• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
বেহাল চট্টগ্রাম নগর বিএনপি

লোগো চট্টগ্রাম নগর বিএনপি

রাজনীতি

বেহাল চট্টগ্রাম নগর বিএনপি

  • শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম
  • প্রকাশিত ১০ নভেম্বর ২০১৮

একসময় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির অভিভাবক মনে করা হতো স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ও মীর মো. নাসির উদ্দিনকে। তিনজনই একসময় মহানগর বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের নামে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে নানা গ্রুপ-উপগ্রুপে বিভক্ত নেতাকর্মীরা। বর্তমানে তিনজনই দলের কেন্দ্রীয় নেতা। অবস্থান করেন রাজধানী ঢাকায়। এদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মামলায় গ্রেফতার হয়ে রয়েছেন কারাগারে।

এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির বর্তমান কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ উল্লেখযোগ্য বেশ ক’জন নেতা ইতোমধ্যে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে বন্দি। এ অবস্থায় অনেকটা অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে মহানগর বিএনপি। একের পর এক মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে হতাশ হয়ে পড়েছেন দলের সক্রিয় নেতাকর্মীরাও।

নগর বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একের পর এক মামলা দায়েরের কারণে নেতাকর্মীরা এখন গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন। দলীয় এক পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র দুই মাসে নগরীর ১৫টি থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মোট ১৩৯টি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এসব মামলায় অন্তত ৫ হাজার নেতাকর্মী আসামির তালিকায় রয়েছেন। আড়াইশ’ সদস্যের নগর বিএনপি কমিটির প্রায় সবাই কোনো না কোনো থানার মামলায় আসামি হয়েছেন। এদের কেউ কেউ ২৫ থেকে ৩০টি মামলায়ও আসামি হয়েছেন। এদের মধ্যে দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সহ-সভাপতি মো. ইকবাল চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম চৌধুরী, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক ইয়াকুব চৌধুরীসহ অনেকে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন।

শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অনুপস্থিতিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান ও যুগ্ম সম্পাদক এস এম সাইফুল আলম ভারপ্রাপ্ত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও নেতাকর্মীরা ভরসা রাখতে পারছেন না তাদের ওপর। গত ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নগরীর বিপ্লব উদ্যানে দলের পক্ষ থেকে কর্মসূচি পালন করা হলেও সেখানে উপস্থিত ছিলেন না উল্লেখযোগ্য কোনো নেতা।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৩ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন সামনে রেখে যেখানে দেশের দ্বিতীয় বৃহৎ মহানগরীতে দল গোছানোর কথা, সেখানে বিএনপি রয়েছে অনেকটা হযবরল অবস্থায়। 

নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক ইদ্রিস আলী বাংলাদেশের খবরকে বলেন, সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলেও আমাদের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারছেন না। একের পর এক মামলা দিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে অনেকেই ঘরছাড়া। কোথাও কোনো কর্মসূচি পালন করতে গেলেই গ্রেফতার করছে পুলিশ। দেওয়া হচ্ছে মিথ্যা মামলা। একদিকে শীর্ষস্থানীয় নেতারা জেলে, অন্যদিকে মামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কে নেতাকর্মীরা ঘরছাড়া। এ অবস্থায় মহানগর বিএনপি অনেকটা অভিভাবকশূন্য অবস্থায় কঠিন সময় পার করছে।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads