• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
বিভিন্ন স্থানে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ ও পুলিশের লাঠিচার্জ 

শরীয়তপুরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে হামলার অভিযোগ করছে বিএনপি

সংগৃহীত ছবি

রাজনীতি

বিভিন্ন স্থানে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ ও পুলিশের লাঠিচার্জ 

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এছাড়া কোথাও কোথাও পুলিশি বাধা ও লাঠিচার্জে পণ্ড হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান। এসব সংঘর্ষ-লাঠিচার্জের ঘটনায় উভয় পক্ষের শতাধিক কর্মী আহত হয়েছেন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- 

শরীয়তপুর : বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে জেলা শহরে আওয়ামী যুবলীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। আহতদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ টিপু ও জেলা যুবলীগের সহদফতর সম্পাদক জাহাঙ্গীর মাদবরও রয়েছেন। এ ঘটনায় জেলা বিএনপির সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ তিন শতাধিক 

নতাকর্মী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। দুই ঘণ্টা পর পুলিশের সহায়তায় তারা নিরাপদে চলে যান।  

জেলা যুবলীগের সহদফতর সম্পাদক আহত জাহাঙ্গীর মাদবর বলেন, আমরা যুবলীগ ও ছাত্রলীগ মিছিল করে যাচ্ছিলাম। এ সময় বিএনপির নেতা টিপু মাদবরের নেতৃত্বে কিছু লোক যুবলীগের মিছিলে হামলা করেন। এতে কমপক্ষে ৫/৬ জন আহত হন।  

জেলা বিএনপির সভাপতি সফিকুর রহমান কিরণ বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আমাদের পূর্বনির্ধারিত ও শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠান চলাকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা করে কমপক্ষে ২৫ নেতাকর্মীকে আহত করেছেন।  

পালং মডেল থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মিছিলে কিছুসংখক উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মী হামলা করে। এ নিয়ে উভয় গ্রুপে সংঘর্ষ হয়। এতে ৫-৭ জন আহত হয়। জেলা বিএনপির সভাপতিসহ নেতাকর্মীদের নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শহরে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।  

ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিলে ধাওয়া দিয়ে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে জেলা বিএনপির কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় কমপক্ষে ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন জেলা বিএনপি নেতারা। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে শহরে বিএনপিদলীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। 

দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল সভাপতি মাহাবুর রহমান রানা জানান, শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে প্রায় ৩০ নেতাকর্মী আহত হন। এদের মধ্যে অনেকেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। 

দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ জানান, অনুমতি নিয়েই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালনের জন্য দলীয় কার্যালয়ে সমবেত হয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের দলীয় কার্যালয়ে বসতে দেয়নি। উল্টো লাঠিচার্জ করে অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ময়মনসিংহ পুলিশের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  

সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. সেলিম রেজার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে কাজীপুর উপজেলার চালিতা ডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কাজীপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. সেলিম রেজার অভিযোগ, গত রাত দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মী-সমর্থকরা ১৪-১৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। হামলাকারীরা বাড়ির আসবাবপত্রসহ সবকিছু ভাঙচুর করে। তাদের মারপিটের আঘাতে ভাগ্নি সাবিনা আফরিন (২৬), ভাগ্নি জামাই বোরহান উদ্দীন (৪০) ও মা শ্যামলী আফজাল (৭৬) আহত হন।  

কাজীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান জানান, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তাদের নেতাকর্মীরা একজোট হয়ে রাতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঢুকে বঙ্গবন্ধুর ছবি ও পোস্টার ভাঙচুর করে ও ছিঁড়ে ফেলে। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থকদের সঙ্গে বাজারেই বিএনপি নেতাকর্মীদের হাতাহাতি হয়। এছাড়া অন্য কোনো ঘটনা ঘটেনি।  

কাজীপুর থানার ওসি একেএম লুৎফর রহমান জানান, ঘটনার সত্যতা জানার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে কাজীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েম বাদী হয়ে সেলিমসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বিএনপির কেউ থানায় মামলা করেনি। 

চুয়াডাঙ্গা : জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক দফা লাঠিচার্জ করেছে। গতকাল দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের সময় পুলিশ বাধা দিলে এই ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।  

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাজী রবিউল হক বাবলু অভিযোগ করেন, দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। এতে তাদের ১০ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন।  

এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির বিবদমান আরো দুটি গ্রুপ আলাদা আলাদাভাবে দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads