• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
‘সংলাপে বসবেন প্রধানমন্ত্রী’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

রাজনীতির এদিক-সেদিক

‘সংলাপে বসবেন প্রধানমন্ত্রী’

  • হাসান শান্তনু
  • প্রকাশিত ১৪ জানুয়ারি ২০১৯

নির্বাচনোত্তর সংলাপে বসতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দলের সংলাপ হয়েছিল, তাদের আবার সংলাপের আমন্ত্রণ জানানো হবে। দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল রোববার ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক যৌথসভার আগে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল ‘প্রত্যাখ্যান’ করে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন আবারো সংলাপের দাবি জানান। তার এ দাবিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের কেউ কেউ ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করেন। তবে গত শনিবার, ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের যৌথসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের দলগুলোর সঙ্গে আবারো সংলাপে বসার কথা জানান। প্র্রধানমন্ত্রী দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে নিজের দলনেতাদের অবহিত করেন। গতকাল ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট মাত্র আটটি আসনে জয়ী হয়। ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ এনে ফ্রন্ট নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে। ফ্রন্টের জয়ী প্রার্থীরা সংসদ সদস্য হিসেবে এখনো পর্যন্ত শপথ নেননি। আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনে ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির যোগ দেওয়া তাই অনিশ্চিত বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

মাত্র আটটি আসনে জয়ী হলেও ঐক্যফ্রন্টকে সংসদে যোগ দেওয়ার আহ্বান ইতোমধ্যে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আবার সংলাপে বসার সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। সংলাপ থেকে রাজনীতিতে কোনো ইতিবাচক দিকের সূচনা হবে ও আলোচনায় সমাধান খুঁজে পাওয়া পাবে-এমন প্রত্যাশাও তাদের।

গত সংসদ নির্বাচনের আগে বিরোধীপক্ষের সঙ্গে সংলাপে বসার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন আওয়ামী লীগের কয়েক নেতা। তারা আপত্তি জানিয়ে এলেও শেষ সময়ে বা নির্বাচনের আগে সবাইকে চমকে দিয়ে সংলাপের সিদ্ধান্ত নেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। আয়োজন করেন সংলাপের। বিরোধী দলগুলোর আহ্বানে প্রধানমন্ত্রী সাড়া দিলে গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে গণভবনে ধারাবাহিক সংলাপের আয়োজন হয়।

সংলাপে হবে গণভবনে :  ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব রাজনৈতিক দল গণভবনে অনুষ্ঠিত সংলাপে অংশ নিয়েছিল, সেসব দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে গণভবনে সংলাপে অংশ নিতে পারবে।’

গতকাল রোববার সকালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে ঢাকাসহ রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলোর দলীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত যৌথসভায় দেওয়া সূচনা বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। সংলাপের সময় ও তারিখ খুব শিগগিরই জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপিসহ দেশের সব রাজনৈতিক দল অংশ নেবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে একসঙ্গে গণভবনে আমন্ত্রণ জানানো হবে। ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্ট, ১৪ দল, জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য যেসব দল আছে সবাইকে চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী উপজেলা নির্বাচনের জন্য সব দলকে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। এ নির্বাচনে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টসহ অন্যান্য দল আসবে বলে আমরা আশা করি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত রয়েছে, সে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করে ড. কামাল হোসেন ভুল করেছেন। এ স্বীকারোক্তি তিনি যদি দেন, তাহলে জাতি খুশি হবে।

সদ্য শেষ হওয়া একাদশ জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করায় আগামী ১৯ জানুয়ারি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। এ মহাসমাবেশের প্রস্তুতি নিতে গতকালের যৌথসভার আহ্বান করা হয়। এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমরা বিজয় উদযাপন করতে চাই। মহাসমাবেশে বিশাল উপস্থিতি থাকবে বলে আমরা আশা করছি।

সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মেসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও তথ্য গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ অন্য কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এতে ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর দলীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধিরা অংশ নেন। যৌথসভায় সভাপতিত্ব করেন ওবায়দুল কাদের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads