• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
জাপায় আপাত স্বস্তি

ছবি : সংগৃহীত

রাজনীতি

জাপায় আপাত স্বস্তি

  • আফজাল বারী
  • প্রকাশিত ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জাপা ছিল উত্তপ্ত। চাওয়া-পাওয়ার দ্বন্দ্বে ছিল টানটান উত্তেজনাও। আবারো ভাঙনের ক্ষণ গুনছিলেন দলটির নেতাকর্মীরা। এ অবস্থায় বিশেষ স্থান থেকে আসা নির্দেশে বড় ধরনের ছাড় দিয়েছেন পার্টির উত্তরাধিকারী দেবর-ভাবি। গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) ও রওশন এরশাদ। আর উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বরের ঘরে মাসি আর কনের ঘরে পিসির ভূমিকায় ছিলেন পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা। ফলে এখন শীতল হাওয়া বইছে দলটিতে। তবে কেউ কেউ বলছেন, এই অবস্থা আপাত। হতাশায় কাদের অনুসারীরা। জাপায় স্বার্থের দ্বন্দ্বে উত্তাপ ছড়ানো ক্ষণিকের ব্যাপার— এটাই দলটির বিউটি।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, জাপার চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অসুস্থতাকে ঘিরে নানামুখী তৎপরতা চলছিল। কারো ছিল পদের লোভ, কারো অর্থের। কেউবা নিয়ন্ত্রণে নিতে চেয়েছিল পুরো দলকেই। বিশেষ করে গত তিন মাস ধরে পার্টিতে টানটান উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি ঘোলাটে আকার ধারণ করে এরশাদের মৃত্যুর পর থেকে। দলটিতে চেয়ারম্যানের চেয়ারটি নিয়ে টানাটানিতে লিপ্ত হন— এরশাদের প্রথম স্ত্রী রওশন এবং ছোট ভাই জি এম কাদের। বিভক্ত হয়ে পড়েন তাদের সমর্থকরাও। দুই নেতাকেই চেয়ারম্যান দাবি করেন তাদের অনুসারীরা। জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার চেয়ারেও বসতে চান দুজনেই। আরেকটু বেশি প্রত্যাশা ছিল রওশন এরশাদের। তার ছেলে রাহগির আল মাহিকে (সাদ এরশাদ) রাজনীতিতে আনার কৌশল প্রয়োগ করেন।

অন্যদিকে বরের ঘরে মাসি আর কনের ঘরে পিসির ভূমিকায় ছিলেন দলটির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা। তিনি দীর্ঘস্থায়ী মহাসচিব রুহুল আমি হাওলাদার হটানো ক্যারিশমাটিক নেতা। বিরাজমান পরিস্থিতিতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে দুই শীর্ষ নেতা রওশন-কাদেরের পাল্টা চিঠি, সংবাদ সম্মেলন এবং হুমকি-ধমকির দৃশ্য অবলোকন করেছেন তিনি।

ধীরে ধীরে তপ্ত আর হঠাৎ শীতল অবস্থার নেপথ্যে কে বা কারা? রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন প্রশ্ন ছিল গত দুদিন ধরে। দলের একাধিক নীতিনির্ধারক বাংলাদেশের খবরকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ যে বিশেষ ব্যক্তি বা কক্ষের নির্দেশনায় চলতেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন এবারও সেই পথ অনুসরণ করেছেন জাপার বর্তমান শীর্ষ দুই নেতা। ফলে দ্রুত দ্বন্দ্ব নিরসন এবং সব কূল রক্ষা হয়েছে নেতাদের। আর দলটি রক্ষা পেয়েছে ভাঙনের কবল থেকে। গত শনিবার রাতে রওশন-কাদেরের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। সমঝোতা বৈঠকে কাদের চেয়ারম্যান, রওশন

সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা এবং তার ছেলে প্রতিশ্রুতি পেলেন মনোনয়নের। এমনটাই চাওয়া ছিল তাদেরও। তবে রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই—প্রবাদটির বাইরে যেতে পারছে না জাতীয় পার্টি। এই দলের একাধিক নেতা মনে করেন, আগামী ৩০ নভেম্বর কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে দলটির নেতৃত্বের।

এদিকে গতকাল রোববার জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা সাংবাদিকদের জানান, রংপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে এরশাদের বড় ছেলে রাহগির আল মাহিকে (সাদ এরশাদ) মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এর আগে জাপার চলমান সংকট নিয়ে শনিবার রাতে দুইপক্ষের সমঝোতা বৈঠকে সাদকে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় দুপুরে এ বিষয়ে ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব রাঙ্গা। একই সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব রাঙ্গা জানান, দলের সব ঝামেলা চুকে গেছে। দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের। বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। আর উপনেতার দায়িত্ব পাচ্ছেন জি এম কাদের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads