• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
ডিজিটাল জালিয়াতির পথ থেকে সরে আসুন

বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ছবি: বাংলাদেশের খবর

রাজনীতি

ইসিকে মির্জা ফখরুল

ডিজিটাল জালিয়াতির পথ থেকে সরে আসুন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩১ আগস্ট ২০১৮

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ক্রয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার অনুরোধ জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থাহীনতা আর ঘনীভূত করবেন না। ডিজিটাল জালিয়াতির পথ থেকে সরে আসুন। অন্যথায় যেকোনো পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায় নিতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে এ অপকর্মের মূল্য দিতে হবে। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশন ও সরকার জনমত উপেক্ষা করে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আরপিও সংশোধনের মাধ্যমে ভোট জালিয়াতি করতে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের অপকৌশল হাতে নিয়েছে।

তিনি জানান, ২০১০ সালে একটি ইভিএম কেনা হয়েছে ১০ হাজার টাকায়। এখন সেটির দাম দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকার বেশি। এটি জনগণের অর্থ লোপাটের একটা প্রক্রিয়া। সরকার টিকে থাকতে ইসিকে জনগণের অর্থ লোপাটে সুযোগ করে দিয়েছে। ইসির এ অপকৌশল বাস্তবায়ন হতে দেবে না জনগণ।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, হঠাৎ কী কারণে, কার নির্দেশে, কাকে বিজয়ী করার উদ্দেশ্যে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। বিশ্বের ৯০ ভাগ দেশে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পদ্ধতি চালু নেই। বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন, ইভিএমের ভোট পদ্ধতিতে নির্বাচনে জালিয়াতি সম্ভব। এটি সহজেই হ্যাকিং করা যায়।

জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার দূরভিসন্ধিমূলক উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটি জনগণের সাংবিধানিক অধিকার হরণ ছাড়া আর কিছুই নয়। আবারো নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার থেকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। কমিশনের সঙ্গে সংলাপের সময়ও ইভিএম ব্যবহারের না প্রস্তাব দিয়েছি। কমিশনও বলেছে, ইভিএম ব্যবহার করবে না। কিন্তু নির্বাচনের তিন মাস আগে হঠাৎ করেই কার নির্দেশে ইসি জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ও ডিভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত এটি ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারকে আবার ক্ষমতায় বসানোর অপকৌশল।

নির্বাচন কমিশন সচিবের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এখন আর নির্বাচন কমিশন বলতে কিছু নেই। আছেন শুধু একজন সচিব, যা বলার কমিশন সচিব হেলালুদ্দীনই বলেন। এই ইসি সচিবই বলেছেন, আরপিও সংশোধন হবে না। আর এখন নির্বাচনের তিন মাস আগে তিনিই বলছেন, ইভিএম ব্যবহারের জন্য আরপিও সংশোধন করা হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে। নির্বাচনের আগে প্রার্থীর নমিনেশন ছিনিয়ে নেওয়া, ভোটের আগে ব্যালট বক্স পূর্ণ করা, ভোট জালিয়াতি এরই মধ্যে দৃশ্যমান। কিন্তু নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হলে নির্বাচনের আর কোনো অংশ অবশিষ্ট থাকবে না। ভোটে ইভিএম ব্যবহার বাংলাদেশের গণতন্ত্রের কফিনে সর্বশেষ পেরেক ঠুঁকা ছাড়া আর কিছু নয়। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন যতই ষড়যন্ত্র করুক- নির্বাচন কমিশন ইভিএম ব্যবহার করতে পারবে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমান, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads