• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

খেলা

পাঁচ সোনা জিতে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

  • স্পোর্টস রিপোর্টার
  • প্রকাশিত ১০ মে ২০১৮

আইএসএসএফ ইন্টারন্যাশনাল আরচারি চ্যাম্পিয়নশিপের গত আসরে স্বাগতিক বাংলাদেশ ছয়টি স্বর্ণপদক জয় করেছিল। এবারের আসরে সম্ভাবনা ছিল গতবারের সফলতাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। স্বাগতিক আর্চাররা সেই কক্ষপথেও ছিলেন। দশটি ইভেন্টের মধ্যে ৯টিতেই ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছিলেন। কিন্তু গতকাল ফাইনাল রাউন্ডে এসে তা আর হয়নি। পাঁচটি স্বর্ণপদক নিয়ে শিরোপা জিতেছে লাল-সবুজ শিবির।

সোনা জয়ের পাল্লা ভারী করতে না পারলেও বিশ্বখ্যাত আরচার ইরাকের আল মাসহাদানি ফাতিমাকে কম্পাউন্ড ব্যক্তিগত ইভেন্টে পরাজিত করে বাংলাদেশের রোকসানা আক্তার সোনা জয় করে উজ্জ্বল করেছেন দেশের মুখ। এবারের আসরে বাংলাদেশ পাঁচটি স্বর্ণপদক, সমানসংখ্যক রৌপ্যপদক ও একটি ব্রোঞ্জপদকসহ ১১টি পদক জয় করে। ইরাকের আরচাররা হয়েছেন রানার্সআপ। তারা একটি স্বর্ণপদক, দুটি রৌপ্যপদক ও একটি ব্রোঞ্জপদক জয় করেছে। এ ছাড়া একটি করে স্বর্ণপদক পেয়েছে তুরস্ক, সৌদি আরব, এস্তোনিয়া ও আজারবাইজান।

মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে গতকাল দিনের প্রথম ইভেন্ট কম্পাউন্ড পুরুষ এককে বাংলাদেশের অসীম কুমার দাস ১৪০-১৩৪ স্কোরের ব্যবধানে স্বদেশী আবুল কাশেম মামুনকে পরাজিত করে প্রথম স্বর্ণপদক জয় করেন। ‘অল বাংলাদেশ’ ফাইনাল হওয়ায় এ ইভেন্টের স্বর্ণপদক আগের দিনই নিশ্চিত হয়েছিল। শুধু দেখার অপেক্ষা ছিল কার গলায় ওঠে স্বর্ণপদক। সেই লড়াইয়ে জয় পেয়েছেন অসীম। স্বর্ণপদক জয় করা এ তীরন্দাজ বলেন, ‘লড়াইটা সহজ ছিল না। আমার প্রতিপক্ষ মামুনও দারুণ শট নিয়েছে। তবে শেষ দিকে আমার নিশানাগুলো বেশ ভালো ছিল।’ কম্পাউন্ড পুরুষ দলগত ইভেন্টের স্বর্ণপদক জয় করেন বাংলাদেশি আরচাররা। দেশের হয়ে অসীম, আবুল কাশেম মামুন ও মিলন মোল্লা ২২৫-২০৫ স্কোরের ব্যবধানে ইরাকের আল দাঘান ইসহাক, ফাইয়াধ আবদুল্লাহ ও মোতির আমির এইচকে হারিয়ে স্বর্ণপদক জয় করেন। কম্পাউন্ড মহিলা দলগতভাবেও বাংলাদেশকে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছেন রোকসানা আক্তার, বন্যা আক্তার ও রিতু আক্তার। মরক্কোর এল আসাদি কাদিয়া, এল ফাইজ সৌদ ও কারদাউদ ফাতিমা জাহরাকে ২১৬-১৫২ স্কোরের ব্যবধানে পরাজিত করেন তারা। রিকার্ভ পুরুষ দলগত ইভেন্টে বাংলাদেশ স্বর্ণপদক লাভ করে ৫-১ সেটে নেপালকে হারিয়ে। বাংলাদেশের হয়ে অংশ নেন রুমান সানা, মোহাম্মদ তামিমুল ইসলাম ও শেখ সজিব।

কম্পাউন্ড নারী এককে না পারলেও মিশ্র দলগতভাবে ফাতিমা ঠিকই লক্ষ্যভেদ করে দেশের হয়ে স্বর্ণপদক জয় করেছেন। এ ইভেন্টে তার সঙ্গী ছিলেন সাখান ওয়ালিদ হামিদ। ১৪৬-১৪৩ স্কোর গড়ে স্বাগতিকদের পরাস্ত করে এ জুটি। বাংলাদেশের হয়ে লড়াইয়ে ছিলেন অসীম কুমার দাস ও রোকসানা আক্তার। রিকার্ভ পুরুষ এককে সৌদি আরবের বিনালী আবদালেলাহ ৭-১ সেট পয়েন্টের ব্যবধানে বাংলাদেশের রুমান সানাকে পরাজিত করেন। রোমান সানাকে নিয়ে এ ইভেন্টে সোনা জয়ের প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে আর পেরে ওঠেননি বাংলাদেশি এ তীরন্দাজ। রিকার্ভ মহিলা এককে এস্তোনিয়ার পারনাট রিনা ৭-১ সেট পয়েন্টের ব্যবধানে তুরস্কের উনসাল বেগুনহানকে হারিয়ে স্বর্ণপদক জয় করেন। রিকার্ভ মিশ্র দলগতভাবে তুরস্কের বেরেকেত বুকার ও উনসাল বেগুনহান ৫-১ সেট পয়েন্টের ব্যবধানে বাংলাদেশের রুমান সানা ও নাসরিন আক্তারকে পরাজিত করেন। এছাড়া রিকার্ভ মহিলা দলগত ইভেন্টে আজারবাইজানের গাসিমোভা অজি, ইবাদোভা সুঘরাগহানিম ও রামাজানোভা ইয়ালাগুল ৫-৪ সেট পয়েন্টের ব্যবধানে স্বাগতিকদের পরাজিত করে স্বর্ণপদক জয় করেছেন। বাংলাদেশের হয়ে লড়েন নাসরিন আক্তার, বিউটি রায় ও নাদিয়া আক্তার শাপলা।

গতকাল কম্পাউন্ড নারী এককের ফাইনালে বাংলাদেশের রোকসানা ১৩৬-১৩৩ পয়েন্টের ব্যবধানে ফাতিমাকে হারান। স্বর্ণপদক জয়ের পর রোকসানা নিজেও আপ্লুত। বলেন, ‘ফাইনাল নিশ্চিতের পর আমি জানিয়ে ছিলাম নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা। যখন তীর নিয়ে বোর্ডের সামনে দাঁড়াই, তখন আমার আত্মবিশ্বাস একটু সময়ের জন্যও হারাইনি। আমার মনে হয়েছিল, আমি পারব। সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই আজ আমি ফাতিমাকে পরাস্ত করে পদক জিতেছি। এ আনন্দ আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads