• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
এরশাদকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে আজ

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

শারীরিক অবস্থার অবনতি

এরশাদকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে আজ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২০ জানুয়ারি ২০১৯

সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ সিঙ্গাপুরে পাঠানো হচ্ছে। দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি বিমানে (এসকিউ-৪৪৯) তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন। সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তার চিকিৎসা করানো হবে। এর আগে গতকাল শনিবার দুপুরে টানা এক সপ্তাহ পর ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায় নেওয়া হয় এরশাদকে। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। অসুস্থতার কারণে নির্বাচনের আগে টানা ১৬ দিন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়ে ২৬ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে নির্বাচনে ভোট দিতে রংপুর যেতে পারেননি।

এদিকে গতকাল বিকালে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি দেলোয়ার জালালী জানান, চিকিৎসার জন্য স্যার (এইচ এম এরশাদ) সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসাপাতালে উদ্দেশে আজ দুপুরে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন। তিনি বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিঙ্গাপুরে যাবেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) খালেদ আখতার, এইচএম এরশাদের ছোট ভাই হুসেইন মোর্শেদ এবং হুসেইন মোর্শেদের স্ত্রী রুখসানা খান মোর্শেদ।

দলীয় এবং পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সাবেক রাষ্ট্রপতি  জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বেশ কয়েক মাস ধরে শারীরিক অসুস্থ। বয়সের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন এরশাদ। বিশেষ করে, তার রক্তে কখনো সোডিয়াম কমে যায়, কখনো হিমোগ্লোবিন কমে যায়। এজন্য কিছুদিন পরপরই হাসপাতালে গিয়ে তাকে রক্ত নিতে হয়। মাসখানেক আগে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ ছাড়া সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে রুটিন চেকআপ করান এরশাদ। তার দুটো ভাল্বেই ছিদ্র রয়েছে। চিকিৎসকরা তাকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে বলেছেন। অসুস্থতার কারণে গত ১০ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। টানা ১৬ দিন পর সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে ২৬ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন তিনি। কিন্তু শরীর দুর্বলতার কারণে ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিজের ভোট দিতে রংপুর যেতে পারেননি তিনি। সেই সময় তিনি সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ৩ জানুয়ারি দলের ২১ সংসদ সদস্য শপথ নিলেও তিনি সেদিন শপথ নিতে যেতে পারেনি। এরপর তিনি হাসপাতাল থেকে হুইল চেয়ার করে ৬ জানুয়ারি শপথ নেন। এরপর পুনরায় হাসপাতালে চলে যান। এরপর বাসায় ফিরে গেলেও গত শনিবার থেকে তিনি সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল শনিবার দুপুরে বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কে ফেরেন।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির দফতর সম্পাদক সুলতান মাহমুদ জানান, স্যারের শারীরিক অবস্থা ভালো না। স্যারের রক্তে হিমোগ্লোবিন সমস্যা রয়েছে, লিভারের দুর্বলতাসহ নানা সমস্যায়ও ভুগছেন। মাঝখানে তার অবস্থা অনেক খারাপ ছিল। শরীরের অবস্থা এমন ছিল যে, বিমানে নেওয়াটাও স্বাভাবিক ছিল না। এখন শরীর অবশ। তা কিছুটা উন্নতি হওয়ায় আজ তাকে সিঙ্গাপুর পাঠানো হচ্ছে। তিনি বলেন, উঠা-বসায় কিছুটা কষ্ট হলেও স্যার হুইল চেয়ারে বসে চলাফেরা করতে পারছেন।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আজম খান বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শারীরিক অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। চার দিন পরপর তাকে রক্ত দিতে হচ্ছে। তার শরীরে রক্ত উৎপাদন কমে গেছে। তাই চিকিৎসার জন্য আবারো তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, আগামী ৩০ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হবে। প্রথম অধিবেশনে এরশাদের যোগদানের সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করছেন দলটির নেতারা। তারা বলেন, স্যারের বর্তমান শারীরিক অবস্থা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে খারাপ। এ অবস্থায় সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা সহসা তাকে ছাড়বে কি না তা বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি এবং চিকিৎসা শেষে দ্রুত দেশে ফিরে আসবেন আশা করছি।

অপরদিকে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অবর্তমানে দলটির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। গত শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কথা জানানো হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads