• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
এবার ফাইনাল রোমাঞ্চের অপেক্ষা

ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল দল

ছবি : ইন্টারনেট

ফুটবল

এবার ফাইনাল রোমাঞ্চের অপেক্ষা

  • মাহমুদুন্নবী চঞ্চল
  • প্রকাশিত ১৩ জুলাই ২০১৮

‘এবার বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলবে ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়া।’ রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরুর আগে এমন ভবিষ্যদ্বাণী কেউ করেছিলেন, তা শোনা যায়নি। ডেভিড বেকহ্যাম নিজ দেশকে এগিয়ে রেখে বলেছিলেন, ফাইনাল হবে আর্জেন্টিনা ও ইংল্যান্ডের মধ্যে। বেশিরভাগ প্রেডিকশনে ফাইনালের একটি দল ছিল হট ফেভারিট ব্রাজিল। আর সেটা নেইমারদের উত্তুঙ্গ পারফরম্যান্সের কারণে।

অনেকের মুখে ছিল ফ্রান্সের নামও। কারো বাজি ছিল মেসির আর্জেন্টিনা, জার্মানি কিংবা স্পেন। বর্তমান ইউরো চ্যাম্পিয়ন বলে রোনালদোর পর্তুগালও ছিল পাদপ্রদীপের আলোয়। কিন্তু ফাইনাল খেলবে ক্রোয়েশিয়া, স্বাগতিক রাশিয়া উঠে যাবে কোয়ার্টার ফাইনালে, ব্রাজিলকে হারিয়ে বেলজিয়াম যাবে সেমিতে, ৫২ বছর পর ফাইনালের স্বপ্ন দেখবে ইংল্যান্ড; এমনটি অনেকেই ভাবেনি।

যেমনটি ভাবেনি সাবেক চ্যাম্পিয়ন জার্মানির গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়, নকআউট পর্বে মেসির স্বপ্নের সমাধি, সঙ্গে রোনালদোরও। দাপুটে ঢঙে এগিয়ে আসা স্পেনও কুপোকাত র্যাঙ্কিংয়ে ৭০-এ থাকা রাশিয়ার সঙ্গে। তবে ভাবনার ওলট পালটের আবহই বদলে দিয়েছে বিশ্বকাপের গতিপথ। নতুন রোমাঞ্চ, তুঙ্গস্পর্শী উত্তেজনা, নতুনের আগমন, সোনালি প্রজন্ম; সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ যেন দারুণ উপভোগ্য। হয়তো চোখের জলে বিদায় নিয়েছে অনেক ফেভারিট দল, কিন্তু বিপরীত চিত্র জয়ী দলের ক্ষেত্রে। যেখানে উৎসব আর আনন্দের রেণু উড়েছে পুরোদমে।

৩২ দলের লড়াইয়ে হাসি-কান্নায় একাকার লুঝনিকি থেকে নভগোরাদসহ বাকি ১০ ভেন্যু। আস্তে আস্তে আলো নিভতে শুরু করেছে। শেষের প্রান্তে রাশিয়া বিশ্বকাপ। গ্রুপ পর্ব, নকআউট, কোয়ার্টার, সেমিফাইনাল পর্ব সমাপ্তি। বাদ আছে শুধু রোমাঞ্চের ফাইনাল। যেটি মঞ্চস্থ হবে আগামী ১৫ জুন মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে। মুখোমুখি ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়া। তবে এর আগের দিন ১৪ জুন তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই সেমিতে হেরে যাওয়া বেলজিয়াম ও ইংল্যান্ড।

কেমন হবে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনাল? বিশ্ব ফুটবলে সব আলোচনা এখন এটাই। কিংবা কোন দল জিতবে বিশ্বজয়ের স্মারক সোনালি ট্রফি। অনেকেই ফ্রান্সকে এগিয়ে রাখছে ফাইনালের লড়াইয়ে। তবে কেউ কেউ বাজি ধরছে ক্রোয়েশিয়ার পক্ষেও। ক্রোয়েটদের সোনালি প্রজন্ম প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে গড়েছে ইতিহাস। শিরোপা জিতে সেই ইতিহাস রঙিন করার স্বপ্ন ডেভর সুকারের উত্তরসূরিদের।

ফাইনালের ময়দানে পরিসংখ্যান কোনো কাজে দেবে না। নির্দিষ্ট একটি দিনে কোনো দলের আগুনে পারফরম্যান্স বদলে দিতে পারে সবকিছু। হতে পারে সেটি ফ্রান্স, কিংবা ক্রোয়েশিয়ার। ফাইনালে ওঠা কোনো দলই দুর্বল নয়। কঠিন পরীক্ষা দিয়েই তাদের আসতে হয়েছে শিরোপা লড়াইয়ের মঞ্চে। ক্রোয়েশিয়া এখন পর্যন্ত সবগুলো ম্যাচ জিতেছে। ফ্রান্সের আছে একটি ড্র।

আর্জেন্টিনাকে ৩ গোল দেওয়া ক্রোয়েশিয়া পূর্ণ ৯ পয়েন্ট নিয়ে ডি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। নকআউট পর্বে ডেনমার্কের সঙ্গে টাইব্রেকারে জয়। কোয়ার্টার ফাইনালেও তাই। রাশিয়ার বিরুদ্ধে টাইব্রেকার স্নায়ুযুদ্ধে জয়ী ক্রোয়েশিয়া। সেমিতে অবশ্য টাইব্রেকারে যেতে হয়নি। তারপরও খেলতে হয়েছে অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিট। যেখানে মানজুকিচের গোলে রূপকথার জন্ম দেয় ক্রোয়েশিয়া।

ক্রোয়েশিয়ার মতো ফ্রান্সও সি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। তবে পয়েন্ট সাত। অস্ট্রেলিয়া ও পেরুর বিরুদ্ধে জিতলেও ডেনমার্কের সঙ্গে শেষ ম্যাচে ড্র। তবে নকআউট পর্ব থেকেই ফ্রান্স যেন দুর্দমনীয়। সব প্রতিপক্ষকে যেন গুঁড়িয়ে দেওয়াই তাদের পণ। গতি আর অভিজ্ঞতার মিশেলে ফরাসি সৌরভ ম-ম করেছে। শেষ ষোলোতে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে ৪-৩ গোলের জয়। কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের বিরুদ্ধে জয় ২-০ গোলে। সেমিফাইনালে দুরন্ত বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে ১-০ গোলের জয় ফাইনালের টিকেট পাইয়ে দেয় ফরাসি শিবিরকে। বিশ্বকাপে যা তাদের তৃতীয় ফাইনাল।

২০ বছর আগে প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছিল ফ্রান্স। ঘরের মাটিতে। দেশ স্বাধীনের পর সেই বিশ্বকাপটা প্রথম ছিল ক্রোয়েশিয়ার। হয়েছিল তৃতীয়। সেমিতে ফ্রান্সের কাছে হার। সেই বিশ্বকাপের ২০ বছর পর ক্রোয়েশিয়া প্রথমবারের মতো ফাইনালে। প্রতিপক্ষ আবার সেই ফ্রান্স।

দুই দশক আগের স্মৃতি মুছে নতুন ইতিহাস লিখতে পারবে তো ক্রোয়েশিয়া? নাকি ফ্রান্স শোনাবে দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের গল্প। সব ফয়সালা হবে ১৫ জুন, মস্কোর লুঝনিকিতে।         

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads