• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার পাঁয়তারা করছে সরকার

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

গোলটেবিল আলোচনায় ফখরুল

ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার পাঁয়তারা করছে সরকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৩ জুলাই ২০১৮

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, সরকার দেশে একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার পাঁয়তারা করছে। ইতোমধ্যে দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে। ‘রাইট টু লাইফ : অ্যা ফার ক্রাই ইন বাংলাদেশ ২০০৯-জুন ২০১৯’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব অভিযোগ করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেক শোরে বিএনপি ওই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর ১৫ মিনিটের প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। প্রামাণ্যচিত্রে বর্তমান সরকারের শাসনামলে সংঘটিত গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যার তালিকা ও সংখ্যার আলোকে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ তালিকা করা হয় মানবাধিকার সংস্থা অধিকার এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য ব্যবহার করে।

তথ্যচিত্র দেখানোর পরে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে প্রতিদিনই এখানে-সেখানে লাশ পড়ে থাকছে। নারীরা সম্ভ্রম হারাচ্ছে, শিশুরা নির্যাতিত হচ্ছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর নির্যাতন চলছে। ভিন্নমত পোষণকারীদের হাতুড়িপেটা করা হচ্ছে।

মানবাধিকার লঙ্ঘন দেশে এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা- মন্তব্য করে তিনি বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতেই সরকার সবিংধান, আইনকানুন উপেক্ষা করে এসব করছে।

গোলটেবিলে আমন্ত্রিত বিদেশি প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করার বড় উদাহরণ খালেদা জিয়ার জেল। তাকে একটি মিথ্যা মামলায় আটক করা হয়েছে। তিনি কারাগারে অসুস্থ। তাকে তার প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সাতবার খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য আবেদন করা হলেও সরকার কর্ণপাত করেনি। এমনকি, সর্বশেষ ১১ দিন ধরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাউকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।

বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর সরকারের নিপীড়নের পরিসংখ্যান তুলে ধরে ফখরুল বলেন, বিএনপির পাঁচশোর অধিক নেতাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া ১০ হাজারের অধিক নেতাকর্মীকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করা হয়েছে। সারা দেশে বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে করা ৭৮ হাজার মামলায় ১৮ লাখ মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

সরকার নানা কৌশলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন দিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে ফলাফল নিজের করায়ত্ত করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মানবাধিকার-বিষয়ক সচিব মাইক ক্রেমার, ফ্রান্স দূতাবাসের উপপ্রধান জ্যঁ-পিয়ের পঁশে, ভারতের রাজনৈতিক বিভাগের শান্তনু মুখার্জিসহ কানাডা, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, পাকিস্তান, ইরান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের কূটনীতিকরা অংশ নেন।

বিএনপি মহসচিব মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে ও মানবাধিকার-বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, সাবেক সচিব সিরাজুল ইসলাম, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান, রাষ্ট্রদূত ও সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ প্রমুখ। সেমিনারে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads