• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
‘বদু কাকা’ ডাকায় কষ্ট পেয়েছেন বি. চৌধুরী

যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুর

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

‘বদু কাকা’ ডাকায় কষ্ট পেয়েছেন বি. চৌধুরী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০২ জুন ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাম বিকৃত করে বলায় নাখোশ হয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘প্রথম কথা আমার নাম বদরুদ্দোজা, এই নামটি আমাদের প্রিয় রসুলের (সা.) একটি সুন্দর পদবি। এর অর্থ হচ্ছে— ঘোর অন্ধকারে উজ্জ্বল পূর্ণচন্দ্র। এই পবিত্র নামটি আমার নানা আমার জন্য রেখেছিলেন। এই নামটিকে বিকৃত করে (অমুক কাকা) বলা প্রধানমন্ত্রীর সমীচীন হয় নাই।’

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর হোটেল মেট্রোপলিটনে বিকল্প স্বেচ্ছাসেবক ধারা আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি তার এই মনোকষ্ট প্রকাশ করেন।

ভারত সফর নিয়ে গত বুধবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে ‘বদু কাকা’ বলে সম্বোধন করেছিলেন।

বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য যুক্তফ্রন্ট জনগণকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করবে। তিনি বলেন, যুক্তফ্রন্ট বিন্দুতে নেই, এই ফ্রন্ট দেশের মানুষের মনে ঝড় তুলেছে।

বি. চৌধুরী যুক্তফ্রন্টের দাবির পুনরুল্লেখ করে বলেন, নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন না হলে আগামী সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনের ১০০ দিন আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে, যাতে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা তাদের পদমর্যাদার সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে না পারেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমাকে জড়িয়ে বিভিন্ন কথা বলেছেন। এ বিষয়ে আমার স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, ‘শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের দাবিকৃত (পরবর্তী সময়ে আমার সমর্থিত) তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস করার প্রয়োজনে তাড়াহুড়ার মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’ তিনি বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন না হলে দেশে রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হতো। ওই সময়ে আমার দল বিএনপি নির্বাচনকে ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য ব্যবহার করেনি। ওই বিল পাস করার পরই ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

এ প্রসঙ্গে বি. চৌধুরী বলেন, অন্যদিকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল অসম্পূর্ণ, প্রশ্নবিদ্ধ এবং ওই নির্বাচন বিনা ভোটে সব সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ভোটারবিহীন ওই নির্বাচনের ওপর ভিত্তি করেই বর্তমান সরকার ৫ বছর কাটিয়ে দিল। চার বছর হয়ে গেল কিন্তু আপনারা ক্ষমতা ছাড়লেন না।

তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, ভারতকে কী কী দিয়েছেন তা জনগণকে জানানো উচিত ছিল। ভারত আমাদের ভালো বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা আমাদের আশ্রয় দিয়েছে, খাদ্য দিয়েছে। তাই তাদের সহযোগিতা ভোলার নয়। তিনি কবিগুরুর একটি কবিতার পিক্ত উল্লেখ করে বলেন, যতটুকু দিবে ততটুকু নিবে, কিন্তু আমরা কী পেলাম, তিস্তায় পানি নেই, পদ্মা পানিশূন্য।

তিনি এরশাদের নাম উল্লেখ না করে বলেন, সংসদে একটা জামাই আদরের দল আছে। তাদের কাজ শুধু তেল মারা। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতকে মাসে ৫ লাখ টাকা বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু তার কাজ কী? কী করেন তিনি?

বি. চৌধুরী বলেন, কাউকে তেল মারা বা খুশি করার জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করিনি। তার ব্যাপারে আইনের শাসন লঙ্ঘিত হয়েছে। আদালতের আদেশ সত্ত্বেও তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।

একই অনুষ্ঠানে সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শপথ নেওয়ার জন্য ডা. বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের প্রতি আহ্বান জানান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ডা. বি. চৌধুরী যখন শিক্ষক আমি তখন ছাত্র, ওনার মতো একজন দেশবরেণ্য ব্যক্তির নাম বিকৃতভাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শিষ্টাচার-বহির্ভূত কাজ করেছেন।

বিকল্প স্বেচ্ছাসেবক ধারার সভাপতি বিএম নিজাম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তৃতা করেন গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় নেতা আবদুর রউফ মান্নান, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, শাহ আহম্মেদ বাদল, আবুল বাশার, গণ সাংস্কৃৃতিক দলের সভাপতি এস আই মামুন প্রমুখ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads