• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
নির্বাচনকালীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রস্তুতি বিএনপির

রাজনীতির মাঠে আলোচনা আছে, আসছে অক্টোবরে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হতে পারে

সংগৃহীত ছবি

রাজনীতি

নির্বাচনকালীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রস্তুতি বিএনপির

  • আফজাল বারী
  • প্রকাশিত ১৬ আগস্ট ২০১৮

এবার সম্ভাব্য নির্বাচনকালীন সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। দলটির পরিকল্পনা হচ্ছে স্বল্প সময়ের জোরালো আন্দোলনে ওই ছোট কলেবরের সরকারকে গদি থেকে নামানো। একাধিক নেতা আলাপকালে জানিয়েছেন, ওই সময়েই সব শক্তিকে সর্বাত্মকভাবে কাজে লাগাতে চান তারা। এ নিয়ে নানামুখী প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন দলটির নীতি নির্ধারকরা। নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছে ২০-দলীয় জোটের শরিকসহ অন্য মিত্ররাও। নতুন মিত্র টানার নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

রাজনীতির মাঠে আলোচনা আছে, আসছে অক্টোবরে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হতে পারে। এর প্রধান থাকবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই। এর পরই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি চায় সংসদ ভেঙে দল নিরপেক্ষ সরকার। নির্বাচন কমিশনেরও পুনর্গঠন চায় তারা।

সংবিধানের সংশোধিত ৫৬(৪) ধারা মতে আগামী অক্টোবরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের আকার ছোট করা হতে পারে। ওই সরকারে নির্বাচিতদের এক দশমাংশ অনির্বাচিত ব্যক্তিকে টেকনোক্র্যাট কোটায় অন্তর্ভুক্ত করার বিধান আছে। সংবিধানে ওই সময়ের সরকারের নাম উল্লেখ না থাকলেও ‘অন্তর্বর্তীকালীন’ বা ‘নির্বাচনকালীন’ সরকার আখ্যা দেওয়া হতে পারে বলে জানান সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক।   

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আস্থাভাজন বিএনপির প্রভাবশালী একাধিক নেতা জানান, আসন্ন আন্দোলন কর্মসূচিতে জনগণকে সম্পৃক্ত করাই হবে বিএনপির মূল লক্ষ্য। এজন্য খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন’- বিএনপির এই দাবির সঙ্গে জনস্বার্থ বিষয়ক ইস্যুগুলো জুড়ে দেওয়া হবে। এর মধ্যে ‘কোটা সংস্কার’ এবং ‘নিরাপদ সড়কের দাবি’র পাশাপাশি গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, নিত্যপণ্যের চড়া দাম,  যানজট, জলজট, স্থানীয় সরকারের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের বিষয়গুলো থাকবে। এ ছাড়া কোটা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবি যুক্ত করা হবে। উল্লিখিত আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের সংগঠিত করার চেষ্টা চলছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদধারী এক নেতা জানান, ছাত্র, শিক্ষক, বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিদিনই জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন, কালো পতাকা প্রদর্শন, গণজমায়েতসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে। তবে ছোট পরিসরের এসব আন্দোলনকে গণমাধ্যম বিশেষ গুরুত্ব দেয় না। ওই বঞ্চিতদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে চায় বিএনপি। সুনির্দিষ্ট সময়ে সব দাবি আদায়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামার প্রস্তাব দিয়ে সর্বস্তরের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।

ওই নেতা দাবি করেন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সরকার বিএনপিকে মাঠে নামাতে চেয়েছিল। কিন্তু দলটি সে ফাঁদে পা দেয়নি। তবে এবার এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে যাতে বিএনপির আন্দোলনে সবাই মাঠে নামে। এ বিষয়ে বিএনপির সাংগঠনিক প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন করা হয়েছে। দেশের সব জেলা ও মহানগর কমিটি গঠনও শেষ পর্যায়ে। নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আন্দোলনের আগে কোনো কমিটি দেওয়া হবে না। সর্বাত্মক আন্দোলনকে সামনে রেখে দলের নেতাকর্মীদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে সবাইকে।

বিএনপির ভবিষ্যৎ আন্দোলন প্রসঙ্গে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের খবরকে বলেন, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাসহ জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য ২০-দলীয় জোট বার বার সংলাপের আহ্বান জানিয়ে আসছে। সরকার এতে সাড়া না দিলে দাবি আদায়ে রাজপথে নামা ছাড়া আর বিকল্প থাকবে না। দেশের সর্বস্তরের জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন এবার সফল হবে বলে আশাবাদী মির্জা ফখরুল।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপি একটি উদারপন্থি রাজনৈতিক দল। দলটির ভিত্তি বা শক্তির উৎস জনগণ। সে জনগণের দাবি নিয়েই আমরা মাঠে নামব। যারা এখন মাঠে আছেন বা থাকবেন তাদের চলার পথে আমরাও সঙ্গী হব। তাতেই জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠবে।  

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, সরকার পতনের আন্দোলন যুগ বা বছরজুড়ে হয় না। দেশ স্বাধীন করতে সময় লেগেছে ৯ মাস, পতনের তিন দিন আগেও এরশাদ সরকার স্বীকার করেনি যে, তাদের পতন ঘটবে। তাই অবৈধ সরকার পতনের জন্য কার্যকর আন্দোলন হলে খুব একটা সময় লাগবে বলে আমি মনে করি না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads