শোক, অবিশ্বাস, ক্ষোভ, লজ্জা। সব কিছু নিয়ে এখন আবেগের এক কোলাজে ধরা পড়লো জার্মানি। প্রবল অবিশ্বাসের দৃষ্টি নিয়ে জার্মান সমর্থকেরা তাকিয়েছিলেন জায়ান্ট স্ক্রিনটার দিকে। খেলা শেষে ভেঙে পড়েছেন কান্নায়।
রাশিয়া বিশ্বকাপের শুরু থেকেই জার্মানির খেলায় খুশি ছিলেন না সে দেশের সমর্থকেরা। তবে এই ভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে প্রথম রাউন্ডেই যে ছিটকে যাবেন বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা, সেটা কেউই অবশ্য ভাবতে পারেননি। কিন্তু ব্রাজিলের সামনে পড়ার আগেই দেশে ফেরার বিমান ধরতে হচ্ছে লো-র দলকে। গত কয়েক দিন ধরেই, লো-কে নিয়ে একটা অসন্তোষ দেখা দিয়েছে জার্মানির সাধারণ মানুষের মধ্যে। তাছাড়া অনেক বিশেষজ্ঞও জার্মানির কোচকে নিয়ে খুশি ছিলেন না। তবে কোরিয়ার বিরুদ্ধে এই ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনা ধীরে ধীরে বাড়ছিল। রাস্তার দু’পাশে বাড়িগুলোর গায়ে জার্মানির পতাকা লাগানো হয়েছিল। অফিসে অফিসে ম্যাচ দেখানোর ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। রাশিয়ায় ম্যাচ শুরু হয় স্থানীয় সময় বিকেল চারটায়। যে সময়টায় বেশির ভাগ মানুষেরই অফিসে থাকার কথা। কিন্তু নানা জায়গায় দেখা যাচ্ছিল, জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনে প্রচুর মানুষ ভিড় করেছেন। ম্যাচ গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যেখানে আনন্দ, উত্তেজনায় ভরপুর মুখগুলো বিষাদে বদলে যেতে থাকে।
জায়ান্ট স্ক্রিনে ম্যাচ দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা করা হচ্ছিল, একটা গোল দিলেই জার্মানি পরের রাউন্ডে চলে যাবে। কিন্তু তারপরেই খবর আসতে থাকে, সুইডেন একের পর এক গোল দিচ্ছে মেক্সিকোকে। হতাশা ক্রমে বাড়তে থাকে। শুরু হয়ে যায় কান্না।
জার্মানির এই শোচনীয় ফলের জন্য বিশেষ ভাবে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে কোচ লো-কে। রাতে জার্মানির একটা জনপ্রিয় কাগজের অনলাইন সংস্করণে সমীক্ষা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রশ্ন ছিল, লো-কে সরানো হবে কি না। যেখানে দেখলাম, ৬৭ শতাংশ ভোটদাতা বলেছেন, অবশ্যই সরানো হোক। ২১ শতাংশ লো-কেই চেয়েছেন কোচ হিসেবে। শোনা যাচ্ছে, লো-র চুক্তির মেয়াদ নাকি বাড়ানো হয়েছে। লো-র বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ হল, দলের রোগগুলো আগেই চিহ্নিত হয়ে গেলেও তিনি তা সারাতে পারেননি। শেষ কয়েকটা ম্যাচ ধরে যা যা ভুল করেছেন, সেগুলোরই পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছেন কোরিয়া ম্যাচে।
জার্মানির সম্মানে আরো ধাক্কা লাগার কারণ, দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হার। এশিয়ার এই দেশটির বিরুদ্ধে জার্মানির রেকর্ড খুবই ভাল। আর সেই কোরিয়ার কাছেই কি না হেরে বিদায় নিতে হল বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। এটা আরো যন্ত্রণা বাড়িয়েছে জার্মানদের।
