• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
মেক্সিকোর ব্রাজিল পরীক্ষা

আজ মাঠে নামছে নেইমারের ব্রাজিল ও প্রতিপক্ষ মেক্সিকো

সংরক্ষিত ছবি

ফুটবল

মেক্সিকোর ব্রাজিল পরীক্ষা

  • মাহমুদুন্নবী চঞ্চল
  • প্রকাশিত ০২ জুলাই ২০১৮

রাশিয়া বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে বড় দুর্ঘটনা জার্মানির বিদায়। এছাড়া ফেভারিটের তালিকায় আর কোনো বড় ধাক্কা নেই। সবাই জায়গা করে নিয়েছে নকআউট পর্বে। তবে এ পর্বে শুরু হয়েছে নক্ষত্র পতনের পালা। প্রথম দিনেই বিমান ধরার টিকেট পেয়ে গেছে মেসির আর্জেন্টিনা ও রোনালদোর পর্তুগাল। আজ মাঠে নামছে নেইমারের ব্রাজিল। প্রতিপক্ষ মেক্সিকো। এই ম্যাচ শেষেও এক দলকে বাড়ি ফিরতে হবে। তবে সেটি কোন দল, তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে খেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত।

মেসি-রোনালদোর পর হালের আলোচিত তারকা নেইমার। তবে প্রতিপক্ষ মেক্সিকো বলেই ব্রাজিলের শঙ্কাটা কম। বরং উত্তুঙ্গ আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন তিতের শিষ্যরা। পরিসংখ্যান আর ইতিহাসও ব্রাজিলের কথা বলছে। যেখানে মেক্সিকো পিছিয়ে যোজন যোজন মাইল।

তবে রাশিয়া বিশ্বকাপে অনেক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটছে। আন্ডারডগরাও দেখাচ্ছে চমক। অনেক ফেভারিটের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। আর তাই কোনো ম্যাচের আগে ভবিষ্যদ্বাণী করা বোকামি। ধারে-ভারে আজকের ম্যাচে ব্রাজিল ফেভারিট। কিন্তু মেক্সিকোর অধিনায়ক আন্দ্রেস গুয়ারদাদো আগাম বাণ ছুড়ছেন। তার চোখে ‘কুইন্তো পারটিদো’, মানে এটা পঞ্চম ম্যাচ। বিশ্বকাপে এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো ব্রাজিলের মুখোমুখি হচ্ছে দেশটি। আর এবার গুয়ারদাদো ইতিহাস গড়তে চান। তার মতে, এই ম্যাচটি জিততে পারলে তা হবে ইতিহাসের স্মরণীয় অধ্যায়।

কিন্তু সেই কাজটি করতে অসাধ্য সাধন করতে হবে মেক্সিকোকে। পরিসংখ্যান রীতিমতো চোখ রাঙাচ্ছে। বিশ্বকাপে চারবারের মোকাবেলায় ব্রাজিলের জয় তিনটিতে, ড্র একটি। মানে বিশ্বকাপে মেক্সিকোর জয় নেই। শুধু তাই নয়, বিশ্বকাপের তিন ম্যাচে ব্রাজিল গোল করেছিল ১১টি, মেক্সিকোর স্ট্রাইকাররা একবারও খুঁজে পাননি ব্রাজিলের জাল। মেক্সিকোর জন্য ব্রাজিল নামক পাহাড় টপকানো তাই বড্ড মুশকিল। তবে সব ধরনের প্রতিযোগিতা আমলে নিলে মেক্সিকোর জয় ১০টি। ৪০ বারের মোকাবেলায় ব্রাজিলের জয় সেখানে ২৩। ড্র সাত ম্যাচে। র্যাঙ্কিংয়ে দুই নম্বরে থাকা ব্রাজিল তাই বড় পরীক্ষার নাম ১৫ নম্বরে থাকা মেক্সিকোর জন্য।

মেক্সিকোর শুরুটা জার্মানিকে হারিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে। যদিও শেষ ম্যাচে সুইডেনের কাছে বাজে হারটা ছন্দ নষ্ট করে দিয়েছে দলটির। উল্টো রূপ ব্রাজিলের। শুরুটা বাজে। ধীরে ধীরে সাম্বা ছন্দ ফিরে আসছে। ব্রাজিলকে ক্রমশ মনে হচ্ছে দুর্দমনীয়। সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ড্রয়ের পর কোস্টারিকার সঙ্গে জয়। শেষ ম্যাচে সার্বিয়ার বিরুদ্ধে দেখা মিলল চিরায়ত ছন্দ- জোগো বনিতার। ২-০ গোলের সাবলীল জয়।

নকআউট পর্বে ব্রাজিল মারকুটে অবস্থানে রয়েছে। কোয়ার্টার ফাইনালে চোখ সেলেসাওদের। ১৯৯৪ বিশ্বকাপ থেকে প্রতিটি আসরে ন্যূনতম কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে ব্রাজিল (এর মধ্যে দুটি শিরোপা, একবার রানার্সআপ)। মানে নকআউট পর্ব থেকে বিদায়ের স্মৃতি বলতে গেলে ভুলেই গেছেন পেলের উত্তরসূরিরা। অন্যদিকে এই নকআউট পর্ব কিছুটা গেরোর মতো মেক্সিকোর জন্য। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের পর প্রতিটি আসরে নকআউট পর্ব খেলেছে তারা। কিন্তু মজার কিংবা দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, এর মধ্যে একবারও নকআউট পর্ব পেরুতে পারেনি তিন রঙের সমাহারের (দি ট্রাই কালার) টিম মেক্সিকো। এবার নকআউট পর্বের সাত নম্বর অভিযান তাদের। ভাগ্য ফিরবে এল ত্রিদের?

ব্রাজিলের সামনে ছোট্ট অথচ কঠিন একটা সমীকরণ। ২০০৬-এর পর বিশ্বকাপে টানা তিন ম্যাচ জেতা হয়নি দলটির। মেক্সিকোকে হারাতে পারলে সেটা পূর্ণ হবে। বাড়বে শিরোপা জয়ের স্বপ্নও। তবে হার কী জিনিস সেটাও দূর অতীতের স্মৃতি ব্রাজিলের জন্য। টানা ১৪ ম্যাচে অপরাজিত। এর মধ্যে জয় ১০টি, ড্র চারটি। শেষ হার গত বছরের জুনে, প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনা।

মেক্সিকোর জন্য আহাজারিটা বেশি। বিশেষ করে বিশ্বকাপে। বিশ্বসেরা এ ফুটবল আসরে মেক্সিকো সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (৫৬) খেলা দল যারা শিরোপা জেতেনি। এদের দৌড় সর্বোচ্চ কোয়ার্টার ফাইনাল।

আজ ব্রাজিলের তুরুপের তাস হতে পারেন ফিলিপে কুতিনহো। এখন পর্যন্ত ব্রাজিলের পাঁচ গোলের মধ্যে তিনটিতে তার অবদান। দুটি করেছেন, একটি করিয়েছেন। ব্রাজিলের জার্সিতে কুতিনহোর প্রথম গোল ২০১৫ সালের জুনে। প্রতিপক্ষ ছিল এই মেক্সিকোই। ব্রাজিল জিতেছিল ২-০ গোলে।

আজ হলুদ কার্ডের কারণে মেক্সিকো পাবে না সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হেক্টর মোরেনোকে, যা বড় ধাক্কা দলটির জন্য। তবে আছেন হাভিয়ের হার্নান্দেজ। যিনি ব্রাজিলের মাথাব্যথার কারণ হতে পারেন। যদিও গত ২৭০ মিনিটে হার্নান্দেজ সুপার ফ্লপ। এই সময়ে একটি মাত্র শট নিতে পেরেছেন লক্ষ্যে। মজার বিষয় হলো, সেই শটেই দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে গোল পেয়েছিলেন তিনি। লক্ষ্যে হার্নান্দেজের শট তাই ভয়ঙ্কর।

সামারায় আজ রাত ৮টায় বাজবে যুদ্ধের দামামা। মেক্সিকো কি পারবে নকআউট পর্বের জুজু এড়াতে, নাকি সাম্বা উৎসবে শেষ আটের টিকেট মিলবে ব্রাজিলের? রেজাল্ট জানতে চোখ রাখতে হবে কসমস (সামারা) অ্যারিনায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads