• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
বিশ্বকাপে উত্থান এশিয়ার

জার্মানিকে হারিয়ে উল্লাস দক্ষিণ কোরিয়ার খেলোয়াড়দের

ছবি : ইন্টারনেট

ফুটবল

বিশ্বকাপে উত্থান এশিয়ার

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৯ জুন ২০১৮

এশিয়া মহাদেশ থেকে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলতে আসা দলগুলো কোনো আসরেই তেমন কোনো চমক দেখাতে পারেনি। তবে রাশিয়ায় চলতি আসরে ইউরোপ অঞ্চল থেকে আসা ‘ফেভারিট’ দলগুলোকে বেশ বড়সড় ধাক্কাই দিয়েছে এশিয়ার প্রতিনিধিরা। শুধু ইউরোপের দেশ বললে ভুল হবে, দক্ষিণ আমেরিকা থেকে খেলতে আসা কলম্বিয়াকে কি ঝাঁকুনিটাই না দিয়েছে জাপান। এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে ল্যাটিনের কোনো দেশের বিরুদ্ধে জয়ের রেকর্ডও গড়লেন জাপানিরা।

এশিয়া অঞ্চল থেকে এবার বিশ্বকাপের রঙিন আসরে খেলার ছাড়পত্র পায় সৌদি আরব, ইরান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। চলতি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া লড়াই করেছিল ‘সি’ গ্রুপে। ফ্রান্স, ডেনমার্ক ও পেরুর মতো শক্তিশালী দলগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে অজিদের। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার অর্জন বলতে ডেনমার্ককে রুখে দেওয়া। টানা দুই ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেওয়া দলটি গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে  ডেনিশদের বিরুদ্ধে ১-১ গোলে ড্র করে। ম্যাচের শুরুতেই এরিকসনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ডেনমার্ক। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার সাত মিনিট আগে পেনাল্টি থেকে গোল আদায় করে অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন জেদিনাক। বাকি সময় আর ডেনমার্ক অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণভাগ ভাঙতে পারেনি। অবশেষে এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে এশিয়ার প্রতিনিধিরা। বিশ্বকাপ ফুটবলে নিজেদের যাত্রাটা খুব বাজেভাবে শুরু করতে হয়েছিল সৌদি আরবকে। স্বাগতিক রাশিয়ার কাছে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত হতে হয়েছিল তাদের। পরের ম্যাচেও জয়ের দেখা পায়নি আরবের দেশটি। উরুগুয়ের কাছে ১-০ গোলে হারার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্বকাপ মিশন শেষ হয়ে যায় তাদের। তবে শেষ ম্যাচে এসে চমক দেখায় সৌদি আরব। মোহামেদ সালাহর দেশ মিসরকে ২-১ গোলে হারিয়ে পূর্ণ তিন পয়েন্ট তুলে নিয়ে এশিয়ানদের বুকের পাটা চওড়া করে দেন সৌদি আরবের ফুটবলাররা। ম্যাচের মূল সময়টা ছিল ১-১ ড্র। অতিরিক্ত সময়ে পাওয়া গোলেই উৎসবে মেতে ওঠেন সৌদি ফুটবলাররা। অতিরিক্ত সময়ের ৫ মিনিটের মাথায় আল ওতায়েফের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান পায়ের দুর্দান্ত শটে ডান কর্নারে বল পাঠিয়ে সৌদি আরবকে ঐতিহাসিক এক জয় এনে দেন দাউসারি। দীর্ঘ ১২ ম্যাচ পর বিশ্বকাপে প্রথম জয় পায় সৌদি আরব।

ইরান, অস্ট্রেলিয়া কিংবা সৌদি আরব তেমন কোনো আলোচনার ঝড় তুলতে না পারলেও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে বিদায় করে দিয়ে বিশ্বকে বেশ বড়সড় একটা চমকই দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। বুধবার রাতে ধ্রুপদি ফুটবল খেলে জোয়াকিম লো’র শিষ্যদের নাকানি-চুবানি খাইয়ে ২-০ গোলে ম্যাচ জিতে নেন দক্ষিণ কোরিয়ানরা। এ জয়ে নিজেদের ফুটবল ইতিহাস নতুন করে রচনা করল এশিয়ার দেশটি। বিশ্বকাপের কোনো আসরেই এত বড় দেশের বিরুদ্ধে জয়ের রেকর্ড ছিল না কোরিয়ার। এ জয়ে বিশ্বকে নতুন করে নিজেদের ফুটবল শক্তির প্রমাণ দিয়েছে তারা। ‘এফ’ গ্রুপে থাকা দক্ষিণ কোরিয়া নিজ দেশে ফিরেছে তিন পয়েন্ট নিয়ে। দেশটির সাধারণ মানুষ প্রস্তুত ফুটবলারদের বরণ করে নিতে।

এবারের আসরে বিশ্ববাসীকে সবচেয়ে বড় চমক দিয়েছে জাপান। এশিয়ার প্রথম কোনো দেশ হিসেবে দক্ষিণ আমেরিকার কোনো দেশকে বিশ্বকাপের মতো আসরে পরাস্ত করার রেকর্ড গড়েছে জাপান। গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই কলম্বিয়ার মতো তারকানির্ভর দলকে ২-১ গোলে হারিয়ে দেন জাপানিরা। এরপর আফ্রিকার আরেক দেশ সেনেগালকে রুখে দেন তারা। এশিয়ার একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার স্বপ্নটা এখনো টিকিয়ে রেখেছে জাপান। গতকাল রাতেই গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল এশিয়ার এই পরাশক্তি।

বিশ্বকাপের অতীত আসরগুলোতে এশিয়ার দেশগুলো সেভাবে নিজেদের প্রমাণ করতে পারেনি। তবে এবার তারা ঠিকই বিশ্ববাসীকে বুঝিয়ে দিয়েছে গোলের খেলা ফুটবলে ইউরোপ, আফ্রিকা কিংবা দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে সমানতালে লড়াই করার যোগ্যতা অর্জন করছে তারা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads