• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
জাপার জনসমর্থন তলানিতে

ছবি : সংগৃহীত

রাজনীতি

জাপার জনসমর্থন তলানিতে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ মার্চ ২০১৯

জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির জনসর্মথন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপেই তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রথম ধাপের ৭৮ উপজেলার একটিতেও দলটির প্রার্থীরা জয়ী হতে পারেননি। এক ডজন উপজেলায় দলটির প্রার্থীদের জামানতও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এর জন্য তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করেছেন মাঠপর্যায়ের নেতারা। এছাড়া দলটির সাংগঠনিক অবস্থাও খুবই নাজুক। জাতীয় পার্টির একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, জাতীয় পার্টির মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন না। তৃণমূলে দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে তৎপরও নেই। ফলে দলটির কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। তাই প্রথম ধাপে ৭৮ উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা একটিতেও জয়লাভ করতে পারেননি। নির্বাচনে তাদের জামানত পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এমনকি জাতীয় পার্টির দুর্গ বলে খ্যাত বৃহত্তর রংপুরেও উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।

দলটির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচনে কর্মীরা ছিলেন চুপচাপ। কেন্দ্রীয় নেতারাও নির্বাচনের বিষয়ে কোনো খোঁজখবর নেননি। ফলে প্রথম ধাপের ৭৮টি উপজেলার নির্বাচনে ১৭ জন প্রার্থীই তাদের জামানত হারিয়েছেন। এমনকি এ তালিকায় রয়েছেন লালমনিরহাট থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত জিএম কাদেরের এলাকার (লালমনিরহাট সদর উপজেলা) জাতীয় পার্টির প্রার্থী জাহিদ হোসেন ডব্লিউ।

জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবির অনেক কারণ রয়েছে। একদিকে যেমন যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি, অন্যদিকে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের জন্যও তৃণমূল নেতাকর্মীরা তৎপর হননি ভোটের মাঠে।

দলের কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, বৃহত্তর রংপুর ও বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই দলত্যাগের চিন্তাভাবনা করছেন। বিষয়টি জেনে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দল টিকিয়ে রাখতে কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের দলত্যাগ না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

দলীয় সূত্র জানায়, উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থীদের এই করুণ দশা হতাশ করেছে চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির এমন ভরাডুবি তিনি মেনে নিতে পারেননি। এই ভরাডুবির জন্য দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম না থাকা ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাব রয়েছে বলেও তাদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এরশাদ। এ অবস্থায় পার্টির কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভা এবং কাউন্সিল করে দলের মহাসচিব পদে আবারো পরিবর্তন করবেন এরশাদ। এরই মধ্যে দলটির সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অনেকটা ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তবে রুহুল আমিন দায়িত্ব নিতে রাজি নন বলে চেয়ারম্যানকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

সম্প্রতি এরশাদ তার বাসভবনে বসে রংপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ-আলোচনা করেছেন। এ সময় তিনি জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত করার জন্য তাদের আহ্বান জানান। কেউ যেন দল ছেড়ে না যায়, সেদিকে নজর রাখারও অনুরোধ করেছেন তিনি।

জাতীয় পার্টির একজন ভাইস চেয়ারম্যান নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা ভালো যাচ্ছে বলে আমার মনে হচ্ছে না। জাতীয় পার্টি ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। বর্তমানে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক শক্তি ও জনসমর্থন প্রায় তলানির কোটায়।

দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম জানান, জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা কেমন, তা বলতে পারব না। পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রমে আমরা জড়িত হই না। দলের প্রেসিডিয়াম বৈঠক হচ্ছে না, এতটুকু জানি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads