• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
ব্যর্থ হোন, প্রায়ই ব্যর্থ হোন এগিয়ে যেতেও ব্যর্থ হোন

প্রতীকী ছবি

মন

ব্যর্থ হোন, প্রায়ই ব্যর্থ হোন এগিয়ে যেতেও ব্যর্থ হোন

  • প্রকাশিত ০৫ এপ্রিল ২০২১

ব্যর্থতাকে ভালোবাসতে শিখতে হবে। কারণ ব্যর্থতা সাফল্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বলা যায় ব্যর্থতা একটি দ্বিমুখী তলোয়ার। কারণ এটা মানুষের স্বপ্ন পূরণে এবং অপূরণে দুই সময়ই কাজ করে। ব্যর্থতাকে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই ঘৃণা করে। ইগনোর করে। মানুষ ব্যর্থতাকে ভয় পায়। ‘ব্যর্থতা’ শব্দটিকে আমরা নেতিবাচক অর্থ হিসেবেই কাজে লাগাই, বিশেষ করে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায়। যদি স্কুলের পরীক্ষায় ফেল বা খারাপ রেজাল্ট করি তাহলে সবাই বলতে শুরু করে ব্যর্থ হয়েছি। নিজেরাও ব্যর্থ হিসেবে নিজেকে ধিক্কার দিতে থাকি। কিন্তু বাস্তবে ব্যর্থতা জীবনের যে-কোনো ক্ষেত্রে সাফল্যের চাবিকাঠি হিসেবেই ধরা দেয়। মনে রাখতে হবে, যে ব্যর্থ হয়নি সে কখনো সফল হতে পারেনি। ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েই সফলতার পথে হাঁটতে হয়।

ব্যর্থতা একটি সম্পদ এটা বোঝার সময় হয়তো এসে গেছে। যদি এই সম্পদটি সঠিকভাবে ব্যবহূত হয় তাহলে সাফল্য আসতে পারে বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে। হলিউডের অন্যতম সফল অভিনেতা উইল স্মিথ। তিনি আবেগের সাথে বলেছেন সফল হতে হলে কীভাবে ব্যর্থতাকে ব্যবহার করা যায়। ব্যর্থতাকে কেন ভালোবাসা উচিত সে সম্পর্কে স্মিথ যা বলেছে সেসব তুলে ধরছি।

উইল স্মিথের ভাষ্যমতে, সফল মানুষ সবচেয়ে বেশি ব্যর্থ হন। সচরাচর মানুষ যে-কোনো পর্যায়ে সফল হতে চায়। সেটা আর্থিক, জ্ঞানার্জন বা আধ্যাত্মিক যাই হোক। সফল হতে চাওয়া মানুষের এক ধরনের অভ্যাস বা ধর্মে পরিণত হয়েছে। মানুষ সফল হতে চায় ঠিকই; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ঝুঁকি নিতে চান না বা প্রস্তুত নন। এমনটা হয় কেন? কারণ মানুষের মনে ব্যর্থতার ভয় লুকিয়ে থাকে। কিন্তু টনি রবিন্স, উইনফ্রে কিংবা স্টিভ জবসের মতো বিশ্বের সবচেয়ে সফল ব্যক্তিরাও ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু সফল এবং অসফল বা ব্যর্থ মানুষের মধ্যেকার মূল পার্থক্য হচ্ছে-কীভাবে তারা ব্যর্থতাকে দেখে। সফল মানুষ বুঝতে পারে ব্যর্থতা তাদের সাফল্যের অন্যতম একটি কারণ। সেজন্য ব্যর্থতাকে তারা মন্দভাবে নেন না, বরং শেখার এবং উন্নতির বা সফলতার একটি উপায় হিসেবে নেন।

উইল স্মিথ বলেছেন, ‘যখন আপনি জিমে যান কিংবা ওয়ার্ক আউট করেন, স্বাভাবিকভাবে আপনি আসলে সফল হতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। কিন্তু খোঁজার কথা ছিল ব্যর্থতা। আমাদের সচরাচর অভ্যাস হলো আমরা ব্যর্থ হতে চাই না। শিখতে চাই না। সফল হওয়ার মাধ্যমে যা শেখা যায়, তারচেয়ে কয়েকগুণ বেশি শেখা যায় ব্যর্থতার মাধ্যমে। এই বিষয়টা আমরা স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে চাই না। এই মানসিকতা পরিহার করা উচিত। তবেই সফলতার পথঘাট খুলবে।

স্মিথ বলেন, সক্রিয়ভাবে আপনার জীবনে ব্যর্থতাকে খোঁজ করুন। বড় বা ছোট যে-কোনো ব্যর্থতাই হোক; প্রায় সময়ই ব্যর্থ হোন এবং প্রতিটি ব্যর্থতা থেকে নতুন কিছু শেখার পথ নিশ্চিত করুন। মনে রাখবেন, যত বেশি শিখবেন ততই ভবিষ্যতের পথ মসৃণ হবে। আর সবচেয়ে বেশি শেখার অন্যতম মাধ্যম ব্যর্থতা। ব্যর্থতাকে ভালোবাসতে শিখুন।

উইল স্মিথ বলেন, সফল বা কোটিপতিদের সাধারণ মানুষ মনে করেন তারা কোনো ব্যর্থতা ছাড়াই সফল হয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। সফল ব্যক্তিরা অধিকাংশ মানুষের চেয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যর্থ হয়েছে। উইল স্মিথ দৃঢ় কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘শীঘ্রই ব্যর্থ হোন, প্রায়ই ব্যর্থ হোন, এগিয়ে যেতেও ব্যর্থ হোন।’ সফল হতে যতবার সম্ভব ব্যর্থ হওয়ার জন্য নিজের পেছনে নিজেই লেগে যান। যদি এমনটা করতে পারেন তাহলে নিশ্চিত আপনি আগের চেয়ে বেশি শিখবেন। যদি আপনার জীবনের যে-কোনো ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে চান তাহলে আপনাকে ব্যর্থতার সুযোগ নিতে হবে। নিজের ওপর যদি বাজি ধরতে শিখে যান তাহলে বিশ্ব আপনাকে পুরস্কৃত করবে।

স্মিথ বলেছেন মনে রাখবেন, আপনাকে আপনার সামর্থ্যের মধ্যে থাকতে হবে। নিশ্চিত যেখানে ব্যর্থতা রয়েছে সেখানকার প্রথম সারিতে আপনাকে থাকতে হবে। ভাবতে হবে আপনি ব্যর্থ হবেন বলেই শুরু করেছেন। কারণ ব্যর্থতা থেকে যে শিক্ষা নেওয়া যায় অন্য কোথাও থেকে তা নয়।

সোহানা রহমান

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads