• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
হাতিরঝিলের ‘ক্যানসার’ এখনো দাঁড়িয়ে

সংগৃহীত ছবি

মহানগর

হাতিরঝিলের ‘ক্যানসার’ এখনো দাঁড়িয়ে

  • মো. রেজাউর রহিম
  • প্রকাশিত ১৭ জানুয়ারি ২০২০

রাজধানীর হাতিরঝিলের ‘ক্যানসার’ হিসেবে আলোচিত বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক কার্যালয় ‘বিজিএমইএ ভবন’ ভাঙার প্রক্রিয়ার স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও সুস্পষ্টভাবে কোনো কিছু বলছেন না। কবে নাগাদ এ ভবন অপসারণ বা ভাঙা হবে সে বিষয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকেও মিলছে না কোনো সঠিক তথ্য। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভবন ভাঙার জন্য উচ্চ আদালত সর্বশেষ সময় বেঁধে দেওয়ার পর ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল রাজউকের তত্ত্বাবধানে বিজিএমইএ ভবন খালি করা হয়। এরপর থেকেই ভবনটি ভাঙার কাজে চলছে সময়ক্ষেপণ। যদিও গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম গত বছরের ১৮ অক্টোবর রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, দুদিনের মধ্যেই বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে। গণপূর্তমন্ত্রীর সে ঘোষণার পর প্রায় ৩ মাস পার হয়ে গেলেও এখনো এ কাজের ঠিকাদার নিয়োগের কার্যক্রমে কোনো অগ্রগতি হয়নি। এর আগে গত ডিসেম্বরে এ বিষয়ে রাজউক কর্মকর্তা ও হাতিরঝিল প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) রায়হানুল ফেরদৌস গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যেই ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে। তার এ বক্তব্যের পর গত দেড় মাস পার হলেও ঠিকাদার নিয়োগ চূড়ান্ত না হওয়ায় ভবন ভাঙায় স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিজএমইএ ভবন ভাঙার বিষয়ে রাজউকের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান সাইদ নূর আলম দাবি করেছেন, ভবনটি ভাঙার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বাংলাদেশের খবরকে বলেন, শিগগিরই বিজিএমইএ ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, আশা করি-দ্রুতই আমরা বিজিএমই ভবন ভাঙার কাজ শুরু করতে পারব।

জানা গেছে, বিজিএমইএ ভবন ভাঙার প্রক্রিয়ায় সর্বনিম্ন দরদাতা সরে যাওয়ার পর গত ডিসেম্বরেই দ্বিতীয় নিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে এ কাজ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে উদ্যোগের পর প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও নতুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো চুক্তিই সম্পাদন করতে পারেনি রাজউক।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে রাজউকের দরপত্র আহ্বানের পর সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স, ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ, পি অ্যান্ড এস এন্টারপ্রাইজ, চন্দ্রপুরী এন্টারপ্রাইজ এবং সামিয়া এন্টারপ্রাইজ নামক পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। এর মধ্যে সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্স সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হয়। তারা ভবন ভাঙতে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার দরপত্র জমা দেয়। পূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউক এই প্রতিষ্ঠানকে ভবনটি ভাঙার কাজ দেওয়ার বিষয়ে প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি এ কাজ থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়। আর এরপর রাজউকের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় নিম্নদরদাতা ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজকে ভবনটি ভাঙার কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অজ্ঞাত কারণে এ প্রক্রিয়াটিও থমকে রয়েছে। জানা গেছে, ভবন ভাঙাসংক্রান্ত রাজউকের দরপত্রে ভবনের আসবাব ও অন্যান্য মালামালসহ ভাঙার প্রস্তাব ছিল। কিন্তু আদালতের চূড়ান্ত আদেশের পর বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ এবং ভবনের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান তাদের সব ধরনের মালামাল ভবন থেকে সরিয়ে নেয়। আগের সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মূলত এ কারণেই ভবন ভাঙার প্রক্রিয়া থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়। এরপর দ্বিতীয় নিম্নদরদাতা ফোরস্টার এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকেও ভবনটি ভাঙার কাজে তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। প্রসঙ্গত, জলাশয়ের ওপর অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বিজিএমইএ ভবনকে হাতিরঝিলের প্রকল্পের ‘ক্যানসার’ আখ্যায়িত করেছিলেন হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads