• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

জাকারবার্গই প্রধান থাকতে চান

ধারণার চেয়ে বেশি তথ্য চুরি ফেসবুকের

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৬ এপ্রিল ২০১৮

কয়েক দিন আগেই গ্রাহকের তথ্য চুরি যাওয়া নিয়ে নানা সমালোচনা ও চাপে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। অভিযোগ ওঠে লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা পাঁচ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য চুরি করে এবং তা ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে প্রচারণায় ব্যবহার করে।

তবে সম্প্রতি ফেসবুকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা ৮ কোটি ৭০ লাখ মানুষের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে। ফেসবুকের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মাইক স্ক্রফারের ব্লগে প্রকাশ করার পর নতুন এই তথ্য উঠে আসে।

‘দিস ইজ ইওর ডিজিটাল লাইফ’ নামের একটি কুইজ অ্যাপের মাধ্যমে এই তথ্য ফাঁস সম্ভব হয়েছে। আগের তথ্য অনুসারে এই অ্যাপটি ব্যবহার করেন ২ লাখ ৭০ হাজার জন। তবে মাইক স্ক্রফারের ব্লগে প্রকাশ করা তথ্য মতে, বর্তমানে ৩ লাখেরও বেশি মানুষ এই অ্যাপটি ব্যবহার করছেন।

তার মতে, অ্যাপ ব্যবহারকারীদের প্রায় ৯৭ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী। আর মোট ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে ১ কোটি ৬০ লাখ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের।

ব্রিটিশ ওই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মী ক্রিস্টোফার উইলি গত মাসে ওই ঘটনা ফাঁস করে দিলে বড় ধরনের ধাক্কা খায় ফেসবুক। ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রে মারাত্মক চাপে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। ঘটনার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ক্ষমা চান প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ।

জাকারবার্গ গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমাদের আরো অনেক কিছু করা উচিত ছিল। আমরা সেটা করব।

জাকারবার্গ জানান, তিনি আগে ভাবতেন ফেসবুকের সুবিধা কে কীভাবে ব্যবহার করল, সেই দায় ব্যবহারকারীর ওপরই বর্তাবে। তিনি এখন বুঝতে পারছেন, ফেসবুককেও আরো দায়িত্ব নিতে হবে।

জাকারবার্গ সংবাদ সম্মেলনে জানান, অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধানে নতুন আরেক সমস্যা খুঁজে পেয়েছেন তারা। ফেসবুকের সার্চ বক্সে ই-মেইল ঠিকানা বা ফোন নম্বর দিয়ে কোনো ব্যবহারকারীকে খোঁজার যে ফিচারটি আছে, কিছু লোক তার অপব্যবহার করছে। তাই আপাতত ওই ফিচারটি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ওই সংবাদ সম্মেলনে জাকারবার্গ জানান, ফেসবুকের এই চলতি সঙ্কটের কালে তিনিই সামনে থেকে তার প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেবেন। ফেসবুককে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত তিনি নিজেই সবচেয়ে ভালো ব্যক্তি বলে মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের ভুল হয়েছে সেটা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই। কিন্তু ভুল থেকেই তো আমাদের শিখতে হয়। আমরা শিখি ও শুধরে নেই।

এছাড়া ফেসবুকের ঘটনা নিয়ে অভ্যন্তরীণ অডিট করার কথাও বলেছেন জাকারবার্গ।

বিভিন্ন অ্যাপ ভবিষ্যতে যাতে ফেসবুককে ব্যবহার করে গ্রাহকদের তথ্য সহজে হাতিয়ে নিতে না পারে, সেজন্য সামনের দিনগুলোতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন মার্ক জাকারবার্গ।

মাইক স্ক্রফার ব্লগে ধারণা দিয়েছেন সেই পরিবর্তনগুলো কী কী হতে পারে। প্রথমত, ফোন নম্বর বা ই-মেইল অ্যাড্রেস দিয়ে খোঁজ করে কোনো ব্যক্তিকে যেন খুঁজে না পাওয়া যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে ফেসবুক। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে এর আগে অনেকে তথ্য চুরি করেছে। দ্বিতীয়ত, কোনো অ্যাপের মাধ্যমে কোনো ইভেন্ট পেজের অতিথিদের তালিকা বা ওই পেজের মেসেজ দেখা যাবে না। তৃতীয়ত, মেসেঞ্জারের অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ও ফেসবুক লাইট ব্যবহার করে করা ফোন কল ও মেসেজ হিস্ট্রি এক বছরের বেশি সংরক্ষিত থাকবে না।

এছাড়া ৯ এপ্রিল থেকে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নিউজফিডের ওপরে একটি নোটিশ দেখা যাবে। তারা কী কী অ্যাপ ব্যবহার করেন, সেগুলো পর্যালোচনা করে কী তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে সে বিষয়ে ব্যবহারকারীদের জানাবে ফেসবুক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads