• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
রাজনীতিই এখন বড় ব্যবসা : দেবপ্রিয়

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

রাজনীতিই এখন বড় ব্যবসা : দেবপ্রিয়

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ নভেম্বর ২০১৮

‘ব্যবসায়ীরা নিজের সম্পদের সুরক্ষায় রাজনীতিতে আসার প্রয়োজন বোধ করছে। আবার রাজনীতিবিদরাও তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করে সম্পদ বাড়াতে ব্যবসা করছেন। সব মিলে বাংলাদেশে রাজনীতিই এখন সবচেয়ে বড় ব্যবসার জায়গা হয়ে উঠেছে।’ গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ’র (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘দ্য লিস্ট ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রিজ রিপোর্ট-২০১৮’র প্রকাশনা উপলক্ষে গতকাল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

নির্বাচনে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর উপস্থিতি যথেষ্ট দৃশ্যমান-এ প্রসঙ্গ তুলে দেবপ্রিয় বলেন, আসন্ন নির্বাচনে রাজনীতিবিদদের চেয়েও ব্যবসায়ী গোষ্ঠীরই তুলনামূলকভাবে বেশি দৃশ্যমান উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। কারণ যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষেত্রে পেয়েছেন, সেটা একমাত্র রাষ্ট্রীয় আনুকূল্য দ্বারাই সুরক্ষা করা সম্ভব। এ জন্য ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এখন প্রয়োজন বোধ করছেন রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার।

তিনি বলেন, কর অবকাশ থেকে শুরু করে কোনো একটি লাইসেন্স বা নতুন একটি ব্যাংকের কথা বলেন, এগুলো বিশেষভাবে আনুকূল্যের ভিত্তিতে হয়েছে। সে জন্য তারা এখন রাজনীতির মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে এসবের সুরক্ষা দিতে চান।

অন্যদিকে রাজনীতিবিদরা ব্যবসায়ী হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় বলেন, রাজনীতিবিদরাও এখন অনেক বেশি ব্যবসার দিকে যুক্ত হচ্ছেন। এতে তারা ব্যবসায় সমর্থন জোগাতে পারছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি এমন অবস্থায় গেছে যে, কে রাজনীতিবিদ আর কে ব্যবসায়ী তা বুঝে উঠতে কষ্ট হচ্ছে। তাদের সামনে দৃশ্যমান হচ্ছে বাংলাদেশে এখন রাজনীতি সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক উদ্যোগ।

এ সময় দেবপ্রিয় নির্বাচনী হলফনামায় দেওয়া প্রার্থীদের সম্পদের তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে ঋণখেলাপি ও কর ফাঁকিবাজদের তথ্যও জনগণের সামনে তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ।

তিনি বলেন, নির্বাচনের পর যারা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন, তখনই তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ ঘোষণা দিয়ে নিবন্ধন করা প্রয়োজন। যেখানে ওই এমপিকে বলতে হবে, এই খাতে আমার ব্যবসায়িক স্বার্থ আছে, বিনিয়োগ আছে, আমার পরিবার এটার সঙ্গে যুক্ত। এই স্বচ্ছতা যদি সংসদের ভেতরে না আসে তবে সেটা সমস্যার কারণ হবে।

এ অর্থনীতিবিদ বলেন, ব্যবসায়ীদের নিজেদের সংগঠনেও প্রতিযোগিতাপূর্ণ অর্থনীতিতে সুশাসন থাকা দরকার। সেজন্যও প্রতিযোগিতাপূর্ণ রাজনীতি দরকার। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নত দেশে রূপান্তরের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের বড় ভূমিকা থাকা উচিত। এক্ষেত্রে  উদ্যোক্তারা প্রস্তুত কি না, তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন তিনি।

সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে অর্থনীতির কাঠামোগত রূপান্তরের দিক সম্পর্কে সুস্পষ্ট প্রতিফলন থাকা উচিত। আমাদের উদ্যোক্তা রাষ্ট্রে যেতে হবে। উদ্যোক্তা শ্রেণী সৃষ্টি করতে চাইলে সরকারের নীতিমালার সাহায্য লাগবে। নতুন উদ্যোক্তাদের লাইফ সাইকেল সাপোর্ট দিতে হবে। আগামী দিনে দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের বড় বাজার হবে। সেভাবে উদ্যোক্তা গড়ে তুলতে হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads