• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
কাবাডিতে পদক জয়ের স্বপ্ন শেষ!

শেষ দুই ম্যাচে শক্তিশালী ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে হবে

সংগৃহীত ছবি

খেলা

কাবাডিতে পদক জয়ের স্বপ্ন শেষ!

  • প্রকাশিত ২০ আগস্ট ২০১৮

কবিরুল ইসলাম, ইন্দোনেশিয়া থেকে

সর্বশেষ এশিয়ান গেমসেও পদক জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছিল মহিলা কাবাডি দল। তাই এবারো একই ইভেন্ট থেকে ব্রোঞ্জ পদক জয়ের রঙিন স্বপ্ন দেখিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন মালেকা-শারমিনরা। কিন্তু টার্ফে নেমে হতাশই করলেন আবদুল জলিলের শিষ্যরা। মাত্র ১০ বছর আগে কাবাডি খেলা শুরু করা চাইনিজ তাইপের কাছে ২৮-৪৩ পয়েন্টের বড় ব্যবধানে হেরে পদক জয়ের স্বপ্ন অনেকটা ধূসর হয়ে গেছে লাল-সবুজদের। কারণ গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে শক্তিশালী ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে হবে। এই দুই দলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জয় পাওয়া অনেকটাই ‘অলীক স্বপ্নে’র মতো। আজ স্থানীয় সময়  বেলা সাড়ে ১১টায় ইরানের মুখোমুখি হবে মহিলা কাবাডি দল। অন্যদিকে পুরুষ কাবাডি ইভেন্টে ভারতের কাছে ৫০-২১ পয়েন্টের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ পুরুষ দল।

জাকার্তার গারুদা স্টেডিয়ামে বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া ম্যাচে প্রথমার্ধেই চাইনিজ তাইপে এগিয়ে যায় ম্যাচে। ১৬-২৩ পয়েন্টে লিড নেওয়া দলটি দ্বিতীয়ার্ধে একের পর এক বোনাস পয়েন্ট তুলে নিয়ে প্রথম সাক্ষাতেই বাংলাদেশকে পরাজিত করে পদক জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। দুই দলের লড়াইয়ে অনেক কিছুই স্পষ্ট হয়েছে। বাংলাদেশ দলের প্লেয়ারদের বয়স যেখানে ২০ থেকে ৩৩ সেখানে চাইনিজ তাইপের প্লেয়ারদের গড় বয়স ১৯-২০ বছর। ফিটনেস লেবেলের পার্থক্যটাও ছিল চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশ মহিলা কাবাডি দলের এমন বাজে পারফরম্যান্স হয়তো এর আগে দেখা যায়নি। লাল-সবুজদের পারফরম্যান্স দেখে হতাশ ভারত কাবাডি ফেডারেশনের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর প্রাসাদ রাও, ‘তোমাদের প্লেয়ারদের এভারেজ বয়স অনেক বেশি। ফিটনেস লেবেলেও পিছিয়ে। পুরনো নিয়মেই আবদ্ধ রয়েছে বাংলাদেশ। এভাবে চলতে থাকলে একটা সময় কাবাডি থেকে হারিয়ে যেতে হবে।’

প্রতিপক্ষ হিসেবে চাইনিজ তাইপে পুরোপুরি অচেনা ছিল বাংলাদেশের কাছে। তবুও আত্মবিশ্বাসী ছিলেন মালেকারা। কিন্তু গত এশিয়ান গেমসে ছয় দলের মধ্যে ষষ্ঠ হওয়া দলটি যে কী পরিমাণ উন্নতি করেছে সেটা কল্পনাও করতে পারেননি লাল-সবুজরা। গত এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ পদক জয় করা বাংলাদেশের ওপর আধিপত্য ধরে রেখেই ম্যাচ জিতে নেয় তাইপে। রেইডিং-ক্যাচিংয়ে অসামান্য দক্ষতা দেখিয়েছে তারা। ম্যাচ শেষে একরাশ হতাশা নিয়েই সংবাদকর্মীদের সামনে আসেন কোচ আবদুল জলিল। শিষ্যদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘ওদের বিরুদ্ধে জয়ের আশা নিয়েই এখানে এসেছিলাম। কিন্তু সেটা হয়নি। আসলে আমরা যতটা উন্নতি করেছি, তার চেয়ে অনেক বেশি উন্নতি করেছে চাইনিজ তাইপে। আমরা ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলাম। এরপর ৩০ মাস পর আবারো আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাঠে নেমেছে মেয়েরা। এভাবে বিরতি দিয়ে খেলতে গেলে ভালো কিছু প্রত্যাশা করা যায় না। তাছাড়া চলতি এ আসরকে সামনে রেখে মাত্র এক মাসের প্রস্তুতি নিয়ে ইন্দোনেশিয়া এসেছে দল। তাহলে কীভাবে জয় প্রত্যাশা করতে পারি আমরা।’ প্রথম ম্যাচ হেরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়ার শঙ্কায় থাকা বাংলাদেশের লক্ষ্য এখন দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে একটি জয় তুলে নিয়ে দেশে ফেরা। 

এদিকে মাত্র ১০ বছর আগে কাবাডি খেলা শুরু করা চাইনিজ তাইপে কীভাবে এতটা উন্নতি করেছে সে গল্প শোনাচ্ছিলেন দেশটির কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি ড. কু জুই লিন, ‘এশিয়ান গেমসকে সামনে রেখে গত এক বছর মেয়েদের আমরা কঠোর অনুশীলনের মধ্যে রেখেছি। দুটি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপেও খেলিয়েছি। শুধু জাতীয় ঘরোয়া টুর্নামেন্টই নয়, আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলার ব্যবস্থাও করেছিলাম। জাপান, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল ও হংকংয়ের মতো দলের বিরুদ্ধে গত ১০ মাসে ছয়টি ম্যাচ খেলেছি আমরা। যে ম্যাচগুলো থেকে আমরা নিজেদের ভুলগুলো খুঁজে পেয়ে তা শোধরাতে পেরেছি। তাছাড়া বছরব্যাপী ক্যাম্পে ফিটনেসের ওপর জোর দিয়েছি। দলের সবার বয়স ১৯ থেকে ২০-এর মধ্যে। এমন কম্বিনেশনেই তোমাদের হারাতে পেরেছি।’ 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads