• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

মহানগর

‘একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ক্ষতিকর’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৪ নভেম্বর ২০২০

একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের উৎপাদন বাড়ানো এবং এর ব্যবহার দেশে মারাত্মক পরিবেশদূষণ ঘটাচ্ছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ধরনের ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক উৎপাদন এবং ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও নিষিদ্ধ করার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানান তারা। পাশাপাশি পরিবেশদূষণ ও মারাত্মক অবক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচাতে প্যাকেজিং, টিউব এবং স্যাশের মধ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বানও জানান বিশেষজ্ঞরা। গতকাল সোমবার এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডো) এক অনলাইন কর্মশালায় এ মতামত জানানো হয়। 

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম জুমে আয়োজিত এ কর্মশালায় উচ্চ পর্যায়ের সরকাির কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারকরা অংশ নেন।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, প্লাস্টিক পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক ভূমিকা রাখে। এ প্লাস্টিকের পণ্যগুলো একবারের বেশি ব্যবহার করা যায় না, ফলে ব্যবহারের পর তা আবর্জনা হিসেবে ফেলে দেওয়া হয়। প্লাস্টিক মাটির সঙ্গে মিশে যেতে কয়েকশ বছর সময় নেয় এবং এর মাইক্রো প্লাস্টিক এবং মাইক্রোবিডস সাধারণত সমুদ্রে তলানি হিসেবে জমা হয়। এসডোর তিন বছরব্যাপী করা এক গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে তিনটি বড় শহরে প্রতি মাসে প্রায় সাত হাজার ৯২৮ বিলিয়ন মাইক্রোবিডস আবর্জনা হিসেবে জমা হয়। তারা বাংলাদেশে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দূষণের স্থায়ী সমাধানের দাবি জানান। তারা বলেন, বাংলাদেশ ২০০২ সালে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক শপিংব্যাগ নিষিদ্ধ করলেও এখন পর্যন্ত তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। 

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দূষণ থেকে আগামীতে বাংলাদেশ বড় ধরনের পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। তারা ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের উৎপাদন, ব্যবহার এবং আমদানি নিষিদ্ধ করার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জোর দেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কেয়া খান বলেন, শুধু আইন প্রয়োগ করেই অবস্থার উন্নতি সম্ভব নয়। তিনি আবেদন জানান, এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে। কর্মশালায় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. জিয়াউল হক মানুষ, প্রাণীদেহে এবং সামগ্রিক পরিবেশের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরেন।

এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের নেতিবাচক দিক তুলে ধরে বলেন, প্রতি বছর বিলিয়ন টন মাইক্রোপ্লাস্টিক বর্জ্য হিসেবে জমা হয়। এগুলো পলিপ্রোপিলিন দিয়ে তৈরি বিধায় গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ঘটায় এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। সমাপনী বক্তব্যে নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা উপস্থিত সরকারি নীতিনির্ধারক, স্টেকহোল্ডার ও এনজিওকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে আশা প্রকাশ করেন, তাদের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা এ প্রোগ্রামকে সফল করবে। 

তিনি বলেন, সরকারের পদক্ষেপে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে এর সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব।

কর্মশালায় আরো বক্তব্য রাখেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মোখলেছুর রহমান আকন্দ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রলয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (বর্জ্য ব্যবস্থাপনা) রাজিনারা বেগম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন, পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (বিপিসিএল)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাদেম এম ইউসুফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং এসডোর সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসর অধ্যাপক ড. আবু জাফর মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক ডা. রওশন মমতাজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এস এম মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads