• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
প্রাণের ঢাকা গড়তে চান আতিকুল

‘আমি কেন মেয়র হতে চাই’ শীর্ষক সংলাপে গতকাল বক্তব্য দেন আতিকুল ইসলাম ও প্রেস ক্লাব নেতারা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

রাজনীতি

প্রাণের ঢাকা গড়তে চান আতিকুল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম— সুন্দর, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে চান। আতিকুল ইসলাম বলেছেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে প্রাণের ঢাকা গড়তেই মেয়র হতে চাই। হারিয়ে যাওয়া মাঠ দখলমুক্ত করতে চাই। হকারদের স্থায়ী পুনর্বাসন করতে চাই। নগরের সমস্যা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে সমস্যা চিহ্নিত করছি। আবর্জনা যাতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ব্যবস্থাপনা করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, তা ভাবা হচ্ছে। এসব বিষয়ে পরিকল্পিতভাবে কাজ করতে নগর নিয়ে লেখা বইপত্র সংগ্রহ করে বইগুলো পড়তে শুরু করেছি। অন্য সবার মতো একজন মেয়র প্রার্থী হিসেবে আমারও চাওয়া- সুন্দরভাবে শহরটাকে আধুনিক বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তোলা।

জাতীয় প্রেস ক্লাব আয়োজিত ‘আমি কেন মেয়র হতে চাই’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া সিনিয়র সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে এবং কোষাধ্যক্ষ শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক ছিলেন সমকালের সহযোগী সম্পাদক অজয় দাশগুপ্ত, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির বার্তা প্রধান খালেদ মহিউদ্দিন, দেশ টিভির নির্বাহী সম্পাদক সুকান্তগুপ্ত অলক, এটিএন নিউজের এডিটর প্রভাষ আমিন, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন, চ্যানেল ২৪-এর নির্বাহী পরিচালক রাহুল রাহা, ডিবিসি নিউজের এডিটর প্রণব সাহা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি ওমর ফারুক ও সহসভাপতি আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শাহেদ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্যে মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের জন্য শুভকামনা জানিয়ে শাহেদ চৌধুরী যানজটমুক্ত ঢাকা শহর গড়তে তার প্রতি আহ্বান জানান।

আতিকুল ইসলামের উদ্দেশে প্যানেল আলোচক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, মেয়র হিসেবে আপনি কী চান না? অথবা জানতে চাই কেন মেয়র হতে চান না?

উত্তরে আতিকুল ইসলাম বলেন, নগর কেন্দ্রিক উন্নতি যেমন হচ্ছে তেমনি বৈষম্য বাড়ছে। যা হচ্ছে তার অনেক কিছুই প্ল্যান ছাড়া হচ্ছে। আমি আপনাদের ভালোবাসায় মেয়র নির্বাচিত হলে, মেয়র হিসেবে আকাঙ্ক্ষা থাকবে- একটি সুন্দর, যানজট-জলজটমুক্ত আধুনিক ঢাকা শহর গড়ার। আমরা নিজেরাই অসচেতনভাবে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে শহরটা নোংরা করি, এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। মাঠগুলোর সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করব। ফুটপাতের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

সোহরাব হাসান মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের কাছে জানতে চান, ৫৪টি সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে সব মেয়রই নগর সরকার চায়। এ বিষয়ে দল যদি বিরোধিতা করে, তবুও নগর সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন কি না?

উত্তরে মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে কোনো ম্যাজিক নেই। সকলের ভালোবাসা নিয়েই মেয়র হতে চাই। আমি নির্বাচন পছন্দ করি, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আমি আগেও প্রস্তুত ছিলাম এখনো আছি। এখন সময় এসেছে ৫৪টি প্রতিষ্ঠান এক ছাতার নিচে এনে কাজ করার। যদি নির্বাচিত হই, তাহলে দায়িত্ব গ্রহণের পরই বর্ষাকাল শুরু হবে। তাই প্রথম থেকেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।

সুকান্ত গুপ্ত অলক প্রশ্ন করেন, আনিসুল হকের পরিকল্পনা ছাড়া আপনার নিজস্ব কোনো পরিকল্পনা আছে কি না? আপনি টেকসই হকার উচ্ছেদের কথা বলেছেন। হকারদের উচ্ছেদ এবং পুনর্বাসন করবেন, এর জায়গা কোথায়?

উত্তরে আতিকুল ইসলাম বলেন, নগরের উন্নয়নে যখন নানান প্ল্যান করি দেখি সবই প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের পরিকল্পনার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। তাই বারবার আনিসুল হকের কথা সামনে চলে আসে। ঢাকার শহরের খেলার মাঠ নিয়ে আমরা ভালো কিছু পরিকল্পনা করতে পারি। আমাদের যে মাঠগুলো আছে সেখানে মাটির নিচে আন্ডারগ্রাউন্ডে হকার পুনর্বাসনের ব্যবস্থার সঙ্গে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এ ছাড়া হকারদের এলাকাভিত্তিক কার্ড করে দিয়ে সপ্তাহে দুদিন করে অন্যান্য দেশের মতো বসানোর ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

খালেদ মহিউদ্দিন মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, কখন মনে হলো আপনি মেয়র হবেন? আপনি তো আওয়ামী লীগের সক্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তি নয়, এরপরও কীভাবে প্রধানমন্ত্রীকে কনভেন্স করে মেয়র প্রার্থী হলেন?

উত্তরে আতিকুল ইসলাম বলেন, আপনারা জানেন, আমি বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ছিলাম। রানা প্লাজা মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সময় ওই কঠিন মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ নিয়েছি পোশাক খাতকে টিকিয়ে রাখতে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সে সময় বারবার কথা হয়েছে। এটাও সত্যি, আমার সবকিছুই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হয়েছে। প্রথমবার রিট খারিজ হওয়ায় আমি কিছুটা সময় পেয়েছি, অনেক এলাকায় পরিদর্শন করেছি সমস্যা চিহ্নিত করার সুযোগ পেয়েছি। সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনা করেছি। নিশ্চিত করেই বলতে পারি আমি কোনো ম্যাজিক জানি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি দুইবার ইন্টারভিউ দিয়েছি। তিনি আমাকে যোগ্য প্রার্থী মনে করায় মনোনয়ন দিয়েছেন।

এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুনের এক প্রশ্নের উত্তরে আতিকুল ইসলাম বলেন, মশক নিধন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কাজ করার চেষ্টা করব সুন্দর নগরী গড়ে তোলার। এজন্য অবশ্যই সবার সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ জরুরি। তবে সব সমস্যার সমাধান করতে খেলার মাঠ পুনরুদ্ধার জরুরি।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, ৫৪টি সংস্থাকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করা অনেক কঠিন কাজ। মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম চ্যালেঞ্জের যে ঘোড়ার পিঠে চড়েছেন সেখানে চলা আসলেই কঠিন। তবু তিনি যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন আশা করি তিনি চ্যালেঞ্জে জয়ী হবেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads