• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
রাশিয়ার জন্মহার বাড়াবে ফুটবল!

এই ট্রফির রয়েছে উদ্দীপক ক্ষমতা

গিটি ইমেজেস

ফুটবল

রাশিয়ার জন্মহার বাড়াবে ফুটবল!

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২০ জুন ২০১৮

রাশিয়া বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরওে এই আসর সম্পর্কে আগ্রহী থাকবেন দেশটির জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা। এই আসর শেষ হচ্ছে ১৫ই জুলাই। বিশ্বকাপ আয়োজনকারী দেশের শিশু জন্মহারে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তনের দিকে নজর রাখবেন তারা। কারণ, খেলাধূলায় সাফল্যের সাথে জন্মহার বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে বলে বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে গবেষণায় দেখা গেছে।

বিবিসি জানিয়েছে, ১৯৯২ সাল থেকে রাশিয়ার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার পড়তির দিকে। যার অর্থ প্রতিবছর মৃত্যুর সংখ্যা শিশু জন্মের সংখ্যার চেয়ে বেশী। তাই রাশিয়ার জন্য এটি সুখবর হতে পারে।

কয়েকটি গবেষণা অনুযায়ী এমনও ধারণা করা হচ্ছে যে রাশিয়ার জনসংখ্যা ১৪.৩ কোটি থেকে ২০৫০ সালে এসে ১১.১ কোটিতে নেমে আসতে পারে। উচ্চ মৃত্যুহার, নিম্ন জন্মহার ও জীবনযাপনের নিম্নমানের জন্য জনসংখ্যায় হ্রাস ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্ব ব্যাংকের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাশিয়ার জন্মহার প্রতি হাজারে ১৩ জন। যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশের চেয়ে তা বেশী।

তবে ১৯৬০ সালের সাথে তুলনা করলে এই জন্মহার প্রায় অর্ধেক। অধিকাংশ দেশেই জন্মহার পতনের মাত্রা এত বেশী ছিল না।

এই সমস্যা নিয়ে ক্রেমলিনও বেশ চিন্তিত। ২০১৭ সালের নভেম্বরে জন্মহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরণের সংস্কার প্রকল্প চালু করেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর মধ্যে প্রচারপত্র বিলি করা হয় যেখানে অন্যতম প্রধান প্রস্তাব ছিল সেসব পরিবারের সদ্য জন্ম হওয়া শিশুর প্রথম ১৮ মাসের ভরণপোষণ খরচ রাষ্ট্র বহন করবে।

যুক্তরাজ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছিল যে, ১৯৬৬ বিশ্বকাপ জয় ও আয়োজনের কারণে সেখানে জন্মহার বৃদ্ধি পেয়েছিল।

তবে এর পক্ষে তাৎপর্যপূর্ণ প্রমাণ পাওয়া যায় ২০০৭ সালে।

২০০৬ বিশ্বকাপের নয় মাস পর জার্মানির হাসপাতালগুলো থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে জানানো হয় যে, জার্মানির জন্মহার ১৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

জার্মান গণমাধ্যমকে ধাত্রীবিদ্যা বিশেষজ্ঞ রল্ফ ক্লিশ বলেন, ‘সুখের অনুভূতি বিশেষ ধরণের হরমোন নির্গমন ঘটায় এবং গর্ভধারণে সহায়তা করে। অনেক মানুষই বিশ্বকাপের মত ইভেন্টের সময় দারুণ উত্তেজিত থাকেন এবং এই উত্তেজনার বহি:প্রকাশ হয়ে থাকে অন্য কোনো কাজের মাধ্যমে ’

ব্রাজিলের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ২০১৫ সালের মার্চে ব্রাজিলের শিশু জন্মহার পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে আগের বছরের তুলনায় জন্মহার প্রায় ৭ ভাগ বেড়েছে।

জন্মহার বৃদ্ধিতে ফুটবলের ভূমিকা পরিমাপ করতে একটি পুরো টুর্নামেন্টও প্রয়োজন হয় না। ২০১৩ সালে বৃটিশ মেডিকেল জার্নাল তাদের এক গবেষনায় 'জেনারেশন ইনিয়েস্তা' শব্দটি ব্যবহার করে তা ব্যাখ্যা করতে।

_102096636_99c32631-68ce-4161-9dbf-02a55210cc0c

২০০৯ এর সেই গোলের পর হাজার শিশুর 'বাবা' বলা হয় ইনিয়েস্তাকে

২০০৯ এর মে মাসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের শেষদিকে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার এক গোলে চেলসিকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে বার্সেলোনা। এর ৯ মাস পরে, ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাতালোনিয়ার হাসপাতালগুলোতে ১৬% পর্যন্ত জন্মহার বৃদ্ধি পাওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়।

ইতালিয় কৌতুক

ফুটবলে সাফল্যের সাথে জন্মহার বৃদ্ধির এই সম্পর্ক ইতালিতেও স্বীকৃত। ২০১৮-১৯ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনাকে এএস রোমা হারিয়ে দেয়। এরপর এএস রোমার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে অনেকটা হাস্যরসাত্মক ভাবেই ক্লাবের নিজেদের শিশুপণ্যের বিজ্ঞাপণ দেয়া হয়। ওই টুইটে লেখা হয়েছিল, ‘নয় মাসের মধ্যে এগুলো হয়তো বিক্রি করার সুযোগ পাবো আমরা।’


আইসল্যান্ডের উদাহরণ

একটি ম্যাচ থেকে লাভবান হয়েছিল আইসল্যান্ডও। বিশ্বকাপে বাছাই হওয়া ক্ষুদ্রতম দেশ ২০১৬ সালের জুনে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেয়। ওই টুর্নামেন্ট দেখতে গিয়েছিল আইসল্যান্ডের প্রায় ২৭ হাজার মানুষ, যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ ভাগ।

_102084847_f3531d79-eb45-4f20-b7f5-eec7cb1cac68

আইসল্যান্ডের এই শিশুটি হয়তো ২০১৬র ইউরোতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের কারণেই জন্ম নিয়েছে

নয় মাস পর আইসল্যান্ডের গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী তাদের দেশে রেকর্ড পরিমাণ শিশু জন্ম নেয়। ২০১৮ বিশ্বকাপেও আইসল্যান্ডের জনসংখ্যার ওপর একই ধরণের প্রভাব দেখা যেতে পারে। আইসল্যান্ড এরই মধ্যে তাদের প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনার সাথে ড্র করে দারুণভাবে আসর শুরু করেছে।

এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে নিচের র‍্যাঙ্কিংয়ের দেশ স্বাগতিক রাশিয়া। তবে সৌদি আরব আর মিসরকে হারিয়ে এরই মধ্যে দ্বিতীয় রাউন্ড প্রায় নিশ্চিত করা রুশরা ২০১৯ সালের জন্মহারে ব্যাপক উন্নতি আশা করতেই পারে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads