• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
আন্দোলনে ঢাকা দখলের প্রস্তুতি বিএনপির

বিএনপি লোগো

রাজনীতি

আন্দোলনে ঢাকা দখলের প্রস্তুতি বিএনপির

# নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের দিন থেকে আন্দোলন # তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে বৈঠক কাইয়ুমের

  • আফজাল বারী
  • প্রকাশিত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

যে দিন নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হবে, সেদিন থেকেই সরকারবিরোধী কঠোর আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। অতীতে তৃণমূলে আন্দোলনের ঝড় ঢাকায় থেমে গেলেও এবার কার্যকর প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। দলের নীতি নির্ধারণী ফোরাম ইতোমধ্যে ঢাকার উত্তর-দক্ষিণ দুই মহানগর কমিটিকে এ ব্যাপারে দিক-নির্দেশনা দিয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা নিজ থানা, ওয়ার্ডসহ মহল্লার নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রেখেছেন। প্রয়োজন হলে পাড়া-মহল্লা থেকে ঢাকামুখী করা হবে নেতাকর্মীদের। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই জানিয়েছে, আগামী নভেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। আর সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে-চলতি মাসেই নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে। তাতে বাইরের অর্থাৎ ক্ষমতাসীনদের বাইরে থেকে কাউকে রাখার সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সর্বোচ্চ কর্মসূচি হরতাল ও অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের ডাক দিয়ে রাজপথে নেমেছিল বিএনপিসহ ২০-দলীয় জোট। বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়া গুলশানের নিজ কার্যালয়ে ৯২ দিন ‘অবরুদ্ধ’ ছিলেন। সেসময় সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল ঢাকা। সরকারবিরোধীদের আন্দোলনের চিত্র দেখে তখন গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল ‘কার্যত : ঢাকায় বন্দি সরকার’। তবে আন্দোলনের সূতিকাগার ঢাকাকে নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের আন্দোলনকারীরা। ফলে তাদের আন্দোলন ব্যর্থ হয়। বিষয়টি মাথায় রেখে এবারের প্রস্তুতি চলছে বলে বাংলাদেশের খবর’কে জানিয়েছেন ঢাকার দুই মহানগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। তাদের দেখভাল করছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডন প্রবাসী তারেক রহমান।

চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ, সম্পাদকমণ্ডলীসহ দলের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছে দলের নীতি নির্ধারণী ফোরাম। তারা সংগঠন ও আন্দোলন নিয়ে মতামত দিয়েছেন। এসব বৈঠকে সকল কমিটির নেতাদের একটাই কথা ছিল, ঢাকায় আন্দোলন না হলে তৃণমূলের আন্দোলনে দাবি আদায় হবে না। 

দলীয় সূত্রের খবর, গত ৮ ফেব্রুয়ারি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর সংগঠনকে গতিশীল করতে বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি পুনর্গঠনের নির্দেশনা দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ পর্যন্ত বিএনপির জেলা-মহানগরীর পাশাপাশি অঙ্গ সংগঠনের বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তর ও দক্ষিণ শাখার থানা এবং ওয়ার্ড কমিটি রয়েছে। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনে ১ নেতার এক পদের বিষয়টি কার্যকরি করার ক্ষেত্রে সাফল্য দেখিয়েছে মহানগর উত্তর বিএনপি। এ ছাড়া বিগত মহানগর কমিটির ব্যর্থতার অপবাদ ঘুচিয়ে প্রতিটি কর্মসূচিতে রাজপথে নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই ইউনিট। এ জন্য সামনের আন্দোলন সফলেও এই ইউনিটের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা তারেক রহমানের। এ ব্যাপারে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা নিতে মালয়েশিয়া থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর লন্ডনে গেছেন এম এম কাইয়ুম। ফিরবেন আজ শুক্রবার। তিনি মোবাইল ফোনে বাংলাদেশের খবরকে জানিয়েছেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেকের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে।

এদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবীব উন নবী খান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারসহ পদধারী নেতারাও আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অন্তরালে থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগসহ তৎপরতা চালাচ্ছেন সোহেল। এ প্রসঙ্গে কাজী আবুল বাশার বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলনে আছি। দলীয় প্রধানের নির্দেশনায় বিএনপি এখনো শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেই আছে। তবে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের দিন থেকেই আমরা মাঠে নামব। এজন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি আছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads