বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকার বিদেশীদের পদ লেহন করছে। তারা মানুষের স্বার্থে কাজ করছে না। তারা নিজেদের স্বার্থে কাজ করছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা বাংলাদেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলী দিচ্ছে। বিদেশের সাথে সম্পর্ক রাখতে হবে। তার সাথে নিজেদের স্বার্থও ঠিক রাখতে হবে। আমাদের স্বার্থ বাদ দিয়ে অন্যদের স্বার্থ চরিতার্থ করা যাবে না।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আবদুল মঈন খানের মরহুম পিতা ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আবদুল মোমেন খানের ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকি উপলক্ষে আবদুল মোমেন খান স্মৃতি সংসদের উদ্যেগে নরসিংদী সি এন্ড বি রোডের বধুয়া কমিউনিটি সেন্টারে স্মরন সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতের এনআর সি প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন,১৯৭১ সালের পর এই দেশের মানুষ ভারত কেন যাবে। ভারত আমাদের চেয়ে অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত না। বরং ভারতের ১০ লক্ষ মানুষ বাংলাদেশে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ২য় অবস্থানে বাংলাদেশ। তাই স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের কোন নাগরিক ভারতের নাগরিক্ত নেয়নি।
খালেদা জিয়া মুক্ত না হলে গনতন্ত্র মুক্ত হবে না উল্লেখ করে মির্জা ফকরুল আরো বলেন, খালেদা জিয়া গন মানুষের নেতা। তাই এই সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। খালেদা জিয়া কারাগারের বাহিরে থাকলে আওয়ামীলীগ এসব অন্যায় ও লুটপাট করতে পারতো না।
বিএনপিকে মুক্তিযুদ্ধের দল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানাচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকার বানাচ্ছে। তারা যে মুক্তিযুদ্ধের সরকার সরকার করে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ইতো বানিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতার ঘোষক। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলাম, মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা গণতন্ত্রের চেতনা, সে চেতনাকে নিয়ে আমরা লড়াই করছি। সেই বাংলাদেশ এখন নেই।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করলে এদেশে গণতন্ত্র মুক্ত হবে না। কারণ গণতন্ত্র এবং বেগম খালেদা জিয়া অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বেগম জিয়া সেই ব্যক্তি, সেই নেত্রী, যে সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। লড়াই করেছেন।
বর্তমান সরকারকে অবৈধ সরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিজয় অবশ্যই হবে, বাংলাদেশের মানুষ কখনো কোন আন্দোলনে পরাজিত হয়নি। আজকে আমরা ন্যায়ের পথে আছি, সত্যের পক্ষে আছি, বিজয় অবশ্যম্ভাবী। আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে সক্ষম হবো ইনশাল্লাহ। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন দেয়ার জন্য বর্তমান সরকারকে আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় সময় পাবেন না।
মোমেন খান প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আবদুল মোমেন খান একজন প্রতিকৃতি। তিনি শুধু নরসিংদীর জন্য কাজ করেনি। তিনি সারা দেশের জন্য কাজ করে গেছেন। আমাদের সবাইকে তার পথ অনুস্মরন করে এগিয়ে যেতে হবে।
এসময় প্রধান আলোচক জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব বলেন,এই সরকার স্বৈরাচারী সরকার। স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটাতে হলে দেশের মানুষকে সংঙ্গে নিয়ে গণ আন্দোলন তৈরী করতে হবে। আওয়ামীলীগ সরকার বার বার আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। ১৯৭৩ সনে এই নরসিংদীতেই আমার মিছিলে নির্বিচারে গুলি করে ৩ জনকে হত্যা করে। এ ধারা অব্যাহত রয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আবদুল মঈন খানের সভাপতিত্বে স্মরন সভায় বক্তব্য রাখেন জে এস ডি’র সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান রতন ,মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক লে: কর্নেল (অব:) জয়নাল আবেদীন,বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন বকুল,কেন্দ্রীয় সাবেক ছাত্র নেতা ফেরদৌস আহমেদ খোকন, সাবেক ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক আকরাম হোসেন মিন্টু, ছাত্রদলের সধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান উদ্দিন মোল্লা, সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর এলাহী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন ভূইয়া ইরান প্রমূখ।
