• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
আপনাকে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো লাগতে পারে : বিরোধী দল

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত

সংগৃহীত ছবি

রাজনীতি

জাপার এমপিদের মুহিতের হুশিয়ারি

আপনাকে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো লাগতে পারে : বিরোধী দল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ জুন ২০১৮

জাতীয় পার্টির মন্ত্রী বলায় চটেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, কখনো জাতীয় পার্টির এমপি বা সদস্য ছিলাম না। আগামীতে এমন বক্তব্য দেওয়া হলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন মুহিত। জবাবে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশে করে বলেছেন, জাতীয় পার্টির মন্ত্রী বলায় আপনাকে (অর্থমন্ত্রী) আদালতে যেতে হবে না। কিন্তু ব্যাংক ডাকাতদের রক্ষা করায় আপনাকে একদিন আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো লাগতে পারে। ভবিষ্যতেও আপনার (অর্থমন্ত্রী) মতো জ্ঞানী, অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে জাতীয় পার্টি নিজেদের দলে স্থান দেবে না বলেও জানান তারা।

জাতীয় সংসদে গতকাল সোমবার ২০১৭-১৮ সালের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থমন্ত্রীকে জাপার মন্ত্রী বলেন জাতীয় পার্টির এমপি সেলিম উদ্দিন। পরে আলোচনায় অর্থমন্ত্রী বলেন, কয়েকবারই বলেছি কিন্তু জাতীয় পার্টির সদস্যরা সেটা অস্বীকার করে যান। আজকেও অস্বীকার করেছেন। আমি আবারো স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমি কোনোদিন জাতীয় পার্টির সদস্যও ছিলাম না, কোনোদিন জাতীয় পার্টির মন্ত্রীও ছিলাম না। অনেকবারই এটা বলেছি। তিনি বলেন, জেনারেল এরশাদ যখন সামরিক শাসক ছিলেন সেই সময় আমি মন্ত্রী ছিলাম, জাতীয় পার্টির তখন জন্মও হয়নি। জাতীয় পার্টি জন্ম হওয়ার আগে আমি সেই সরকার থেকে পদত্যাগ করে চলে যাই। কাজেই আমার অনুরোধ ভবিষ্যতে যেন জাতীয় পার্টির সদস্যরা কথাটি মনে রাখেন, যদি মনে না রাখেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।

ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সময় এর জবাবে জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টি গঠনের পূর্বেই এরশাদ সাহেবের সামরিক শাসনের সময় অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল মাল আবদুল মুহিত সাহেব বাজেট দিয়েছিলেন। তিনি (অর্থমন্ত্রী) কখনো জাতীয় পার্টি করেননি। তবে আমি আশ্বস্ত করতে চাই, ভবিষ্যতে তার (অর্থমন্ত্রী) মতো জ্ঞানী, অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে জাতীয় পার্টি তাদের দলে স্থান দেবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘এর জন্য আপনাকে (অর্থমন্ত্রী) আদালতে যেতে হবে না। কিন্তু আপনি ব্যাংক ডাকাতদের যে প্রটেকশন দিয়েছেন তার জন্য আদালতে যেতে হবে।’

অর্থমন্ত্রীর ক্ষোভের জবাব দিতে গিয়ে জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন বলেন, আমি তাকে (অর্থমন্ত্রী) জাতীয় পার্টির আমলের মন্ত্রী কথাটি বলিনি। তিনি খুবই শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি, কিন্তু সংসদে আমরাও কিন্তু সহকর্মী। অর্থমন্ত্রী বয়স্ক হলেও অন্য সংসদ সদস্যকে এভাবে ধমকানো তার ঠিক হয়নি।

অন্যদিকে জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বলেন, প্রতিবছরই বড় বাজেট দিয়ে জনগণকে বড় স্বপ্ন দেখানো হয়। কিন্তু বছর শেষে দেখা যায় বাজেট বাস্তবায়ন হয়নি। গত ১০ বছরে একটি বাজেটও পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। ব্যাংক খাতকে পরিপূর্ণ পরিবারতন্ত্রে রূপ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ, কোনো রেগুলেটরি কমিটি নেই। ১ লাখ ২৫ হাজার ঋণখেলাপি রয়েছে। কারা ঋণখেলাপি, কিসের জন্য ঋণখেলাপি আজ পর্যন্ত দেশবাসীকে জানানো হয়নি, তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। দেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচার বন্ধ করা না গেলে প্রবৃদ্ধি জনগণের কোনো কাজে আসবে না। এর আগে প্রথম দিনের আলোচনায় সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও সমাপনী বক্তব্যে এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি অর্থমন্ত্রী।

সম্পূরক বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তব্যে অংশ নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, গতবার সম্পূরক বাজেট নিয়ে যেসব আলোচনা হয়েছিল তাতে আমার ইচ্ছা ছিল সম্পূরক বাজেটটাকে আরেকটু অর্থবহ করা এবং সেটা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনার ব্যবস্থা করা। এটা এ বছর আমি করতে পারিনি সে জন্য দুঃখিত। আশা করছি ভবিষ্যতে এ ধরনের একটা ব্যবস্থা হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দুই টার্মে অর্থাৎ ১০ বছরে বাজেট পাঁচ লাখ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। আগে সংসদ সদস্যরা এক লাখ কোটি টাকার বাজেট পাস করতেন, এখন করছেন পাঁচ লাখ কোটি টাকার। আর সংবিধানেই সম্পূরক ব্যয়ের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। সম্পূরক বাজেট পাস হয় সংবিধানসম্মতভাবেই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads