• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

মহানগর

মেয়রের নামে অর্থ নিয়ে ফাঁসছেন কাউন্সিলর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ ডিসেম্বর ২০২০

দোকান না ভাঙার আশ্বাস দিয়ে ডিএসসিসির মেয়র তাপসের নামে টাকা নেওয়ায় ফেঁসে যেতে পারেন ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ ওরফে রতন। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে তার কাছে মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়েছেন মেয়র। গত বৃহস্পতিবার রাতে মেয়র স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে রতনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের।

সূত্রমতে, মেয়র তাপস পদে বসে সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত করার কথা বলছেন। তার নির্দেশে নগর কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন দুটি মার্কেটে নকশাবহির্ভূত দোকান উচ্ছেদ করা হচ্ছে।

প্রথমে অভিযান চালানো হয় ফুলবাড়িয়া মার্কেটে। সেখানে প্রায় এক হাজার দোকান থেকে দোকানিদের উচ্ছেদ করা হয়। এরপর অভিযান শুরু হয় সুুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটে। সেখানে ছয় শরও বেশি দোকান ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করে উচ্ছেদকারীরা। যদিও দোকানিদের আবেদনে হাইকোর্টের আদেশে আপাতত বন্ধ রয়েছে অভিযান।

এই অভিযানের সময় ব্যবসায়ীরা দাবি করতে থাকেন, তাদের পজেশন অবৈধ নয়। তারা টাকা দিয়ে দোকান বৈধ করেছেন। টাকা দেওয়ার রশিদও দেখিয়েছেন বহুজন। জানিয়েছেন, সিটি করপোরেশনে নিয়মিত ভাড়াও পরিশোধ করা হয়েছে। সেখানে বাধে বিপত্তি। বহু রশিদে সই আছে, কিন্তু সিল নেই। আবার সিটি করপোরেশনের রশিদ থাকলেও নথিতে নাম নেই। ফলে করপোরেশনের তহবিলে কোনো টাকা জমা পড়েনি।

প্রশ্ন ওঠে, তবে টাকা কে নিয়েছেন! ব্যবসায়ীরা তখন জানান, সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের নাম ভাঙিয়ে নিয়েছেন কেউ কেউ; কেউ আবার টাকা নিয়েছেন বর্তমান মেয়র তাপসের নামে।

ব্যবসায়ীরা জানান, দোকান বৈধ করার আশ্বাস দিয়ে টাকা তুলেছেন যুবলীগ নেতা শাহাবুদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা মনোয়ার হোসেন ও কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতন। একেকটি দোকানের জন্য পাঁচ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি দোকানিদের।

তার নামে টাকা তুলেছেন বলে দোকানিদের বক্তব্য কানে গেছে মেয়র তাপসের। ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি। কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিনকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবরে ডিএসসিসির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুসারে এটা অসদাচারণ। এমন কর্মকাণ্ডের কারণে ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। জবাব দিতে হবে সাত কর্মদিবসের মধ্যে।

তবে কাউন্সিলরের দাবি, তিনি নির্দোষ। এই জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘আমি জীবনে কোনোদিন ওই মার্কেটের (সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেট) ভেতর ঢুকি নাই। টাকা নেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। বরং মেয়র সাহেবকে (ফজলে নূর তাপস) আমি বার বার ওখানে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে বলেছি।’

ফরিদ উদ্দিন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের রাজনীতিতে জড়িত। তিনি ২০নং ওয়ার্ডের টানা দুবারের কাউন্সিলর। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় গ্রেপ্তার হওয়া বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীম, যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সঙ্গে ফরিদের সুসম্পর্ক ছিল।

নগর ভবন, গণপূর্ত অধিদপ্তর, বিদ্যুৎ ভবনে ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে ফরিদের বিরুদ্ধে, যদিও এসব তিনি অস্বীকার করেছেন।

এই কাউন্সিলর প্রথম দফায় নির্বাচিত হওয়ার পর ডিএসসিসির দুই কর্মকর্তাকে মারধর করেও আলোচনায় এসেছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads