• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
সংক্রমণ ও মাস্কের দাম যুগপৎ বাড়ছে

ছবি: বাংলাদেশের খবর

মহানগর

সংক্রমণ ও মাস্কের দাম যুগপৎ বাড়ছে

  • সালাহ উদ্দিন চৌধুরী
  • প্রকাশিত ০৪ এপ্রিল ২০২১

করোনা সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাস্কের দামও বাড়ছে। সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে সংক্রমণ রোধে সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করতে বলা হলে অসাধু ব্যবসায়ীরা অত্যাবশ্যকীয় সেই মাস্কের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এদিকে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর আমদানি সংক্রান্ত অনুমতিপত্র দিতে দেরী করায় অসাধু ব্যবসায়ীরা অবৈধ পন্থায় এসব সামগ্রী আমদানির সুযোগ নেবে।

রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে মাস্ক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জহির জানান, প্রতি ৩ পিস মাস্ক তারা বিক্রি করছেন ১০ টাকায়। অথচ ৮-১০ দিন আগেও ৫-৬ পিস মাস্ক বিক্রি করেছেন ১০ টাকায়। ভ্রাম্যমাণ পাইকারি মাস্ক বিক্রেতাদের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে এক হাজার পিস মাস্ক আগে কিনতেন এক হাজার থেকে ১২শ টাকায়। সেই মাস্কই গত কয়েকদিন ধরে প্রতি হাজার কিনছেন ১৪শ থেকে ১৬শ টাকায়। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী সময়ে মাস্কের দাম আরো বাড়বে বলে জানান তিনি।

ক্যান্টনমেন্ট কচুক্ষেতে এয়ারপোর্ট ফার্মেসির মালিক রাসেল জানান, ৫০ পিসের প্রতি বক্স মাস্ক তারা বিক্রি করছেন দেড়শ টাকায়; যা কয়েকদিন আগেও তারা বিক্রি করেছেন ১২০ টাকায়। তবে হ্যান্ড সেনিটাইজার কিংবা হেক্সিসলের মতো জীবাণুনাশক পণ্যেও দাম বাড়েনি বলে জানান তিনি।

মিরপুর-১ নম্বরে ঢাকা ফার্মেসির বিক্রেতা শাহাদাত রানা জানান, তার ফার্মেসিতে ৫০ পিস বক্সের ওয়ান টাইম মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। বিভিন্ন ফার্মেসিতে মাস্কের দামের পার্থক্য প্রসঙ্গে তিনি জানান, মাস্ক তৈরির কাপড়ের গুণগত মানের কারণে দামের পার্থক্য হচ্ছে। তবে সব ধরনের মাস্কের দামই বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি।

এ খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, যে ধরনের বিশেষ কাপড় দিয়ে ওয়ান টাইম সার্জিক্যাল মাস্ক তৈরি করা হয়, বিশ্ববাজারে বর্তমানে তার দাম বেড়েছে। একেকটি সার্জিক্যাল মাস্ক পাইকারি মূল্যে ১০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। খুচরা মূল্য হিসেবে তা ১২ থেকে ১৩ টাকায় বিক্রি করা যায়। তবে মধ্যস্বত্বভোগীরা এসবের দ্বিগুণ দাম রাখছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা তিনগুণও রাখা হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড যখন ভ্যাট-ট্যাক্স মওকুফের প্রজ্ঞাপন জারি করে তখন দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০০ থেকে ১৫০ জন। বর্তমানে দৈনিক গড়ে  আক্রান্ত হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। এ পরিস্থিতিতে যেভাবেই হোক দ্রুত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীর আমদানি সহজ করতে হবে এবং মূল্যও সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে রাখতে হবে। তা না হলে একদিকে যেমন নকল মাস্কে বাজার সয়লাব হবে অন্যদিকে দাম বৃদ্ধি পেলে মানুষ এসব পণ্য ব্যবহার কমিয়ে  দেবে। যা বর্তমান করোনা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইক্যুইয়েপমেন্ট ইমপোর্টারস মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সোহাগ বাংলাদেশের খবরকে বলেন, দেশে করোনার প্রকোপ পুরনায় বেড়েছে। ফলে আগামী সময়ে সুরক্ষা সামগ্রীর চাহিদা আরো বৃদ্ধি পাবে। গতকাল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সোমবার থেকে লকডাউনের ঘোষণা দেওয়ার পর দুপুর থেকেই চিকিৎসকরা এন ৯৫ মাস্ক কিনতে তোপখানা রোডের বিএমএ ও পুরান ঢাকার মিটফোর্ড মার্কেটে ভিড় করেন। করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় ৫১০-৫২০ টাকা আমাদানি মূল্যের এন-৯৫ মাস্ক শুক্রবারেও বিক্রি হয়েছিল ১৭০ টাকা করে। শনিবার এই মাস্কই বিক্রি হয়েছে ২৭০ টাকায়। একইভাবে চাহিদা কমে যাওয়ায় ২৫ থেকে ৩০ টাকা আমাদানি মূল্যের কেএন-৯৫ মাস্ক এতদিন বিক্রি হচ্ছিল ৮-১০ টাকায়। সেই মাস্ক এখন বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৫ টকায়। 

কামরুজ্জামান সোহাগ আরো বলেন, সরকার স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখলেও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে এসব পণ্য আমদানির অনুপতিপত্র বা এনওসি পেতে ৭ থেকে ১৪ দিন সময় নিচ্ছে। এনওসি ২-৩ দিনের ভেতর দেওয়া উচিত। তা না হলে অবৈধ পন্থায় এসব পণ্য আমদানি করবে অসাধু ব্যবসায়ীরা। তারা পণ্যমূল্য কম দেখিয়ে বাকি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করবে। ঘোষিত মূল্য কম দেখিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা নকল পণ্য আমদানি করবে। তখন আর কেউ চালান জমা দিয়ে ওষুধ প্রশাসনের আমদানি সংক্রান্ত অনুমতিপত্র নেবে না। তাতে করে মূল আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমানের মুঠোফোনে ফোন করলেও তিনি ফোন না ধরায় এ প্রসঙ্গে তার কোনো মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads