• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
মুখ দেখে মনোনয়ন নয়

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

মন্ত্রিসভায় শেখ হাসিনার হুশিয়ারি

মুখ দেখে মনোনয়ন নয়

# প্রার্থী বাছাইয়ে তিন স্তরের জরিপ চালানো হয়েছে # এবার ভোটাররা প্রার্থীর ভাবমূর্তিকেই প্রাধান্য দেবে

  • অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য
  • প্রকাশিত ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সভানেত্রী শেখ হাসিনার কঠোর মনোভাবের পরিচয় পাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি বলেছেন, এবারের নির্বাচন কঠিন হবে। আর এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই ভোটে জিততে হবে। এজন্য ভালো ভাবমূর্তির ব্যক্তিদের এবং যিনি জিতে আসতে পারবেন কেবলমাত্র তারাই মনোনয়ন পাবেন। শুধু মুখ দেখে আর কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। ‘ত্রিস্তর’ বিশিষ্ট জরিপ শেষ হয়েছে। এখন কঠোরভাবে যাচাই-বাছাই করে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। উল্লেখ্য, প্রার্থীর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে সরাসরি এমন কঠিন কথা এর আগে দলীয় সদস্যরা আর শোনেননি। 

গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার অনির্ধারিত আলোচনায় প্রথমেই উঠে আসে সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রকাশিত বই প্রসঙ্গটি।  পাকিস্তানি গোয়েন্দারা শেখ মুজিবকে কীভাবে নথিবন্দি করেছেন তার ভিত্তিতে চমৎকার এই বইটি প্রকাশ করায় মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। এর পরই একজন মন্ত্রীর আলোচনার সূত্র ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুব কঠিন হবে। এতে জয়লাভ করার জন্য  যোগ্য প্রার্থী লাগবে। ফলে এবার আর শুধু মুখ দেখে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচনে কেউ আসুক বা না আসুক, এটি একটি অন্য রকম নির্বাচন হবে। এখানে দলের বাইরেও ভোটাররা প্রার্থীদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করবে। ফলে দলের বাইরে ‘প্রার্থীই’ বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠবেন বলে মনে করেন তিনি।

মন্ত্রিসভা বৈঠক থেকে বেরিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, আসন্ন নির্বাচনে যেহেতু ভোটারদের কাছে প্রার্থীই বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠছেন, সে কারণে ব্যাপক যাচাই-বাছাই করে মনোনয়ন দেওয়া হবে। কারো কথায় কিংবা কারো তদবিরে এবার প্রার্থী দেওয়া হবে না। তিনিই মনোননয়ন পাবেন যিনি জয়ী হয়ে আসতে পারবেন। তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচনে দল নয়, প্রার্থীর ব্যক্তিগত ইমেজকে গুরুত্ব দেবে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, এবারের নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রে প্রার্থীর ভাবমূর্তি কাজ করবে ৭০ শতাংশ আর দলের ওপর নির্ভর করবে ৩০ শতাংশ। সুতরাং বিভিন্ন রিপোর্টের ভিত্তিতে যেসব প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা থাকবে তাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে।

আরেকজন মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখানেই থেমে না থেকে বলেন, আসনভিত্তিক যোগ্য প্রার্থী পাওয়ার জন্য ত্রিস্তর বিশিষ্ট জরিপ শেষ হয়েছে। গোয়েন্দা ও বিদেশি সংস্থা এবং নিজস্ব পদ্ধতিতে এই জরিপ চালানো হয়েছে। ওই মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসবে ধরে নিয়েই আওয়ামী লীগ প্রধান নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ওই মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়ী হতে কতটা রণকৌশল নিচ্ছেন তার প্রমাণ রোববার রাতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের সঙ্গে তার আড়াই ঘণ্টার বৈঠক। এটা অনেক অর্থ বহন করছে। গতকাল সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে চা চক্রে মিলিত হয়েছেন। এরপর সংসদে প্রতিনিধিত্ব আছে এমন সব দলের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। ১৪ দলের প্রধানদের সঙ্গেও তার বৈঠক হবে।

বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার গঠন বিষয়ে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা করেছেন। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে একই ইস্যুতে বৈঠক হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads