• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
শরিকদের বিরোধী দলে থাকতে প্রস্তাব দেবে আ.লীগ

সংগৃহীত ছবি

রাজনীতি

শরিকদের বিরোধী দলে থাকতে প্রস্তাব দেবে আ.লীগ

  • হাসান শান্তনু
  • প্রকাশিত ০৯ জানুয়ারি ২০১৯

মহাজোট ও ১৪ দলের শরিক দলগুলোকে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকার প্রস্তাব দেওয়ার কথা ভাবছে আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন দেশের সংসদে বিরোধী দলগুলো সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করে যে ভূমিকা পালন করে থাকে, তেমন বিরোধী দলের ভূমিকায় শরিক দলগুলোকে দেখতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি। সেজন্যই নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় শরিক দলের কোনো নেতাকে রাখা হয়নি। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের সূত্র বাংলাদেশের খবরকে এসব তথ্য জানায়।

সূত্র মতে, মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি (জাপা) একাদশ সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকছে বলে লিখিত আকারেও সংসদকে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অন্যদলগুলোরও সংসদে প্রকৃত বিরোধীদলের ভূমিকা রাখা, না রাখার বিষয়ে আগ্রহ জানতে ১৪ দলসহ বাকিদের সঙ্গে শিগগিরই এ বিষয়ে আলোচনায় বসছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব।

সূত্র আরো জানায়, মহাজোট গঠিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দুইবারের মন্ত্রিসভায় জোটের দলের নেতাদেরকে রাখা হয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নিলেও তাদের কেউ মন্ত্রিসভায় নেই। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট মাত্র সাতটি আসন নিয়ে বিরোধী দলে বসতে পারছে না কী না, এ নিয়ে নানা তর্ক আছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে।  অন্যদিকে মহাজোট ও ১৪ দলের শরিক দলগুলোর মিলিয়ে সংসদ সদস্য আছেন ৩১ জন। ঐক্যফ্রন্টের তুলনায় তাদের সংসদ সদস্যের সংখ্যা চার গুণের বেশি। রাজনৈতিক মিত্র ও সমমনা হওয়ায়  এরা  সংদে বিরোধীদল হতে পারে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।  মহাজোট ও ১৪ দলের শরিক দলগুলোর সংসদ সদস্যরা ইতোমধ্যে শপথ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৪ দলের সংসদ সদস্য সাতজন (ওয়াকার্স পাটির্র তিনজন, জাসদ-ইনুর দুজন, তরীকত ফেডারেশনের একজন, জেপি-মঞ্জুর একজন)। মহাজোটের শরিক জাপা ও বিকল্পধারার মিলিয়ে আছেন ২৪ জন (জাপার ২২, বিকল্পধারার দুজন)।

দশম সংসদে জাপা একসঙ্গে সরকারে থাকা ও বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করায় অনেক সময় সমালোচনার মুখে পড়তে হয় দলটিকে। এবারও দলটির অনেকে সরকারে থাকতে চাইলেও দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শুধু বিরোধী দলের থাকার ঘোষণা নির্বাচনের পরপরই দেন। তিনি নিজে বিরোধীদলীয় নেতা হবেন বলে সংসদের স্পিকারকে লিখিতভাবে জানান। জাপার এ অবস্থান ১৪ দলের কোনো কোনো নেতার পছন্দ হয়েছে বলে সূত্র জানায়। তারাও বিরোধীদলে থাকতে আগ্রহী। বিরোধী দলে থাকলে ১৪ দলের শরিক প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলো নিজ দলের সাংগঠনিক অবস্থার দিকে আরো বেশি নজর দিতে পারবে বলে তারা মনে করেন। ১৪ দলের শরিক ওয়াকার্স পাটির্র সভাপতি ও সদ্য সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, সবার আশা ছিল, মন্ত্রিসভায় শরিকদের থাকাটাই স্বাভাবিক। নিশ্চয়ই এর ব্যাখ্যা শরিকদের পরে জানানো হবে।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল মঙ্গলবার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘নতুন মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে আওয়ামী লীগের মহাজোটের কোনো শরিকদলের সঙ্গে টানাপোড়েন নেই। মন্ত্রিসভার পুনর্গঠন রিসাফল হবে, রদবদল হবে। জোট করার অর্থ এই নয় যে, আমরা শর্ত দিয়েছি যে তাদের মন্ত্রী করতেই হবে। ১৪ দল আমাদের দুঃসময়ের শরিক। তারা অতীতে ছিলেন, ভবিষ্যতে থাকবেন না সে কথা তো আমরা বলতে পারছি না।’

বিগত সরকারগুলোয় প্রতিবারই সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করলেও এবার শুধু আওয়ামী লীগের নেতাদের সরকার পরিচালনায় রাখা হয়েছে। তবু নতুন মন্ত্রিপরিষদে ঠাঁই পাওয়ার বিষয়ে আশা হারাচ্ছেন না শরিক দলের কেউ কেউ। তারা মনে করেন, বছর খানেকের মধ্যে আবারও মন্ত্রিপরিষদে পরিবতন ও সংযোজন হতে পারে। তখন ১৪ দল থেকে মন্ত্রিসভায় অর্ন্তভুক্ত করা হতে পারে।

সূত্র জানায়, মহাজোটের আরেক শরিক বিকল্পধারার সঙ্গেও সংসদে বিরোধী দলে থাকার বিষয়ে আলোচনা করবে আওয়ামী লীগ। তবে বিকল্পধারা সরকারে থাকার পক্ষে আগ্রহ ব্যক্ত করেছে। দলটির সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সরকারের সহায়তা নিয়ে নির্বাচিত হয়ে সংসদে বিরোধীদলে যাওয়া ঠিক নয়। এটা নৈতিকভাবে ভুল।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads