• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
প্রার্থী মনোনয়নে ব্যস্ত রাজনৈতিক দলগুলো

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ব্যস্ততা বাড়ছে সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোতে

সংগৃহীত ছবি

রাজনীতি

প্রার্থী মনোনয়নে ব্যস্ত রাজনৈতিক দলগুলো

  • আফজাল বারী
  • প্রকাশিত ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চলতি মাসেই গঠিত হতে পারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সবকিছু ঠিক থাকলে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে হবে ভোট। হাতে সময় মাত্র চার মাস। ফলে ব্যস্ততা বাড়ছে সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোতে।

সব দল ব্যস্ত এখন মনোনয়ন তালিকা চূড়ান্তের কাজে। চলছে নানা সমীকরণ। তাই ব্যস্ততা বেড়েছে মনোনয়ন বোর্ডের। আলাপকালে একাধিক দলের মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য বাংলাদেশের খবরকে জানিয়েছেন, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তাদের ব্যস্ততা।

প্রায় ছয় যুগের পুরনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শেখ সেলিম, কাজী জাফরুল্লাহ, ড. আলাউদ্দিনসহ ১১ জন রয়েছেন এ বোর্ডে। জাতীয় নির্বাচন ছাড়াও উপনির্বাচনেও প্রার্থী চূড়ান্ত করে এ বোর্ড। প্রয়োজনে এ-সংক্রান্ত বৈঠক হয় গণভবনে। সর্বশেষ খুলনার উপনির্বাচনের জন্য সভা করে বোর্ড।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, প্রধান দল আওয়ামী লীগ ১৪-দলীয় শরিকদের জন্য ৬০ থেকে ৭০টি আসনে ছাড় দেবে। বাকিগুলোতে দলের নিষ্কণ্টক, ক্লিন ইমেজ এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়া হবে।

অনেক আগে থেকেই দলীয় প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে দলটি। খসড়া তালিকা প্রণয়নের জন্য দেশি-বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে ৩০০ আসনেই জরিপ চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। তারা আসনভিত্তিক দলের সাংগঠনিক অবস্থা, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জনসমর্থন এবং দক্ষতা-যোগ্যতার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, তাদের দল নানামুখী জরিপের মাধ্যমে বাস্তব চিত্র তুলে আনছে।

আওয়ামী লীদের সংসদীয় বোর্ডের সদস্য কাজী জাফরুউল্লাহ বাংলাদেশের খবরকে বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ বছরজুড়েই চলে। তৃণমূল ও বিভিন্ন সংস্থার তথ্য-উপাত্ত আসে। বোর্ড সেগুলো যাচাই-বাছাই করে। দায়িত্বপ্রাপ্তরা এসব কাজে ব্যস্ত এখন।

বিএনপির শীর্ষ নেতারা মাঠে ব্যস্ত কর্মসূচি নিয়ে। একই সঙ্গে দলীয় প্রার্থী বাছাই করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা। দলটি এবার বড় ধরনের ছাড় দিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নামতে চায়। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন রেখে বাকিগুলো ছেড়ে দেবে রাজপথের মিত্রদের। বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের প্রধান খালেদা জিয়া। এই দলের মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়। তবে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এ দায়িত্ব পালন করেন। বিএনপি এবারো কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে ঘিরেই সব প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি জেলে যাওয়ার আগেই একটি খসড়া তালিকা করেছেন। তাতে তিন স্তরের প্রার্থীর নাম ছিল। প্রার্থী সংখ্যা ৯০০। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তালিকা তৈরিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। মামলা-সাজা, দল থেকে বহিষ্কারসহ নানামুখী কারণে খসড়ায় অদল-বদল আসছে। নিজস্ব টিম ও নির্ভরযোগ্য সংস্থার মাধ্যমে প্রতি মাসেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করছে দলটি।

দলের স্থায়ী কমিটির চার সদস্য, মহাসচিব, দুজন ভাইস চেয়ারম্যানসহ ডজন খানেক নেতা প্রার্থী তালিকা প্রস্তুতের কাজ করছেন। এ প্রসঙ্গে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বাংলাদেশের খবরকে বলেন, বিএনপির মতো বড় দলের প্রস্তুতি সব সময়ই থাকে। ৩০০ আসনে পাঁচ-ছয়গুণ প্রার্থী মনোনয়ন চান। আমরা খোঁজ নিচ্ছি। তবে যা কিছুই করা হচ্ছে, সবই খালেদা জিয়াকে সামনে রেখে। তিনিই সব সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন।

জাতীয় পার্টির (এরশাদ) মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য সংখ্যা ৮। দলের চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ বোর্ডের প্রধান। দলের কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সাবেক মহাসচিব জিয়া উদ্দিন বাবলু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ বাকিরা থাকেন দলীয় প্রধানের পছন্দ মতো। তারাই প্রার্থী চূড়ান্ত করেন। পার্টির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, তারা ৩০০ আসনে ৯০০ সম্ভাব্য প্রার্থীর খসড়া করেছেন। তবে জোটবদ্ধ হওয়ায় ইসলামী দলগুলোকে কিছু আসন ছেড়ে দিতে পারে দলটি।

জাপার মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বাংলাদেশের খবরকে বলেন, আমরা সম্ভাব্য ৯০০ প্রার্থীর তালিকা করেছি। এক আসনে চার-পাঁচজন প্রার্থীও আছেন। খসড়া নিয়ে কাজ চলছে। তফসিলের পর সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেবে। তারপরই চূড়ান্ত করা হবে তালিকা।

বাম দলগুলোও সাধ্যমতো প্রস্তুতি নিচ্ছে। মোর্চা গঠন করে তারা আসনভিত্তিক প্রার্থীর খসড়া করছেন। তফসিল ঘোষণার পর একে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads