করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারীর গুরুতর সংক্রমণের মধ্যে নতুন করে ‘কঠোর লকডাউন’ শুরুর আগে ১২ এপ্রিল অমর একুশে বইমেলা শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদকে উদ্ধৃত করে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সল হাসান গতকাল শনিবার দুপুরে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় পূর্ণ লকডাউন শুরুর আগেই ১২ এপ্রিল বইমেলা শেষ হচ্ছে। মন্ত্রী ঢাকার বাইরে আছেন। তিনি আমাকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিতে বলেছেন। এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির সচিব এ এইচ এম লোকমান বলেন, বইমেলা ১৪ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার ১২ এপ্রিল শেষ করা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে লিখিতভাবে আমি কোনো নির্দেশনা পাইনি। ওটা পেলে আমরা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেব।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, সরকারের কোনো সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। আমরা আমাদের মতো করে মেলার বই-পুস্তক সরিয়ে নেব।
করোনার কারণে ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে এ বছর ১৮ মার্চ মেলা শুরু হয়। সেদিন বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে মেলা। অন্য দিনগুলোতে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলে। কিন্তু দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেলে ৩১ মার্চ বইমেলার সূচি পরিবর্তন করে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত করা হয়।
করোনা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় সরকার সাত দিনের জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর বইমেলার সময় পরিবর্তন করে চালু রাখার কথা জানায় সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
গত ৪ এপ্রিল রোববার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন নাহার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অমর একুশে বইমেলা-২০২১-এর কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের জারি করা বিধান এবং স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ ও জনসমাবেশের ঝুঁকিপূর্ণ যে-কোনো কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয়।
কিন্তু কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও বইমেলা চালু থাকলেও পাঠক-দর্শনার্থীর দেখা তেমন মেলে না। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন প্রকাশকরা। এজন্য সরকারের ‘সমন্বয়হীন সিদ্ধান্ত’কে দায়ী করেন তারা।
১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বইমেলা চলবে বলে আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্ধারিত সময়ের দুদিন আগেই শেষ হচ্ছে মেলা।