• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
ইভিএম ব্যবহার ‘রাষ্ট্রীয় অপরাধ’

রাজধানীর লেকশোর হোটেলে জাতীয় ঐক্যফন্টের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ইভিএমকে না বলুন, আপনার ভোটকে সুরক্ষিত করুন’ শীর্ষক সেমিনার

ছবি : বাংলাদেশের খবর

রাজনীতি

৩০ ডিসেম্বর ভোট বিপ্লব হবে : ফখরুল

ইভিএম ব্যবহার ‘রাষ্ট্রীয় অপরাধ’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ নভেম্বর ২০১৮

সংবিধান অনুযায়ী ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা রাষ্ট্রীয় অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। গতকাল এক সেমিনারে তারা বলেছেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যদি ইভিএম ব্যবহার করে, তাহলে রাষ্ট্রীয় অপরাধ করা হবে। এই অপরাধ করলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে মামলা করা হবে। রাষ্ট্রীয় অপরাধ করার দায়ে এক দিন (এই ইসিকে) বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলেও সতর্ক করেছেন ফ্রন্ট নেতারা।

রাজধানীর লেকশোর হোটেলে জাতীয় ঐক্যফন্টের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ইভিএমকে না বলুন, আপনার ভোটকে সুরক্ষিত করুন’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। ফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।

সেমিনারের শুরুতে ইলেকট্রনিক ভোটিং টেস্টিং ডিভাইসে দেখানো হয় কীভাবে ইভিএমের মূল ভোটিং প্রোগামিং পরিবর্তন করা যায়। কীভাবে ভোটের ফল পরিবর্তন করা সম্ভব। কীভাবে সময়ভিত্তিক, সংখ্যানির্ভর ও চূড়ান্ত ফলনির্ভর ভিত্তিক কারচুপি করা সম্ভব- তাও দেখানো হয়।

ইভিএম মেশিন তৈরি করে ভোট কারচুপির পদ্ধতি দেখান প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ফয়সাল আলীম, আশরাফ উদ্দিন বকুল, তানবিরুল হাসান তমাল, মিজানুর রহমান ও তাবিথ আউয়াল প্রমুখ। তারা ইভিএমের অনিয়মের প্রমাণস্বরূপ দেখান, বর্তমান পদ্ধতিতে ভোটারের আঙুলের ছাপ না মিললে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের সাহায্য নিয়ে ভোট প্রদান করা সম্ভব। এর ফলে একজনের ভোট আরেকজনের দেওয়ার সুযোগ স্পষ্ট হয়। ইভিএমে কোনো পেপার টেন নেই। ফলে ভোট পুনরায় গণনার সুযোগ নেই। সব ইভিএম মেশিন থেকে সংগৃহীত ভোটের চূড়ান্ত গণনা প্রক্রিয়াটি স্পষ্ট ও স্বচ্ছ নয়। প্রিসাইডিং অফিসার কর্তৃক চূড়ান্ত ফল ঘোষণার সময় পোলিং এজেন্ট থাকছে না এবং পোলিং এজেন্টকে চূড়ান্ত ফলের সার্টিফাইড কপি দেওয়া হচ্ছে না। তাছাড়া গোপনীয়ভাবে ওয়্যারলেস ডিভাইস সংযুক্ত করার মাধ্যমে দূরবর্তী অবস্থান থেকেই ভোটের ফল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেমিনারে বলেন, বিএনপি নির্বাচনে যাবে। কিন্তু সেই নির্বাচনকে অবশ্যই জনগণের রায়ে পরিণত করতে হবে। জনগণ ভোটের লড়াই করবে, ভোটের যুদ্ধে লড়বে। ৩০ ডিসেম্বর দেশে ভোট বিপ্লব হবে।

ইসির সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, বর্তমান ইসি সরকারের আজ্ঞাবহ। জনগণের কোনো কথাই তাদের কানে যাচ্ছে না। রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া দল আওয়ামী লীগ নানা কৌশল করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। যখনই কোনো সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, তখনই এ ধরনের কলাকৌশল গ্রহণ করা হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আবারো সব অপশক্তি অবলম্বন করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। গত ১০ বছর ধরে এই সরকার দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। হাজার হাজার নেতাকর্মী আজ কারাগারে। বিএনপি যখন নির্বাচনে অংশ নিতে চাইছে তখনো এসব নেতা কারাগারে আছেন। পদে পদে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, সংবিধান সংশোধন ছাড়া ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না। জনগণের কাছে ইভিএমের কোনো স্বচ্ছতা নেই। সেমিনারে দেখানো হয়েছে, কীভাবে ‘রাজ্জাকের ভোট খালেকে’র নামে চলে যাবে। ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে ইসির সুস্পষ্ট ধারণা নেই। আগে ইসি ইভিএম চালানো শিখুক, পরে মানুষকে শেখাক।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যারা উড়ে এসে চাপ দিয়ে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করতে বাধ্য করেছে, তারা বলেছে এবার আর প্রহসনের নির্বাচন মানবে না। ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads