• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
নির্বাচন বর্জন করবে না ঐক্যফ্রন্ট

ড. কামাল হোসেন

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

আইনজীবী মহাসমাবেশে ড. কামাল হোসেন

নির্বাচন বর্জন করবে না ঐক্যফ্রন্ট

 সরকার দিনরাত সংবিধান লঙ্ঘন করছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ নভেম্বর ২০১৮

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আগের নির্বাচন নিয়ে সরকার ১৬ কোটি মানুষের সঙ্গে ভাঁওতাবাজি করেছে। এ ভাঁওতাবাজির জন্য তাদের গোল্ড মেডেল দেওয়া উচিত। একই সঙ্গে কোনো অবস্থাতেই ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন করবে না বলেও ঘোষণা দেন প্রবীণ এই আইনজীবী। সরকার দিনরাত সংবিধান লঙ্ঘন করছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

গতকাল শনিবার বিকালে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ‘জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট’ আয়োজিত আইনজীবী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আইনজীবী মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন। পরিচালনা করেন আইনজীবী ফ্রন্টের সদস্যসচিব ও সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া।

প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপি ছাড়াও গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী ও সারা দেশের ৫৪ বারের আইনজীবী নেতা ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

২০১৪ সালের নির্বাচন পরবর্তী চিত্র তুলে ধরে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘২০১৪ সালে নির্বাচন হয়েছিল। হাইকোর্ট আমাকে অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দিয়েছিলেন। তারা নির্বাচন বিষয়ে আমার মতামত জানতে চাইলে বলেছিলাম, বলতে গেলে দুই মিনিটেই বলা যায় কোনো নির্বাচনই ছিল না। সে সময় সরকার বলেছিল, সাংবিধানিক প্রয়োজন মেটাতে নির্বাচন করেছে। দ্রুত আলোচনা করে আরেকটি নির্বাচন কীভাবে করা যায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমি ভেবেছি সরকার যেহেতু বলেছে নির্বাচন হবে। কিন্তু এ দ্রুত মানে কি ৫ বছর মেয়াদকে বোঝায়? সরকার এতটাই হালকা হয়ে গেছে যে দ্রুত মানেও তারা জানে না।

তিনি বলেন, ‘আমি আন্দাজে বলছি না। কোর্টের রেকর্ড আছে। কোর্টও বলেছেন নির্বাচন দেবেন যেহেতু বলেছেন তাহলে এটাই হোক। কিন্তু দ্রুত নির্বাচন মানে কি পাঁচ বছর? আমি এটা জানতে চাই।’

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে আমরা কোনো গণতন্ত্র দেখতে পাইনি। জনগণের শাসন থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হয়েছে, গণতন্ত্র থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, সংসদীয় শাসন থেকে জনগণকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যেনতেনভাবে শাসন করেছে, এটা কি আমরা মেনে নিতে পারে? মেনে নিলে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি অবমাননা করা হবে।’

সরকারের বিরুদ্ধে সংবিধান অমান্যের অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সরকার সংবিধান অমান্য করেছে। আমি মাঝে মাঝে ভাবি, আমি কীভাবে সংবিধান অমান্য করার বিষয়টি সহ্য করেছি। সরকার সংবিধানের কথা বললে আমার হাসি পায়। এই সরকারের ক্ষমতায় থাকাই অসাংবিধানিক। দিনে-রাতে ও সন্ধ্যায় নিজেরা সংবিধান লঙ্ঘন করছে। নামকাওয়াস্তে নির্বাচন করে তোমরা কাকে সংবিধান দেখাচ্ছ।’

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য (এমপি) হয়েছেন তাদের কে নির্বাচিত করেছে? কেউ ভোট দেয়নি। তথাকথিত এমপিরা দলের মনোনীত হয়ে এমপি হয়ে গেছেন।

ড. কামাল বলেন, একবার নির্বাচন বয়কট করে ভুগতে হয়েছে। ওরা যত ১০ নম্বরিই করুক, হাজারে হাজারে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে। প্রতি ঘরে ঘরে গিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে। সত্তরের নির্বাচনে এ কাজটি আমরা করেছি। ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে ৬ দফার দাবি বুঝিয়েছি। এবারো যেতে হবে।

আমাদের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। দেশকে রক্ষা করতে হলে সংঘবদ্ধ হতে হবে। যতই গুণ্ডাপাণ্ডা আসুক, সংঘবদ্ধ হলে তারা দুর্বল হয়ে যাবে। যারা তরুণ আছেন তারা সংঘবদ্ধ হোন। দুই কোটি তরুণ ভোটার সংঘবদ্ধ হলে জালিয়াতি করে টিকতে পারবে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads