• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
শিক্ষার্থীদের সমর্থন দিয়ে বেকায়দায় বিএনপি নেতারা

লোগো বিএনপি

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

শিক্ষার্থীদের সমর্থন দিয়ে বেকায়দায় বিএনপি নেতারা

  • রেজাউল করিম লাবলু
  • প্রকাশিত ১৭ আগস্ট ২০১৮

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বেকায়দায় পড়েছে বিএনপি। ইতোমধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে আসামি করে মামলা হয়েছে। এ কারণে বর্তমানে কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সতর্কতা অবলম্বন করছেন দলটির নেতারা। ফোনেও কথা বলতে চাচ্ছেন না তাদের অনেকে। দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে। 

গত ৩০ জানুয়ারি থেকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গত বুধবার দুপুরে তাকে দলের এক নেতা কুলখানির অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিতে আসে। এ সময় বাংলাদেশের খবরের এ প্রতিবেদক সেখানে অবস্থান করছিলেন। তখন রিজভী ওই নেতাকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে কার্যালয়ে বন্দি আছি। ইতোমধ্যে একাধিক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। কার্যালয়ের বাইরে কুলখানি অনুষ্ঠানে গেলে দুই-চার ঘণ্টা থাকতে হবে। এত সময় নিয়ে অনুষ্ঠানে যেতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, সামনে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু করবেন তারা। এই মুহূর্তে কোনো মামলায় গ্রেফতার হলে নির্বাচনের আগে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। রোজার ঈদের আগে গ্রেফতার যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু এখনো কারাগারে। একের পর এক মামলার কারণে তার জামিন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। যুবদল সম্পাদকের পর গ্রেফতার হন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার। কবে ছাড়া পাবেন তার নিশ্চয়তা নেই। এ অবস্থায় গ্রেফতার এড়িয়ে চলতে হবে। তাই সতর্কতায় নেতারা। 

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ফোনে কথা বলেন এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে। সেসময় তাকে বন্ধুবান্ধব নিয়ে রাস্তায় নামার জন্য বলেন। এ রকম একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে যান খসরু। তার ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর তিনিসহ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) ধারায় এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাও হয়। 

এরপর গত ১১ আগস্ট শনিবার বিএনপির তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান মাহমুদা হাবিবা ও তার স্বামী কামাল আহমেদ নিখোঁজ হন। তার ছোট ভাই আসিফ আবদুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার ১০ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে সড়কপথে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তার বোন মাহমুদা হাবিবা ও তার ভগ্নিপতি কামাল আহমেদ। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। এরপর থেকে তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

পরে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে ধ্বংসাত্মক রূপ দিতে অনেকে চেষ্টা করেছেন। দায়িত্বশীল অনেক নেতার অডিও রেকর্ড রয়েছে পুলিশের হাতে। কীভাবে শিক্ষার্থীদের ওই আন্দোলনে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ধ্বংসাত্মক পরিবেশ তৈরি করা হবে, সেসব নেতার অডিওতে এগুলো উঠে এসেছে। এ ছাড়া আন্দোলনের সময় গাউসিয়া-নিউ মার্কেটে স্কুল ড্রেস বানানোর হিড়িকের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। ভুয়া আইডি কার্ডও তৈরির কথাও জানান।

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আগে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তারপর থেকে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন মঈন খান। বিএনপির রাজনীতি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সময় খারাপ। ফোনে এখন কথা বলা যাবে না। কিছু জানার থাকলে বাসায় আসবেন। সাক্ষাতে কথা বলবেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads