• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
আওয়ামী লীগে পাঁচ হাজার অনুপ্রবেশকারী

ছবি : সংগৃহীত

রাজনীতি

আওয়ামী লীগে পাঁচ হাজার অনুপ্রবেশকারী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০২ নভেম্বর ২০১৯

দলকে সুসংগঠিত ও হাইব্রিডমুক্ত করতে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা প্রস্তুত করেছে দলটি। ইতোমধ্যে পাঁচ হাজার অনুপ্রবেশকারীর তালিকা প্রধানমন্ত্রীর হাতে এসেছে। তালিকাটি দলের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপের কাছে পাঠিয়েছেন দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা। এ তালিকা তৃণমূলে পৌঁছানোর জন্য দলের আট বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের হাতে তুলে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা গেছে, টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে দলকে সুসংগঠিত ও হাইব্রিডমুক্ত করতে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা প্রস্তুত করতে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বারবার তাগাদা দিয়েও কাজ হয়নি। পরে বাধ্য হয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও নিজস্ব টিমের তত্ত্বাবধানে দলে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা প্রস্তুত করিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

অনুসন্ধানে প্রায় পাঁচ হাজার ব্যক্তিকে অনুপ্রবেশকারী ও বিতর্কিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত হাজার পৃষ্ঠার দুটি বইয়ে এসব বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা উঠে এসেছে।

গতকাল শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের আট বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের হাতে তালিকার কপি হস্তান্তর করার কথা রয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপের কাছে বই দুটি হস্তান্তর করেন। এ সময় তিনি দলে অনুপ্রবেশকারী ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের এই তালিকা অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং এদের বিরুদ্ধে জোরেশোরে প্রচার চালানোর নির্দেশ দেন।

একটি সূত্র জানিয়েছে, দলের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর সম্প্রতি গণভবনে ছয়জন নেতাকে নিয়ে রুদ্ধধার বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ দেন এসব অনুপ্রবেশকারীকে এখনই দলের পদ-পদবি থেকে বাদ দিতে। একই সঙ্গে আগামীতে যেন অনুপ্রবেশ না ঘটে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে।

জানা গেছে, দীর্ঘ ছয় মাস ধরে কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা ও প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব টিম এই অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা তৈরি করে। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের হাতে তালিকা তুলে দিতে নির্দেশ দেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা জেলায় জেলায় তালিকা পাঠাচ্ছি। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে বিত‌র্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের একটি তালিকা নেত্রী (শেখ হাসিনা) বিভিন্ন সংস্থাকে দিয়ে তৈরি করেছেন। সে তালিকা তিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। বিতর্কিত কেউ যাতে বি‌ভিন্ন পর্যায়ের সম্মেলনে কমিটিতে স্থান করে নিতে না পারে, সেজন্য আমরা সতর্ক রয়েছি। নেতাকর্মীদের সেভাবেই দিকনির্দেশনা দেওয়া আছে।’

জানা যায়, ২০০৮ সালের পর শুরু হয় আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ। এর ধারাবাহিকতায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এর সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। একইভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগদানের হিড়িক পরে। এর অধিকাংশই ছিল বিএনপি-জামায়াত-শিবির ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির লোকজন। অনেক জায়গায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও এমপি-মন্ত্রীর হাত ধরে এই অনুপ্রবেশ ঘটে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads