• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
টাইমিংয়ে উন্নতি করা সাঁতারুদের লক্ষ্য!

বাংলাদেশের দুই সাঁতারু সাগর ও বৃষ্টি

সংগৃহীত ছবি

খেলা

টাইমিংয়ে উন্নতি করা সাঁতারুদের লক্ষ্য!

  • প্রকাশিত ১৯ আগস্ট ২০১৮

কবিরুল ইসলাম, ইন্দোনেশিয়া থেকে

এশিয়ার সর্ববৃহৎ ক্রীড়া আসর এশিয়ান গেমসে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সাঁতারুরা যখন সোনা জয়ের স্বপ্নে বিভোর, তখন বাংলাদেশের সাঁতারুরা স্বপ্ন দেখেন টাইমিংয়ে উন্নতি করা। নিজের সেরাটা দিয়ে অতীতের চেয়ে কিছুটা ভালো করে খালি হাতে দেশে ফেরাই যেনো গৎবাঁধা নিয়মে পরিণত হয়েছে। গেমস থেকে পদক জয়ের কোনো লক্ষ্য নেই তাদের। এজন্য অবশ্য সাঁতারুদের দোষারোপ নয়, বরং দেশের ক্রীড়া সংস্থার অভিভাবক বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকেই (বিওএ) দায়ী করাটা শ্রেয়। অনুশীলনের ঘাটতি আর সুযোগ-সুবিধার অভাবেই আন্তর্জাতিক আসরগুলোতে ভালো করতে পারছেন না সাঁতারুরা। মাঝেমধ্যে হিটে ডিসকোয়ালিফাই হয়ে দেশের মুখ লজ্জায় লাল করছেন।

গতকাল থেকে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়ে গেল এশিয়ান গেমসের ১৮তম আসরের। এবারের গেমসে ৪০টি ইভেন্টের মধ্যে লাল-সবুজরা অংশ নিচ্ছে ১৪টি ইভেন্টে। এর মধ্যে সাঁতার ইভেন্টটিও আছে। বিওএ স্বপ্ন দেখছে আরচারি, কাবাডি ও শুটিং থেকে পদক জয়ের। সোনা নয়, বরং রুপা কিংবা ব্রোঞ্জপদক পেলেই খুশি তারা। সম্ভাবনাময় ইভেন্ট সাঁতারসহ অন্য কোনো ইভেন্ট নিয়ে মাথাব্যথ্যা নেই বিওএ’র। তাই ‘নামকাওয়াস্তে’ অংশ নেওয়ার জন্য দল পাঠিয়েই দায়বোধ সারছে সংস্থাটি।

একটা সময় সাঁতার ছিল সবচেয়ে সম্ভাবনার ইভেন্ট। যে ইভেন্টের দিকে একটু নজর দিলেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ সুনাম কুড়ানো সম্ভব ছিল। অথচ নিজেদের পরিকল্পনার অভাবে আজ সাঁতারুদের মান দিন দিন অবনমনের পথে। এশিয়ান গেমসে এবার বাংলাদেশ দলের হয়ে অংশ নিচ্ছেন মাহফিজুর রহমান সাগর ও খাদিজা আক্তার বৃষ্টি। দেশসেরা এ দুই সাঁতারু ভিন্ন পাঁচটি ডিসিপ্লিনে অংশ নেবেন। সাগর নিজের পছন্দের ডিসিপ্লিন ৫০ ও ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে লড়াই করবেন। জাকার্তায় গিয়ে অনুশীলনের একটু সুযোগ পেলে ২০০ মিটার ফ্রিস্টাইলেও দেখা যেতে পারে তাকে। আর বৃষ্টি ১০০ ও ৫০ মিটার ব্র্রেস্ট স্ট্রোক ছাড়াও পুলে নামবেন ৫০ মিটার ফ্রিস্ট্রাইলে।

ইন্দোনেশিয়ায় শুরু হওয়া এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ এ আসর নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই দেশসেরা সাঁতারু সাগরের। প্রস্তুতির স্বল্পতা নিয়েই যত অভিযোগ তার। আক্ষেপের সঙ্গেই বলেন, ‘গত মার্চ-এপ্রিলে এশিয়ান গেমসের জন্য আমাদের দুজনকে বাছাই করা হলো। তখন বেশ ভালোই লেগেছিল এই ভেবে যে, প্রস্তুতির জন্য অনেক সময় পাওয়া যাবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে দেখা গেল অতীত চিত্র। মাত্র এক মাস আগে শুরু হলো ক্যাম্প। যেখানে আমাদের প্রতিপক্ষরা বছর জুড়ে অনুশীলন করছেন কোচের তত্ত্বাবধানে। আলাদা ফিজিও রাখা হচ্ছে। ফুড সাপ্লিম্যান্ট দেওয়া হচ্ছে তাদের। আর আমাদের ক্ষেত্রে ফিজিও তো দূরের কথা, ঠিকমতো ক্যাম্পই শুরু হয় না। মনে হয় অংশগ্রহণের জন্যই আমাদের শুধু পাঠানো হয় আন্তর্জাতিক আসরগুলোতে। এতে করে গেমস শেষে কী হয়? সংবাদপত্রে আমাদের তুলাধোনা করা হয়। মানুষজন ভাবে সব দোষ সাঁতারুদের। এভাবে চলতে থাকলে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে কখনোই পদক জয় করা সম্ভব নয়।’ পাবনার এ সাঁতারুর কণ্ঠে রয়েছে হতাশার সুর, ‘সাঁতারু হয়ে মনে হয় ভুলই করেছি। যদি সাঁতারু না হতাম তবে পড়ালেখা শেষ করে হয়তো ভালো বেতনে চাকরি করতাম।’ এশিয়ান গেমসে নিজের লক্ষ্যের কথা জানাতে গিয়ে সদ্য বিয়ে ঠিক হওয়া এ সাঁতারু বলেন, ‘মাত্র এক মাসের অনুশীলনে কিছুই করা সম্ভব নয়। টাইমিংয়ে উন্নতি করাই মূল টার্গেট।’

মহিলা সাঁতারু হিসেবে এবারের আসরে অংশ নিচ্ছেন সেরা সাঁতারু ক্যাম্প থেকে উঠে আসা খাদিজা আক্তার বৃষ্টি। তারও লক্ষ্য নিজের টাইমিংয়ে উন্নতি করা, ‘আমি খুব এক্সাইটেড প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক আসরে অংশ নিতে পারায়। নিজের পছন্দের ইভেন্ট ৫০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে উন্নতি করতে চাই। এখানে আসলে পদকের জন্য আসিনি। অভিজ্ঞতা অর্জনটাই আসল কথা।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads