• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
মুক্তির সমঝোতায় অগ্রগতি

ফাইল ছবি

রাজনীতি

আজ জামিন শুনানি

মুক্তির সমঝোতায় অগ্রগতি

  • আফজাল বারী
  • প্রকাশিত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে দল ও পরিবারে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভিন্নমত জানালেও খালেদা জিয়ার পরিবারের দাবি তার পরিস্থিতি অবনতিশীল। তাই দ্রুত মুক্তির জন্য দফায় দফায় আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক করছেন তারা। ইতোমধ্যে উচ্চ আদালতে তারা জামিনের আবেদন করেছেন। আজ রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারিত রয়েছে। বিএনপির আশা, অন্তত চিকিৎসার জন্য হলেও আদালতের তরফ থেকে কোনো নির্দেশনা মিলবে। পর্দার আড়ালের আলোচনাও গড়িয়েছে অনেকদূর। অগ্রগতি হয়েছে সমঝোতায়—শোনা যাচ্ছে এমনটাই।

জামিনে মুক্তি না মিললে প্রয়োজনে প্যারোলেই তাকে মুক্ত করে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হবে-এমন প্রস্তুতিও আছে খালেদা জিয়ার পরিবারের তরফ থেকে। এজন্য যেকোনো শর্তেও তাদের দ্বিমত থাকবে না। বিষয়টি নিয়ে পরিবার ও দলীয় বোদ্ধাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তারা। এর আগে গত শুক্রবার কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সঙ্গে হাসপাতালে সাক্ষাৎ করেন তার ছোটভাই শামীম এস্কান্দার।

এদিকে দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা গতকাল শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক করেছেন। নতুন করে আইনি লড়াইসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যে চলমান আলোচনার ইস্যুতে অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল রাত পর্যন্ত আলোচনাও গড়িয়েছে অনেকদূর। পরিবারের বরাত দিয়ে দলের একটি নির্ভরযোগ্য নিশ্চিত করেছে, ইতোমধ্যে খালেদা জিয়ার দুই হাত বাঁকা হয়ে গেছে। নিজ হাতে খেতে পারছেন না। সাক্ষাৎকালে খালেদা জিয়ার চোখের পানি পড়তে দেখেছেন স্বজনরা। যে কোনো প্রক্রিয়ায় হোক তাকে মুক্ত করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পরিবারকে তাগিদ দিয়েছেন তিনি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ছাড়াও দল ও দলের বাইরে দুজনকে ‘সংশ্লিষ্টদের’ সঙ্গে আলোচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের পর সার্বিক বিষয় নিয়ে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনার পর কমিটির তিন সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও ড. আবদুল মঈন খান এবং খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন দলের শুভাকাঙ্ক্ষী একজন চিন্তাশীল ব্যক্তির বাসায় বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠক থেকে লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে স্কাইপিতে আলোচনা করা হয়।

বৈঠকে অংশ নেওয়া একজন এ প্রতিবেদককে জানান, দলীয় প্রধানের মুক্তির প্রয়োজনে সব পথেই হাঁটবে বিএনপি। তবে সামনে রাখা হবে খালেদা জিয়ার পরিবারকেই। 

খালেদা জিয়ার সঙ্গে পাঁচ স্বজনের সাক্ষাৎ

কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) যান তার পরিবারের সদস্যরা। গত শুক্রবার দুপুরে ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারসহ পরিবারের ৫ সদস্য বিএনপি প্রধানকে দেখতে হাসপাতালে প্রবেশ করেন। শামীম এস্কান্দার ছাড়াও ছিলেন তার স্ত্রী কানিজ ফাতিমা, ভাতিজা শাফিন এস্কান্দার ও শাফিনের স্ত্রী অরনী এস্কান্দার, ভাতিজা অভিক এস্কান্দার, ভাগনে শাহরিয়া হক। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গত বুধবার কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) বরাবর আবেদন করেছিলেন শামীম এস্কান্দার।

এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে যান পাঁচ স্বজন, সেজো বোন সেলিমা ইসলাম, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতিমা, তার ছেলে অভিক এস্কান্দার, তারেক রহমানের স্ত্রীর বড় বোন শাহিনা জামান খান বিন্দু ও কোকোর শাশুড়ি ফাতিমা রেজা। প্রায় ঘণ্টাখানেক সেখানে অবস্থানের পর  বেরিয়ে এসে তারা জানান, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তাকে বিদেশ চিকিৎসা করাতে চান।

দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছর দণ্ড নিয়ে কারাবন্দি খালেদা জিয়া। তার কারাবাসের দুই বছর পূর্ণ হয়েছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রায় ১০ মাস ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads