ব্যাংক হিসাব তলবের পর এবার যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটসহ যুবলীগের এক নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর যুবলীগ চেয়ারম্যানের বিদেশ যাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
জানা গেছে, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, অবৈধ অস্ত্র, চাঁদাবাজি, জুয়া-ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে চলমান শুদ্ধি অভিযানে যেসব রাজনৈতিক নেতার সংশ্লিষ্টতার বিষয় উঠে আসছে সেগুলো নিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে যুবলীগ চেয়ারম্যানকে আপাতত দেশ না ছাড়ার জন্য বলা হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সব ধরনের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেনের বিবরণী তলব করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। ওই সময় ওমর ফারুকের ব্যাংক হিসাবের সকল তথ্য তিন কার্যদিবসের মধ্যে পাঠাতে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে চিঠিও দেওয়া হয়। এরপর গতকাল রোববার বিদেশ যাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো যুবলীগ চেয়ারম্যানকে।
প্রসঙ্গত, রাজধানীতে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির ঘটনায় এর আগেও কয়েকজন যুবলীগ নেতা ও ব্যবসায়ীর ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে সময় তাদের অনেকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির গত সভায় যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, মাদক ও জুয়া-ক্যাসিনোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। গণভবনে অনুষ্ঠিত ওই সভায় তিনি সকল দুর্নীতি, অপকর্ম ও অনৈতিক বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থানের কথাও জানিয়ে দেন। এরপরই কার্যত নড়েচড়ে বসে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ক্যাসিনো ব্যবসা চালানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
অভিযান শুরুর পর যুবলীগ চেয়ারম্যান প্রশ্ন তোলেন, এতদিন অবৈধভাবে চলা ক্যাসিনো বা জুয়ার বিরুদ্ধে কেন অভিযান চালানো হয়নি? পুলিশ বা র্যাব এতদিন কী করেছে? এসব প্রশ্নের পাশাপাশি তিনি র্যাবের অভিযানকে রাজনীতিবিরোধী ষড়যন্ত্র বলেও অভিযোগ করেছেন। এমন বক্তব্যের পর সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এরপরই নিজের অবস্থান বদল করেন। এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে ওমর ফারুক বলেন, ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে ক্যাসিনো চালানোর পেছনে যুবলীগের অনেকে জড়িত থাকার যে অভিযোগ উঠেছে, সংগঠনের সভাপতি হিসেবে এটি তার ব্যর্থতা বলে তিনি মনে করেন।