সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, আমাদের নাগরিকরা অসচেতন নয়। কিন্তু আমার মনে হয় ইচ্ছার অভাব আছে।

পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মামুন বলেন, আমরা এখন সচেতনতার জন্য যে কাজগুলো করছি, এটা যদি আরো পাঁঁচ বছর আগে শুরু করতাম, তাহলে হয়তো আজকের এ অবস্থা হতো না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads